‘অনিয়ম’ এলজিইডির কাজে, পদত্যাগ করানো হলো ইউপি চেয়ারম্যানকে
Published: 18th, June 2025 GMT
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) একটি রাস্তার কাজে অনিয়মের অভিযোগ তুলে রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) এক চেয়ারম্যানকে পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর দিতে বাধ্য করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। বুধবার (১৮ জুন) দুপুরে উপজেলার বাসুদেবপুর ইউপির চেয়ারম্যান নজরুল ইসলামের সঙ্গে এমন ঘটনা ঘটেছে।
এই ইউনিয়নের স্লুইসগেট থেকে বাসুদেবপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পর্যন্ত ৩০০ মিটার একটি রাস্তায় সিমেন্টের ঢালাই করছে এলজিইডি। ৫০ লাখ টাকার এই কাজটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে নিয়ে করছেন হেনা, সেলিম ও সিজান নামের তিন ব্যক্তি। এই কাজে সিমেন্টের অনুপাত কম দেয়া এবং শিডিউল অনুযায়ী পুরুত্ব না দেয়ার অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা।
বুধবার (১৮ জুন) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে দুলাল, তুহিন, মাফি ও নাজমুলসহ ৫০ থেকে ৬০ জন স্থানীয় ব্যক্তি এ সব অভিযোগ তুলে প্রতিকারের জন্য ইউপি কার্যালয়ে চেয়ারম্যান নজরুল ইসলামের কাছে যান। তখন চেয়ারম্যান জানান, রাস্তাটির কাজ করছে এলজিইডি। এখানে ইউনিয়ন পরিষদের কিছু করার নেই। এ সময় কেউ কেউ চেয়ারম্যান এ কাজ থেকে টাকা খেয়েছেন বলে অভিযোগ করেন। পরে স্থানীয়রা চেয়ারম্যানকে অবরুদ্ধ করে রাখেন। খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর একটি দল যায়। তবে পুলিশ স্থানীয়দের সরাতে পারেনি।
আরো পড়ুন:
গাজীপুরে ২২ ইউপির দায়িত্বে প্যানেল চেয়ারম্যান
উপ-নির্বাচন
আশাশুনিতে দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের সংঘর্ষ, আহত ১০
পরে ইউপি চেয়ারম্যান নজরুল ইসলামকে অনিয়ম-দুর্নীতির দায় নিয়ে পদত্যাগ করতে চাপ দেয়া হয়। এ সময় লিখে আনা একটি পদত্যাগপত্রে তাকে স্বাক্ষর করতে বাধ্য করা হয়। পদত্যাগপত্রে লেখা আছে, ‘‘আমি আমার দুর্নীতির কারণে এবং দুর্নীতি জনগণের কাছে প্রমাণিত হওয়ায় স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করছি।’’ এই পদত্যাগপত্র নিয়ে স্থানীয়রা ইউপি কার্যালয়ে তালা দিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে জমা দিতে যান।
বেলা সাড়ে ৩টা পর্যন্ত ইউপি কার্যালয়ে অবরুদ্ধ ছিলেন চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম। তিনি মোবাইল ফোনে বলেন, ‘‘এভাবে তো জোর করে পদত্যাগ হয় না। আমি স্বাক্ষর দিতে বাধ্য হয়েছি। পদত্যাগ করিনি।’’ তিনি বলেন, ‘‘এখানে রাস্তা-টাস্তা কিছু না। এলাকার একটা পক্ষ আমাকে সরাতে চাইছে। তা না হলে কাজ এলজিইডির, আর আমাকে চাপ দেয়া হয়?’’
কাজে অনিয়ম হচ্ছে না দাবি করে এলজিইডির উপজেলা প্রকৌশলী মুনছুর রহমান বলেন, ‘‘কাজে কোনো অনিয়ম হচ্ছে না। স্থানীয় লোকজন বিষয়টা বুঝেছে। তারা ইউএনও অফিসে এসেছিল। তারা লিখিত দিতে চেয়েছে, কাজে কোনো অনিয়ম হচ্ছে না এটা তারা বুঝেছে। তাদের সমস্যা চেয়ারম্যানের সঙ্গে। এ জন্য তাকে পদত্যাগে চাপ দেয়া হয়।’’
এ বিষয়ে গোদাগাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফয়সাল আহমেদ বলেন, ‘‘আমি ফরমালি এই পদত্যাগপত্র পাইনি। যতক্ষণ না পাচ্ছি, ততক্ষণ তিনিই চেয়ারম্যান। তবে স্থানীয় লোকজন তার বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে এসেছিলেন। আমি লিখিত অভিযোগ দিতে বলেছি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’’
পদ-পদবী না থাকলেও ইউপি চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম আওয়ামী লীগের সমর্থক বলে পরিচিত। তবে আওয়ামী লীগের আমলে এলাকার সাবেক সংসদ সদস্য ওমর ফারুক চৌধুরীর সঙ্গে বিরোধ ছিল তার। ‘‘কথা না শোনার কারণে’ সুযোগ পেলেই ফারুক চৌধুরী তাকে অপমাণ করতেন।
ঢাকা/কেয়া/বকুল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর পদত য গপত র উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
টেকনাফে সৈকতে ভেসে এল মাঝিমাল্লাবিহীন ট্রলার
কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার বাহারছড়া ইউনিয়নের হাজমপাড়া সমুদ্রসৈকতে ভেসে এসেছে মাঝিমাল্লাবিহীন একটি বড় ফিশিং ট্রলার। জোয়ারের পানিতে আটকে পড়া ট্রলারটি উত্তাল সাগরের ঢেউয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ট্রলারে থাকা মালামাল ও কাঠ স্থানীয় লোকজন লুট করছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
বাহারছড়া পুলিশ তদন্তকেন্দ্রের পরিদর্শক শোভন কুমার সাহা প্রথম আলোকে বলেন, আজ বুধবার বিকেলে ট্রলারটি হাজমপাড়া সৈকতে ভেসে আসে। এ সময় সেটিতে কোনো মাঝিমাল্লা ছিলেন না। বিষয়টি স্থানীয় কোস্টগার্ড খতিয়ে দেখছে।
স্থানীয় জেলে রফিকুল ইসলাম বলেন, কয়েক দিন ধরে সাগর বেশ উত্তাল রয়েছে। এর মধ্যে আজ বিকেলে বড় আকারের একটি ফিশিং ট্রলার ভেসে আসে। সেটি সৈকতের কাছেই আটকে পড়ে এবং ঢেউয়ের ধাক্কায় ভাঙতে শুরু করে। এরপর কিছু লোকজন ট্রলার থেকে কাঠ ও মালামাল লুটে নেন।
পুলিশ প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে, ট্রলারটি মানব পাচারে ব্যবহারের জন্য সমুদ্রে রাখা হয়েছিল। সাগর উত্তাল হওয়ায় পাচারকারীরা ট্রলারটি ফেলে নিরাপদ স্থানে চলে গেছেন।
টেকনাফের ইউএনও শেখ এহসান উদ্দিন বলেন, মাঝিমাল্লাবিহীন একটি ট্রলার ভেসে আসার খবর পাওয়া গেছে। ঘটনাটি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। স্থানীয় কোস্টগার্ড বিষয়টি তদারক করছে।