মৌলভীবাজারের লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান বাংলাদেশের অন্যতম জীববৈচিত্র্যে সমৃদ্ধ সংরক্ষিত বন। বিরল প্রজাতির গাছপালা ও প্রাণীর একটি বড় আশ্রয় এ উদ্যান। এটি কেবল একটি পর্যটনস্থল নয়, একটি জটিল বাস্তুতন্ত্রের অংশও। ফলে প্রাকৃতিক এ উদ্যান সুরক্ষার বিষয়টি অধিক মনোযোগের দাবি রাখে। কিন্তু অনিয়ন্ত্রিত পর্যটনের কারণে উদ্যানটির বাস্তুতন্ত্র হুমকির মুখে পড়েছে। সেখানকার বন্য প্রাণীর জীবন বিঘ্নিত হচ্ছে। এমন পরিস্থিতি উদ্বেগজনক।

প্রথম আলোর প্রতিবেদন জানাচ্ছে, লাউয়াছড়ায় ঈদের ছুটিতে মাত্র এক সপ্তাহে সাড়ে সাত হাজার পর্যটকের আগমন এবং প্রায় আট লাখ টাকার রাজস্ব আদায় হয়েছে। পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে এ উদ্যানের জনপ্রিয়তা দিন দিন বাড়ছে। শুধু স্থানীয় দর্শনার্থীই নন, সিলেট অঞ্চলের বাইরে থেকেও অনেক পর্যটক উদ্যানটিতে ঘুরতে আসেন। কিন্তু পর্যটকের ভিড় বাড়ায় উদ্যানের জীববৈচিত্র্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। পর্যটকের হইহুল্লোড়, স্পিকারে গান, বনের প্রাণীকে উত্ত্যক্ত করা, বর্জ্য ফেলে যাওয়া—এসব বিষয় বনের নিঃশব্দতাকে গ্রাস করে ফেলছে। উদ্যানের ভেতর দিয়ে দ্রুতগতির গাড়ি চলাচল, হর্নের আওয়াজ, বানরের ওপর পর্যটকের উৎপাত—এমন বিষয়ের কারণেও সংকুচিত হচ্ছে বন্য প্রাণীর স্বাভাবিক জীবন। এসব কারণে বন্য প্রাণীরা আত্মগোপনে চলে যাচ্ছে, তাদের খাদ্য সংগ্রহ, চলাচল, এমনকি প্রজননব্যবস্থাও ব্যাহত হচ্ছে। ফলে প্রকৃতির ভারসাম্য ধ্বংসের মুখে।

গবেষকদের মতে, লাউয়াছড়ার বন্য প্রাণী এখন শুধু বনেই নয়, চা-বাগান, জলাভূমি ও গ্রামাঞ্চলের সঙ্গে একত্রে বাস্তুতান্ত্রিকভাবে টিকে আছে। তাই শুধু উদ্যান নয়, আশপাশের পরিবেশও সুরক্ষিত রাখতে হবে। সেই সঙ্গে বাণিজ্যিক পর্যটনের নামে জীববৈচিত্র্যের ক্ষতিসাধন কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।

এই সংকট নিরসনে জরুরি কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করা এখন সময়ের দাবি। যেমন পর্যটকের সংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। দৈনিক দর্শনার্থীর সংখ্যা নির্ধারণ করে দেওয়া যেতে পারে। আবার পর্যটনের জন্য ইজারা নেওয়া প্রতিষ্ঠান যাতে ক্ষতির মুখে না পড়ে, সেদিকেও গুরুত্ব দিতে হবে। সে ক্ষেত্রে টিকিটমূল্য আরও বাড়ানো যেতে পারে। উন্নত বিশ্বের পর্যটনকেন্দ্রগুলোর পরিবেশের সুরক্ষায় দর্শনার্থীর সংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করা হয়। এখানেও কেন সেটি হবে না?

সংরক্ষিত বনে পর্যটনকেন্দ্রকে কোনোভাবেই অতিবাণিজ্যিকীকরণের দিকে ঠেলে দেওয়া যাবে না। দর্শনার্থীদের সচেতন করতে একটি গাইডলাইনমূলক ব্যবস্থা রাখতে হবে। পর্যটক দলের সঙ্গে কোনো গাইড বা প্রতিনিধি বাধ্যতামূলক করে দেওয়া যেতে পারে। ব্লুটুথ স্পিকার ও হর্ন বাজিয়ে শব্দদূষণ রোধ করতেই হবে। সড়কে গতিসীমা নিশ্চিত করতে পুলিশের টহল বাড়ানো যেতে পারে।

লাউয়াছড়াসহ দেশের সংরক্ষিত বনগুলোয় সব পর্যটনকেন্দ্রে এ ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া যায়। শুধু রাজস্ব আদায় করলেই হবে না, বনের পরিবেশ ও বন্য প্রাণীর জীবনের সুরক্ষাও নিশ্চিত করতে হবে। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আমরা দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: বন য প র ণ র স রক ষ ত

এছাড়াও পড়ুন:

শেয়ারহোল্ডারদের নগদ লভ্যাংশ দিলো ফেডারেল ইন্স্যুরেন্স

পুঁজিবাজারের বিমা খাতে তালিকাভুক্ত কোম্পানি ফেডারেল ইন্স্যুরেন্স পিএলসির পরিচালনা পর্ষদের ঘোষিত নগদ লভ্যাংশ শেয়ারহোল্ডারদের প্রেরণ করা হয়েছে। ২০২৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত হিসাব বছরে শেয়ারহোল্ডারদের জন্য এ লভ্যাংশ বিতরণ করেছে কোম্পানিটি।

বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

তথ্য মতে, ফেডারেল ইন্স্যুরেন্স লিমিটেডের ঘোষিত নগদ লভ্যাংশ বাংলাদেশ ইলেকট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফার নেটওয়ার্ক (বিইএফটিএন) সিস্টেমসের মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের ব্যাংক হিসাবে পাঠানো হয়েছে।

কোম্পানির ২০২৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত হিসাব বছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে শেয়ারহোল্ডারদের জন্য জন্য ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করে। ফলে প্রতিটি ১০ টাকা মূল্যের শেয়ারের বিপরীতে ১ টাকা নগদ লভ্যাংশ পায়েছেন শেয়ারহোল্ডারা।

কোম্পানির বার্ষিক সাধারণ সভায় (এজিএম) শেয়ারহোল্ডারদের সম্মতিক্রমে তা অনুমোদন করা হয়।

ঢাকা/এনটি/ইভা 

সম্পর্কিত নিবন্ধ