দেশের বিভিন্ন স্থানে গতকাল দিনভর থেমে থেমে বৃষ্টি হয়েছে। কক্সবাজারের রামুতে পাহাড় কাটার সময় মাটিধসে এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। ভোর থেকে চট্টগ্রাম নগরীতে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে বেশ কিছু এলাকায় পানি জমে যায়। এতে কর্মস্থলগামী লোকজন ভোগান্তিতে পড়েন। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় মোংলা বন্দরে চারটি জাহাজ থেকে চাল ও সার খালাস বন্ধ রাখা হয়েছে। বৃষ্টিতে সারাদেশে তাপমাত্রা কমেছে। আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, সারাদেশে আগামী ৩-৪ দিন বৃষ্টি হতে পারে।

চট্টগ্রাম নগরে গতকাল ভোরে ভারী বর্ষণের পর দিনভর থেমে থেমে বৃষ্টি হয়েছে। টানা বৃষ্টি আর দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় বন্ধ রয়েছে মোংলা বন্দরে অবস্থান করা চারটি জাহাজ থেকে চাল ও সার খালাস। গতকাল সকাল থেকে টানা বৃষ্টির কারণে এমভি হোয়াং-৯ ও এমভি এমভি ট্রাঙ্ক-৮ জাহাজ থেকে চাল এবং টিবিএস প্রিন্সেস ও এমভি ডিপ ব্লু জাহাজ থেকে সার খালাস বন্ধ রয়েছে। তবে বন্দরে অবস্থানরত অন্য ৯টি জাহাজে কয়লা, ক্লিংকার ও মেশিনারি পণ্যের আংশিক খালাস কাজ চলছে বলে জানায় বন্দর কর্তৃপক্ষ।

কক্সবাজারের রামুতে পাহাড় কাটার সময় মাটিধসে সিরাজুল হক প্রকাশ গুরাইয়া (২৮) নামে এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। সকালে দক্ষিণ মিঠাছড়ি জনুমাতবরপাড়া ফরেস্ট অফিস-সংলগ্ন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত গুরাইয়া উপজেলার দক্ষিণ মিঠাছড়ি ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের চাইল্যাতলী এলাকার মো.

কালুর ছেলে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের জ্যেষ্ঠ আবহাওয়াবিদ বজলুর রশীদ বলেন, ‘দেশে মৌসুমি বায়ু বিস্তার লাভ করেছে। এ ছাড়া গতকাল দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল, বিশেষ করে খুলনা ও সাতক্ষীরা অঞ্চলে একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হয়ে কলকাতার দিকে চলে গেছে। এ কারণে প্রায় সারাদেশেই বৃষ্টি হচ্ছে। এ বৃষ্টি আরও ৩-৪ দিন থাকতে পারে। তবে ভারী বৃষ্টি হতে পারে দুই-তিন দিন।

আকাশে মেঘের কারণে সমুদ্রবন্দরে ৩ এবং নদীবন্দরে ১ নম্বর সতর্কতা সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি ভারী বৃষ্টিতে পাহাড়ি এলাকায় ভূমিধস এবং নিম্নাঞ্চলে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হতে পারে বলে আবহাওয়া অধিদপ্তর সতর্ক করেছে।

এদিকে আবহাওয়া অধিদপ্তরের সর্বশেষ বুলেটিনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত লঘুচাপটি ঘনীভূত হয়ে গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ এবং তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে সুস্পষ্ট লঘুচাপে পরিণত হয়েছে। এটি উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে। লঘুচাপের বর্ধিতাংশ উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত। মৌসুমি বায়ুর অক্ষ বিহার, সুস্পষ্ট লঘুচাপের কেন্দ্রস্থল ও বাংলাদেশের দক্ষিণাংশ হয়ে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত। মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের ওপর সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে প্রবল অবস্থায় রয়েছে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: এল ক য় অবস থ গতক ল

এছাড়াও পড়ুন:

আরেক ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা উত্থানের সম্ভাবনা জিইয়ে রেখে ঘরে ফিরতে পারি নাই: নাহিদ ইসলাম

আওয়ামী লীগ সরকার পতনের আন্দোলনে এক দফা ঘোষণার বর্ষপূর্তির দিনে সেই কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সমাবেশ করে দেশে ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা সমূলে উৎপাটনের লক্ষ্যের কথা জানিয়েছেন নাহিদ ইসলাম। গত বছর ওই আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক নাহিদই শেখ হাসিনার সরকার পতনের এক দফা ঘোষণা করেছিলেন।

আজ রোববার সন্ধ্যায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সমাবেশে দাঁড়িয়ে তিনি অভ্যুত্থানের পরে তরুণদের নেতৃত্বাধীন দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) গড়ে তোলার পেছনে যে আকাঙক্ষা কাজ করেছে, সেটি তুলে ধরেছেন।

নাহিদ ইসলাম বলেছেন, ‘আমাদের এক দফা দাবি ছিল, আমরা ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার বিলোপ করে নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত করতে চাই। কেবল এক ফ্যাসিবাদী শাসন ব্যবস্থা হটিয়ে, আরেক ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা উত্থানের সম্ভাবনা জিইয়ে রেখে আমরা নিশ্চিন্তে ঘরে ফিরতে পারি নাই। বরং রাষ্ট্র ও সমাজে দীর্ঘদিন জেঁকে বসা এই ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা সমূলে উটপাটনে আপনাদের তীব্র আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নের দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিতে আমরা আপনাদের ছাত্র–শ্রমিক–জনতা ও রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টি গঠন করেছি।’

সমাবেশ থেকে ‘নতুন বাংলাদেশের ইশতেহার’ শিরোনামে ২৪ দফা ঘোষণা করেন নাহিদ ইসলাম। এতে সংবিধান সংশোধনসহ রাষ্ট্র ও জনগণের উন্নতির লক্ষ্যে বিভিন্ন দাবি, এনসিপির ভবিষ্যৎ কার্যক্রমের রূপরেখা তুলে ধরা হয়।

নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘গণঅভ্যুত্থানের এক বছর পরে বাংলাদেশে এই কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আমরা আপনাদের সামনে দাঁড়িয়ে আমাদের দ্বিতীয় রিপাবলিকের ২৪ দফা ইশতিহার ঘোষণা করছি।’

জাতীয় নাগরিক পার্টির এই ২৪ দফার মধ্যে রয়েছে, জুলাই অভ্যুত্থানের স্বীকৃতি ও বিচার; নতুন সংবিধান ও সেকেন্ড রিপাবলিক; গণতন্ত্র ও রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের সংস্কার; ন্যায়ভিত্তিক বিচারব্যবস্থা ও আইন সংস্কার; সেবামুখী প্রশাসন ও দুর্নীতি দমন; ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ ও স্থানীয় সরকার; টেকসই উন্নয়নের জন্য শিক্ষানীতি; সার্বজনীন স্বাস্থ্য; ধর্ম, সম্প্রদায় ও জাতিসত্ত্বার মর্যাদা; কল্যাণমুখী অর্থনীতি; জনবান্ধব পুলিশ; নারীর নিরাপত্তা, অধিকার ও ক্ষমতায়ন; গবেষণা, উদ্ভাবন ও তথ্যপ্রযুক্তি বিপ্লব; তারুণ্য ও কর্মসংস্থান; বহুমুখী বাণিজ্য ও শিল্পায়ন নীতি; টেকসই কৃষি ও খাদ্য সার্বভৌমত্ব; স্বাধীন গণমাধ্যম ও শক্তিশালী নাগরিক সমাজ; শ্রমিক-কৃষকের অধিকার; জাতীয় সম্পদ ব্যবস্থাপনা, নগরায়ন, পরিবহন ও আবাসন পরিকল্পনা; জলবায়ু সহনশীলতা ও নদী-সমুদ্র রক্ষা; প্রবাসী বাংলাদেশির মর্যাদা ও অধিকার; বাংলাদেশপন্থী পররাষ্ট্রনীতি ও জাতীয় প্রতিরক্ষা কৌশল।

সম্পর্কিত নিবন্ধ