রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে বর্ধিত ইলেকটোরাল কলেজ ভোটের পক্ষে জামায়াত
Published: 19th, June 2025 GMT
রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে বর্ধিত ইলেকটোরাল কলেজ ভোটের পক্ষে মত দিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী।
আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ঐকমত্য কমিশনের আলোচনার বিরতিতে জামায়াতের এই অবস্থান তুলে ধরেন আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের।
আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেছেন, রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের ক্ষেত্রে ইলেকটোরাল কলেজ পদ্ধতি প্রবর্তনের প্রস্তাব দিয়েছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। প্রস্তাব অনুযায়ী, ইলেকটোরাল কলেজব্যবস্থায় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য থেকে শুরু করে ৭০ হাজার জনপ্রতিনিধি ভোটার হিসেবে থাকবেন। ইলেকটোরাল কলেজের সংখ্যা নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলো কাছও প্রস্তাব এসেছে। একটি প্রস্তাব হলো, সংসদ যদি উচ্চকক্ষ-নিম্নকক্ষে বিভক্ত হয়, তাহলে ৫০০ ইলেকটোরাল কলেজ। আরেকটি প্রস্তাব হলো, উচ্চকক্ষ-নিম্নকক্ষের সদস্যদের পাশাপাশি জেলা পরিষদ ও সিটি করপোরেশনের সদস্যদের অন্তর্ভুক্ত করে ইলেকটোরাল কলেজের সংখ্যা ৫৭৬ করা।
জামায়াত তিনটির যেকোনো প্রস্তাব গ্রহণ করতে রাজি আছে বলে জানান আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের। তিনি বলেন, ভোটারের সংখ্যার বিষয়ে জামায়াতের অবস্থান নমনীয় থাকবে।
তবে ইলেকটোরাল কলেজ বৃদ্ধির প্রস্তাব গ্রহণ করতে হলে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের শর্তারোপ করেছে জামায়াত। আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মতো স্থানীয় সরকার নির্বাচনও সুষ্ঠু হওয়া জরুরি। তা না হলে যাঁরা ভোটার থাকবেন, তাঁদের মতামত প্রশ্নবিদ্ধ থাকবে।
আরও পড়ুনরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ইলেকটোরাল কলেজব্যবস্থা সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য: সালাহউদ্দিন আহমদ১৫ ঘণ্টা আগেজামায়াতের এই নায়েবে আমির বলেন, আলোচনায় গোপন ব্যালটে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের প্রস্তাব দিয়েছে কয়েকটি দল। জামায়াত এই প্রস্তাবকে আনন্দের সঙ্গে গ্রহণ করবে। জামায়াতের অভ্যন্তরীণ সব নির্বাচন গোপন ব্যালটে হয়। তাই তাঁরা এমন প্রস্তাবকে সাধুবাদ জানায়।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
জুলাই সনদের বাস্তবায়নে দেরি হলে জনগণ আবারও রাস্তায় নামবে: জামায়াত নেতা রফিকুল
জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি এখন দেশের ১৮ কোটি মানুষের দাবি বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশের জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল রফিকুল ইসলাম খান। তিনি বলেন, ‘এই সনদ নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে জারি করা হোক এবং প্রয়োজনে গণভোটের আয়োজন করা হোক। তবে এই গণভোট অবশ্যই জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেই হতে হবে, নির্বাচনের পরে নয়।’
আজ বুধবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে জুলাই সনদের বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে তৃতীয় ধাপে তৃতীয় দিনের আলোচনা শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন রফিকুল ইসলাম খান। এ সময় উপস্থিত ছিলে জামায়াতের আরেক সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ।
জুলাই সনদের বাস্তবায়নে দেরি হলে জনগণ স্বাভাবিকভাবেই আবারও রাস্তায় নেমে আসবে বলে মন্তব্য করেন রফিকুল ইসলাম খান। তিনি বলেন, ১৯৯০ সালের গণ-অভ্যুত্থানের পর সে সময়কার দলগুলোর ঐকমত্য থাকা সত্ত্বেও ক্ষমতায় থাকা দলগুলো সেটি (তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা) যথাসময়ে বাস্তবায়ন করেনি। পরে আন্দোলনের মাধ্যমেই তা সংবিধানে যুক্ত হয়।
জামায়াতের এই নেতা আরও বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল হয়েছিল বিচারপতি খায়রুল হকের রায়ের মাধ্যমে। আদালতের ওপর প্রভাব বিস্তার করে এ রায় দেওয়ানো হয়েছিল। তাই বিচার বিভাগকে আবার বিতর্কের মুখে না ফেলে সংবিধানিক আদেশের মাধ্যমে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের পক্ষে জামায়াত।
জামায়াতের আরেক সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, ঐকমত্য কমিশন একটি বিশেষজ্ঞ কমিটির মাধ্যমে চারটি বিকল্প নিয়ে কাজ করেছে, যার মধ্যে কমিশন সংবিধানিক আদেশের প্রস্তাবটি সমর্থন করেছে। এই আদেশের মাধ্যমে জুলাই সনদের ২২টি আর্টিকেল বাস্তবায়িত হতে পারে। এটি আইনিভাবে সবচেয়ে শক্তিশালী ভিত্তি।
এক প্রশ্নের জবাবে হামিদুর রহমান বলেন, সংবিধানের মৌলিক কাঠামো পরিবর্তন করার এখতিয়ার সংসদের নেই, এবং এ ধরনের পরিবর্তন করতে হলে অবশ্যই গণভোটের প্রয়োজন হয়।
জামায়াতে ইসলামী জনগণের অভিপ্রায়কে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয় উল্লেখ করে জামায়াতের এ সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, জনগণের ইচ্ছা ও আকাঙ্ক্ষাই হচ্ছে দেশের সর্বোচ্চ আইন।
জুলাই সনদের যে আদর্শ ও চেতনা, তা বাস্তবায়ন হওয়া উচিত এবং যারা এই আদর্শের পথে হাঁটবে না, জনগণ তাদের ব্যাপারে সঠিক সিদ্ধান্ত নেবে বলে মনে করেন হামিদুর রহমান আযাদ। উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, ডাকসু নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়লাভ এটি প্রমাণ করে যে এ দেশের তরুণসমাজ ও জনগণ নতুন রাজনৈতিক ব্যবস্থা চায় এবং জুলাই বিপ্লবের যোদ্ধাদের পক্ষেই রয়েছে।