ফিলিস্তিনের গাজায় খাদ্যের টোপ দিয়ে ক্ষুধার্ত মানুষ হত্যা চালিয়েই যাচ্ছে ইসরায়েল। দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসের ত্রাণ বিতরণকেন্দ্রে সোমবার গুলি চালিয়ে ৫১ জনকে হত্যা করেছে দখলদার বাহিনী। এ সময় আহত হন ২০০ জনের বেশি ত্রাণপ্রত্যাশী।  

হামাস পরিচালিত বেসামরিক প্রতিরক্ষা সংস্থা জানিয়েছে, গাজায় খাদ্যকেন্দ্রে সংঘটিত সাম্প্রতিক হামলাগুলোর মধ্যে এটি সম্ভবত সবচেয়ে মারাত্মক। হামাসের লক্ষ্যবস্তুতে হামলার পাশাপাশি ইসরায়েল খাদ্য সরবরাহের স্থানে হামলা চালাচ্ছে। 

প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, ইসরায়েলি বাহিনী খান ইউনিসের খাদ্যকেন্দ্রে গুলি চালিয়েছে। এক বেলার আটা পাওয়ার আশায় হাজার হাজার ফিলিস্তিনি জড়ো হয়েছিল। ত্রাণ বিতরণকেন্দ্রের কাছে দুটি ইসরায়েলি ড্রোনও আঘাত হানে। ঘটনাস্থলের ৪০০ থেকে ৫০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করা ট্যাঙ্ক থেকে গোলা নিক্ষেপ করা হয়। 

এই এলাকার প্রধান চিকিৎসাকেন্দ্র নাসের হাসপাতাল। এখানে বহু সংখ্যক আহতকে নেওয়া হয়। চিকিৎসকরা সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছিলেন। অনেক মানুষ রক্তাক্ত অবস্থায় মেঝেতে পড়ে ছিল। 
   
গাজার বেসামরিক প্রতিরক্ষা সংস্থার মুখপাত্র মাহমুদ বাসাল এএফপিকে বলেন, খাদ্যকেন্দ্রে হামলায় কমপক্ষে ৫০ জন নিহত হয়েছেন। ইসরায়েলি ড্রোন নাগরিকদের ওপর গুলি চালিয়েছে। কয়েক মিনিট পরে ইসরায়েলি ট্যাঙ্ক থেকেও গোলা নিক্ষেপ করা হয়। ফলে বিপুলসংখ্যক ক্ষুধার্ত মানুষ হতাহত হয়েছে। 

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জানিয়েছে, ইসরায়েলি এই নৃশংস হামলার ব্যাপারে তারা তথ্য পেয়েছে। ডব্লিউএইচওর ট্রমা সার্জন ও জরুরি কর্মকর্তা থানোস গারগাভানিস বলেন, খাদ্য বিতরণ উদ্যোগের মধ্যে আরও একটি নৃশংস হামলা হয়েছে।   

সাম্প্রতিক দিনগুলোতে দক্ষিণ ও মধ্য গাজায় ইসরায়েল-যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ) পরিচালিত ত্রাণ বিতরণকেন্দ্রে প্রায়ই হত্যাকাণ্ড ঘটাচ্ছে ইসরায়েল। হত্যাকাণ্ডের পর জিএইচএফ প্রায়ই একই রকম ব্যাখ্যা দেয়। তাদের বক্তব্য, ক্ষুধার্ত জনতা সেনা সদস্যদের কাছাকাছি যাওয়ার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা আছে। এই নিষেধাজ্ঞা অমান্য করলেই গুলি চালানো হয়।  

ফিলিস্তিনিদের স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টা থেকে সকাল ৬টার মধ্যে ত্রাণ বিতরণকেন্দ্রে না যাওয়ার জন্য নির্দেশনা দিয়ে রেখেছে ইসরায়েলি বাহিনী। অথচ বিকল্প কোনো পন্থায় তারা খাবার সংগ্রহ করতে পারে না। বিবিসি ও আলজাজিরার খবর।  

  
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ইসর য় ল ত র ণ ব তরণক ন দ র ইসর য় ল

এছাড়াও পড়ুন:

ভাসানী বিশ্ববিদ্যালয়ে বিসিএস পরীক্ষার্থীদের জন্য বাস সার্ভিস চালু

৪৭তম বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষার্থীদের জন্য ফ্রি বাস সার্ভিস চালুর উদ্যোগ নিয়েছে মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (মাভাবিপ্রবি) শাখা ছাত্রদল। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে ঢাকা ও ময়মনসিংহের পরীক্ষা কেন্দ্রে শিক্ষার্থীদের নির্বিঘ্নে পৌঁছানোর লক্ষ্যে এ বিশেষ যাতায়াত সুবিধার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) রাতে শাখা ছাত্রদলের কর্মী নাফিস ইকবাল পিয়াল বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ফেসবুক গ্রুপে এ তথ্য জানিয়ে পোস্ট দেন। একইসঙ্গে শাখা সভাপতি সাগর নাইম ও সাধারণ সম্পাদক সাজিদ ইসলাম দীপুও তাদের ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডিতে পোস্ট দিয়ে পরীক্ষার্থীদের এ সুবিধা গ্রহণের আহ্বান জানান।

আরো পড়ুন:

ভাসানী বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্বাচনী রোডম্যাপের দাবিতে মানববন্ধন

বিশ্ববিদ্যালয় জ্ঞান অর্জন ও বিতরণের জায়গা: ইউজিসি চেয়ারম্যান

ছাত্রদল জানিয়েছে, ক্যাম্পাস থেকে দুটি বাস ছাড়বে। একটি ঢাকা রুটে এবং অপরটি ময়মনসিংহ রুটে যাবে। প্রতিটি বাসে ৫০ জন করে মোট ১০০ জন শিক্ষার্থী এই ফ্রি সার্ভিসের আওতায় যাতায়াত করতে পারবেন। এজন্য শিক্ষার্থীদের অবশ্যই আগাম রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত গুগল ফর্মের মাধ্যমে রেজিস্ট্রেশন করা যাবে। রেজিস্ট্রেশন ছাড়া কেউ এই সার্ভিসের সুবিধা নিতে পারবেন না।

শিক্ষার্থীদের জন্য এ উদ্যোগ ইতোমধ্যেই বিশ্ববিদ্যালয়জুড়ে প্রশংসা কুড়িয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেক শিক্ষার্থী পোস্ট দিয়ে ছাত্রদলের এ পদক্ষেপকে ‘শিক্ষার্থীবান্ধব ও সময়োপযোগী উদ্যোগ’ হিসেবে অভিহিত করেছেন।

শাখা সভাপতি সাগর নাইম তার পোস্টে বলেন, “প্রতি বছর বিসিএসে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সাফল্যের আলো ছড়িয়ে দেন। আমরা চাই এ সুনাম আরো দূরে ছড়িয়ে পড়ুক, আরো উজ্জ্বল হোক। এ ধারাবাহিক সাফল্যের পথে আপনাদের পাশে থাকতে, ভালোবাসা ও সম্মান জানাতে মাভাবিপ্রবি ছাত্রদল ৪৭তম বিসিএস পরীক্ষার্থীদের জন্য ফ্রি বিশেষ বাস সার্ভিসের ব্যবস্থা করেছে।”

এ বিষয়ে শাখা সাধারণ সম্পাদক সাজিদ ইসলাম দীপু বলেন, “জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল সবসময়ই শিক্ষার্থীদের কল্যাণে কাজ করে থাকে। গত বিসিএসে আমাদের বড় ভাই বিসিএস প্রশাসনে প্রথম হয়েছেন। এটি শুধু আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য নয়, সারা দেশের জন্যই গর্বের বিষয়। সেই সাফল্যের ধারা অব্যাহত রাখতে এবং শিক্ষার্থীদের কল্যাণে আমরা এবার পরীক্ষার্থীদের জন্য ফ্রি বাস সার্ভিস চালু করেছি।”

তিনি বলেন, “বিশেষ করে অনেক নারী শিক্ষার্থী আছেন, যারা ক্যাম্পাস থেকে পরীক্ষাকেন্দ্র অনেক দূরে হওয়ায় অংশ নিতে পারেন না। আবার অনেকে যানবাহন না পেয়ে দেরিতে কেন্দ্রে পৌঁছান। আমরা চাইনি কেউ যেন যাতায়াত সমস্যার কারণে বিসিএস পরীক্ষায় পিছিয়ে পড়েন। তাই বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু ভাইয়ের সহায়তায় আমরা এ বাস সার্ভিসের ব্যবস্থা করেছি।”

ঢাকা/আবিদ/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ