যশোরে গাড়িচালকের পরিকল্পনাতেই ছিনতাই: পুলিশ
Published: 18th, June 2025 GMT
যশোরের মনিরামপুরে আর্থিক সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান নগদের প্রাইভেট কার ঠেকিয়ে ৩৫ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনায় সাতজনকে গ্রেপ্তার করেছে জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। ছিনতাই হওয়া ৩২ লাখ টাকা উদ্ধার হয়েছে। নগদ ডিস্ট্রিবিউটরের প্রাইভেট কারচালকের যোগসাজশে এ ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
আজ বুধবার পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নূর-ই-আলম সিদ্দিকী।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন– নগদ ডিস্ট্রিবিউটরের প্রাইভেট কারচালক ও যশোর শহরের পোস্ট অফিসপাড়ার ইউসুফ আলী সাজু, ঝিকরগাছার বাঁকড়া দিগদানা গ্রামের রনি গাজী, সুজন ইসলাম, ইমদাদুল গাজী, নাসিম গাজী, একই উপজেলার খোষালনগর গ্রামের সাগর হোসেন ও সোহেল রানা।
গতকাল মঙ্গলবার সকাল পৌনে ১০টার দিকে যশোরের নগদ ডিস্ট্রিবিউটর রবিউল ইসলাম প্রাইভেট কারযোগে মনিরামপুর যাচ্ছিলেন। পথে জামতলা নামক স্থানে পেছনের দিক থেকে দুটি মোটরসাইকেলে আসা দুর্বৃত্তরা তাঁর গতিরোধ করে। তারা মোটরসাইকেল থেকে নেমে প্রাইভেট কারের কাচ ভাঙচুর এবং চাপাতি দিয়ে হত্যার হুমকি দেয়। একপর্যায়ে ডিস্ট্রিবিউটরকে ভয়ভীতি দেখিয়ে তাঁর কাছে থাকা ৩৫ লাখ টাকা ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। বিষয়টি রবিউল ইসলাম জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে কল করে জানান।
সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জানান, ছিনতাইয়ের ঘটনার আগে ও পরের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পর্যালোচনা করে ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের শনাক্ত করা হয়। ডিবিসহ জেলা পুলিশের একাধিক দল বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ছিনতাইয়ে ব্যবহৃত একটি মোটরসাইকেলের সূত্র ধরে আসামি সাগর হোসেনকে গ্রেপ্তার করে। সাগরের তথ্যের ভিত্তিতে বাকি আসামিদের গ্রেপ্তার করা হয়। ইমদাদুল গাজীর হেফাজত থেকে ১৬ লাখ ৫৫ হাজার ৫০০ টাকা এবং সুজনের বাড়ি থেকে ১৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা ছিনতাইয়ের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে।
নূর-ই-আলম সিদ্দিকী আরও বলেন, ছিনতাইয়ের ঘটনার পর নগদের লোকজন টাকার পরিমাণ ৫৫ লাখ বলেছিলেন, যা সঠিক নয়। প্রকৃত টাকার পরিমাণ এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুল বাশার, মনিরামপুর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার ইমদাদুল হক, ডিবির ওসি মঞ্জুরুল হক ভূঞা, মনিরামপুর থানার ওসি বাবলুর রহমান খান প্রমুখ।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার
রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।
গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।
সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।
ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’