টানা বৃষ্টিতে বাগেরহাটে জনজীবন বিপর্যস্ত
Published: 18th, June 2025 GMT
দুই দিনের টানা বর্ষণে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে বাগেরহাট শহরের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। অবিরাম বৃষ্টিতে ভোগান্তিতে পড়েছেন রিকশাচালক, দিনমজুর, শিক্ষার্থী ও কর্মজীবী মানুষ। কোথাও হাঁটু পানি, কোথাও ডুবে গেছে চলাচলের রাস্তা।
মোংলা আবহাওয়া অফিসের তথ্য অনুযায়ী, মঙ্গলবার (১৭ জুন) দুপুর থেকে বুধবার (১৮ জুন) দুপুর পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টিপাত হয়েছে ৫৬ মিলিমিটার। আগামী দুই থেকে তিন দিন বৃষ্টির প্রবণতা অব্যাহত থাকতে পারে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা।
টানা বৃষ্টির কারণে শহরের বিভিন্ন স্থানে পানি জমে গেছে। ফলে অনেক সড়ক চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন খেটে খাওয়া মানুষ। বিশেষ করে রিকশাচালক ও দিনমজুর শ্রেণির লোকজন।
আরো পড়ুন:
নীলফামারীতে স্বস্তির বৃষ্টি
সোমবার থেকে টানা ৩ দিন ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস
রিকশাচালক আব্দুল মসজিদ বলেন, ‘‘দুই দিন ধরে বৃষ্টি থামছে না। রাস্তায় পানি জমে আছে। রিকশা চালাতে খুব কষ্ট হয়। যাত্রীও কম। আয়-রোজগার বন্ধ হয়ে গেছে।’’
একইভাবে দুর্ভোগে পড়েছেন অফিসগামী কর্মজীবীরা। ব্যাংক কর্মকর্তা শরিফুল রাজ বলেন, ‘‘প্রতিদিন সকালে অফিসে যাওয়ার সময় মনে হয় যুদ্ধ করতে বের হচ্ছি। এক হাতে ছাতা, আরেক হাতে জুতা, এইভাবে অফিস যাওয়া যায়? একদিকে রাস্তা খারাপ, অন্যদিকে ড্রেনের অবস্থা বাজে, সব মিলিয়ে আমাদের ভোগান্তির শেষ নেই।’’
স্কুলগামী শিক্ষার্থীরাও এই দুরবস্থার বাইরে নন। বহুমুখী কলেজিয়েট স্কুলের শিক্ষার্থী জুবায়ের ইসলাম বলেন, ‘‘স্কুলে যেতে অনেক কষ্ট হয়। রাস্তায় পানি, পা ভিজে যায়। মাঝে মাঝে ভাবি না গেলেই হয়, কিন্তু পরীক্ষা আর ক্লাস তো থাকে।’’
দিনমজুর মো.
মোংলা আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়াবিদ হারুন আর রশিদ জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টিপাত হয়েছে ৫৬ মিলিমিটার। আগামী দুই থেকে তিন দিন এ বৃষ্টির ধারা অব্যাহত থাকতে পারে। তবে কোনো ধরনের ভারী বজ্রঝড় বা শিলাবৃষ্টির আশঙ্কা নেই।
ঢাকা/শহিদুল/বকুল
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার
রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।
গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।
সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।
ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’