শিশু ধর্ষণের অভিযোগ মীমাংসা চড়-থাপ্পড়ে!
Published: 17th, June 2025 GMT
কুষ্টিয়ায় ৫ বছর বয়সী এক শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে বিশা (৬৫) নামের এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত বিশা ওই শিশুর প্রতিবেশী দাদা। এ ঘটনায় স্থানীয় মাতুব্বররা অভিযুক্তকে চড়-থাপ্পড় মেরে মীমাংসা করেছেন বলে অভিযোগ করেছে শিশুটির পরিবার।
শিশুটি কুষ্টিয়ার একটি হাসাতালে চিকিৎসাধীন আছে। মঙ্গলবার (১৭ জুন) দুপুরে হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেছে, শিশুর পাশে রয়েছেন তার বাবা-মা।
শিশুটির মা সাংবাদিকদের বলেছেন, “গত ১১ জুন বুধবার সকাল ৯টার দিকে আমি আমার মাকে বাড়িতে এগিয়ে দিতে গিয়েছিলাম। এই সুযোগে বিশা আমার মেয়েকে তার বাড়িতে ডেকে নিয়ে যায়। এর কিছুক্ষণ পরে মেয়েকে ওই বাড়ি থেকে খোঁড়াতে খোঁড়াতে আসতে দেখে সন্দেহ হয়। কী হয়েছে, জিজ্ঞাসা করলে সে বলে, বিশা দাদা আমার সঙ্গে খারাপ কাজ করেছে। বিষয়টি গ্রামের মুরুব্বিদের জানালে তারা পরদিন (বৃহস্পতিবার, ১২ জুন) রাতে সালিশ বৈঠক করা হয়। বিশাকে চড়-থাপ্পড় দিয়ে মাতুব্বররা বলে যে, সালিশ শেষ। এর পরদিন (শুক্রবার, ১৩ জুন) মেয়ে পেটের ব্যথায় অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করি।”
আরো পড়ুন:
দিনাজপুরে পানিতে ডুবে ২ শিশুর মৃত্যু
সুনামগঞ্জে পুকুরে ডুবে ২ বোনের মৃত্যু
শিশুটির বাবা বলেছেন, “মেয়ের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে থানায় যাইনি। ইউপি মেম্বার ও সমাজপ্রধানরা বলেছেন, আগে চিকিৎসা নিয়ে আসো। তারপর মামলা করতে সব ধরনের সহযোগিতা করব। আমিও মামলা করব।”
সালিশ বৈঠকে উপস্থিত থাকা ইউপি সদস্য মতিউর রহমান লিওন বলেছেন, “ঘটনাটি জানার পর ভুক্তভোগী পরিবারকে মামলা করতে বলেছিলাম। তারা থানায় যায়নি। সালিশে চড়-থাপ্পড় মেরে মীমাংসা করেছিলেন অভিযুক্ত ব্যক্তির ভাই-ভাতিজারা। আমি শুধু সেখানে উপস্থিত ছিলাম।”
স্থানীয় সমাজপ্রধান রহিম মন্ডল বলেছেন, “সামাজিকভাবে আমরা একটা মীমাংসার চেষ্টা করেছিলাম। সেখানে অভিযুক্তকে চড়-থাপ্পড় মারা হয়েছিল।”
ধর্ষণের মতো ঘটনার বিচার সালিশ বৈঠকে করতে পারেন কি না, জানতে চাইলে রহিম মন্ডল বলেন, “আমি তাদের মামলাও করতে বলেছিলাম। কিন্তু, তারা তা করেনি। আমি সব সময় শিশুটির খবর রাখছি।”
কয়েক বছর আগে স্ত্রী মারা যাওয়ার পর সন্তানদের সঙ্গে একই বাড়িতে থাকেন বিশা। শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠার পর পালিয়েছেন তিনি। শিশু ধর্ষণ অভিযোগের ব্যাপারে তার পরিবারের কেউ কথা বলতে রাজি হননি।
কুষ্টিয়ার সেই হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) হোসেন ইমাম জানিয়েছেন, শিশুটিকে ধর্ষণের আলামত পাওয়া গেছে। তাকে চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে।
পাটিকাবাড়ী পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ উপ-পরিদর্শক (এসআই) নুরনবী বলেছেন, “ওসি স্যারের নির্দেশে শিশুটিকে হাসপাতালে দেখে এসেছি। চিকিৎসা শেষে পরিবারকে থানায় আসতে বলা হয়েছে। এরপর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ঢাকা/কাঞ্চন/রফিক
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর বল ছ ন পর ব র
এছাড়াও পড়ুন:
রাইজিংবিডিতে সংবাদ প্রকাশ: ডেরা রিসোর্টের লাইসেন্স বাতিল
মানিকগঞ্জের ঘিওরের বালিয়াখোড়ায় অবস্থিত ডেরা রিসোর্ট এন্ড স্পা সেন্টারের নানা অনিয়ম নিয়ে রাইজিংবিডিতে ‘কবরস্থানে হরিণের খামারসহ নানা অনিয়মের আখড়া ডেরা রিসোর্ট’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশের পর প্রতিষ্ঠানটির লাইসেন্স বাতিল করেছে বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়। একইসঙ্গে ডেরা রিসোর্টে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করতে মানিকগঞ্জের জেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সহকারী নিয়ন্ত্রক (সিনিয়র সহকারী সচিব) শেখ রাশেদুজ্জামান স্বাক্ষরিত এক নির্দেশনা পত্রে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
জানা গেছে, ডেরা রিসোর্ট এন্ড স্পা সেন্টার ২০২২ সালের ১৮ ডিসেম্বর লাইসেন্স প্রাপ্তির আবেদন করেন। নানা অনিয়মের কারণে তাদের লাইসেন্স নামঞ্জুর করা হয়েছে। রিসোর্টের লাইসেন্স না থাকায় প্রশাসনকে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
২০২৫ সালের ১৪ জানুয়ারি ‘ফসলি জমি দখল করে ডেরা রিসোর্ট নির্মাণ, বিপাকে কৃষক’; ১৯ মার্চ ‘ছাড়পত্র ছাড়াই চলছে ডেরা রিসোর্ট, তদন্ত কমিটি গঠন’ শিরোনামে দুটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে রাইজিংবিডি। গত ১৩ সেপ্টেম্বর ‘কবরস্থানে হরিণের খামারসহ নানা অনিয়মের আখড়া ডেরা রিসোর্ট’ শিরোনামে প্রতিবেদনটি প্রকাশের পর বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয় ডেরার লাইসেন্স নামঞ্জুর করে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন।
সুশাসনের জন্য নাগরিক মানিকগঞ্জ জেলা কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ইন্তাজ উদ্দিন বলেন, “অনলাইন নিউজ পোর্টাল রাইজিংবিডিতে ডেরা রিসোর্ট নিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনগুলোতে সাধারণ মানুষের ক্ষোভ ও ভোগান্তি তুলে ধরা হয়েছে। প্রতিবেদক অনুসন্ধান করে ডেরা রিসোর্টের নানা অনিয়ম তুলে এনেছেন। প্রতিবেদন প্রকাশের পর প্রশাসন লাইসেন্স বাতিল করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছে এটি ভালো উদ্যোগ। তবে এসব নির্দেশনা কাগজে কলমের মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে বাস্তবায়ন করাটাই বড় কাজ। নির্দেশনা বাস্তবায়ন হলে সুশাসন নিশ্চিত হবে।”
মানিকগঞ্জের জেলা প্রশাসক ড. মানোয়ার হোসেন মোল্লা বলেন, “মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনার কপি পেয়েছি। সে অনুযায়ী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
ডেরা রিসোর্ট এন্ড স্পা সেন্টারের ব্যবস্থাপক ওমর ফারুক বলেন, “লাইসেন্সের বিষয়ে কোন নোটিশ এখনও পাইনি আমরা। ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার বিষয়েও জানা নেই। যদি লাইসেন্স বাতিল করে থাকে, তাহলে আমরা আইনিভাবে বিষয়টি সমাধান করব।”
এ বিষয়ে জানতে বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সকালে এশিউর গ্রুপের অঙ্গসংগঠন ডেরা রিসোর্ট এন্ড স্পা সেন্টারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শেখ সাদীর মোবাইলে ফোন করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
ঢাকা/চন্দন/এস