গলে বাংলাদেশের করা ৪৯৫ রানের জবাব বেশ ভালোভাবেই দিচ্ছে শ্রীলঙ্কা। বৃহস্পতিবার তৃতীয় দিনের খেলা তারা শেষ করেছে ৪ উইকেটে ৩৬৮ রান তুলে। এক দিনে ৩৬৮ রান তুলে লঙ্কান ব্যাটসম্যানরা বাংলাদেশকে কড়া জবাব দিয়েছে। বাংলাদেশ ৪ উইকেট তুলে নিলেও ব্যাটিংয়ে পুরো দিন দাপট দেখিয়েছে অতিথিরা।
বাউন্ডারির ফোয়ারা ছুটিয়ে রান তুলেছেন অনায়াসে। প্রথম সেশনে রান রেট ছিল ৩.
আগ্রাসী মনোভাবে ব্যাটিং করা পাথুম নিশাঙ্কা ছিলেন দুর্দান্ত। সেঞ্চুরির পর ডাবল সেঞ্চুরির দিকে এগিয়ে যেতে থাকেন এই ওপেনার। কিন্তু ১৩ রানের আক্ষেপে পুড়তে হয় তাকে। ২৫৬ বলে ২৩ চার ও ১ ছক্কায় ১৮৭ রানের ইনিংস খেলে হাসান মাহমুদের ভেতরে ঢোকানো বলে বোল্ড হন। দ্বিতীয় নতুন বল নেওয়ার পর সেটাই ছিল বাংলাদেশের প্রথম সাফল্য।
আরো পড়ুন:
ভারতের বিপক্ষে ইংল্যান্ডের একাদশ ঘোষণা
সাদা বলের প্রস্তুতি চট্টগ্রামে
মূলত নিশাঙ্কা একাই গড়ে দেন ব্যবধান। এছাড়া দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৫৪ রান করেন দিনেশ চান্দিমাল। ক্যারিয়ারের শেষ টেস্ট খেলতে নামা অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুস ৩৯ রানে থেমে যান। কামিন্দু মেন্ডিস ৩৭ ও ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা ১৭ রানে অপরাজিত থেকে দিন শেষ করেছেন। ১২৭ রানে পিছিয়ে থেকে দিন শেষ করেছে স্বাগতিকরা।
৯ উইকেটে ৪৮৪ রান নিয়ে তৃতীয় দিনের খেলা শুরু করেছিল বাংলাদেশ। ১১ রান যোগ করতেই শেষ উইকেট হারায় অতিথিরা। আসিথার বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন নাহিদ। ৭ রানে অপরাজিত থাকেন হাসান।
পাঁচশো রান করতে না পারলেও নিজেদের পুঁজি নিয়ে সন্তুষ্ট ছিল বাংলাদেশ। কিন্তু বোলিং যুৎসই হয়নি শুরুতে। নতুন বলে কোনো কার্যকারিতা দেখাতে পারেননি নাহিদ ও হাসান। ১৩তম ওভারে ব্রেক থ্রু এনে দেন স্পিনার তাইজুল। অভিষিক্ত লাহিরু উদারা ফিরতি ক্যাচ দেন ২৯ রানে। দ্বিতীয় উইকেটে নিশাঙ্কা ও চান্দিমাল ১৫৭ রানের জুটি গড়েন।
এ সময়ে নিশাঙ্কা সেঞ্চুরি ও চান্দিমাল ফিফটি তুলে নেন। বিপজ্জনক এই জুটি ভাঙেন নাঈম হাসান। চান্দিমাল লেগ স্লিপে ক্যাচ দেন। চার নম্বরে ক্রিজে আসেন ম্যাথুস। তাকে গার্ড অব অনার দেয় বাংলাদেশ দল। ৩৯ রানে তাকে থামান স্পিনার মুমিনুল হক। একটু লাফিয়ে ওঠা বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন ম্যাথুস।
আরেকপ্রান্তে নিশাঙ্কা নিজের রান করে যাচ্ছিলেন। ক্যারিয়ারে প্রথমবার দেড়শ ছাড়িয়ে যান। ডাবল সেঞ্চুরির পথেও এগিয়ে যান। কিন্তু নতুন বল নেওয়ার পর সব ওলটপালট। হাসানের দারুণ এক ডেলিভারিতে বোল্ড। সেখান থেকে ৩৭ রানের জুটি গড়েছেন কামিন্দু ও ধনাঞ্জয়া। কতদূর যায় তাদের ব্যাটিং সেটাই দেখার।
ঢাকা/ইয়াসিন/আমিনুল
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
সূর্য কি সত্যিই জেগে উঠছে
সৌরজগতে উষ্ণতা থেকে শুরু করে ভর আর সব গ্রহের কক্ষপথের স্থিতিশীলতা দিচ্ছে সূর্য। আমাদের পৃথিবীতে জীবনের অস্তিত্বের জন্য প্রয়োজনীয় অবস্থা তৈরির জন্য সূর্যের অবস্থান গুরুত্বপূর্ণ। তবে নাসার বিজ্ঞানীদের ধারণা, শক্তিশালী সূর্য জেগে উঠেছে। আমাদের সূর্য অপ্রত্যাশিতভাবে তার কার্যকলাপ বৃদ্ধি করতে শুরু করেছে। এতে আরও তীব্র সৌরঝড় দেখা দিতে পারে। সৌরঝড়ের কারণে নানা ভাবে বিশ্বব্যাপী যোগাযোগ ব্যাহত হয়।
নাসার তথ্যমতে, আমাদের সৌরজগতের মধ্যমণি সূর্য প্রায় ২০ বছর ধরে শান্ত ও দুর্বল অবস্থায় ছিল। ২০০৮ সালে সূর্যের প্রকৃতিতে আশ্চর্যজনকভাবে পরিবর্তন আসে। বিজ্ঞানীরা সেই পরিবর্তনের কারণে খুঁজে বের করার চেষ্টা করছেন। নতুন এক গবেষণায় দেখা গেছে, ২০০৮ সাল থেকে সূর্যের সৌরবায়ু বা চার্জ হওয়া কণার স্রোতের গতি, ঘনত্ব, তাপমাত্রা ও চৌম্বক ক্ষেত্রের শক্তি বাড়ছে। এতে শক্তিশালী সৌরঝড় তৈরির সুযোগ বাড়ছে। এসব ঝড় নিয়মিতভাবে পৃথিবীতে আঘাত করে। ভূ-চৌম্বকীয় ঝড়ের কারণে পাওয়ার গ্রিড ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এই ঝড় উপগ্রহের স্বাভাবিক কাজে হস্তক্ষেপ করে বলে জিপিএসের মতো যোগাযোগব্যবস্থা ব্যাহত হয়।
সৌরঝড় কখন তৈরি হবে, তার সঠিক সময় ও ভবিষ্যদ্বাণী করা কঠিন। বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, ২০২৫ থেকে ২০২৬ সালের মধ্যে সূর্যের বর্তমান ১১ বছরের চক্র সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছাবে বলে ঝড় আরও ঘন ঘন হতে পারে। এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় অবস্থিত নাসার জেট প্রোপালশন ল্যাবরেটরির প্রধান গবেষণা লেখক জেমি জ্যাসিনস্কি বলেন, সূর্য ধীরে ধীরে জেগে উঠছে। সৌর কণার বর্ধিত সংস্পর্শ মহাকাশচারীদের জন্য ঝুঁকি তৈরি করতে পারে। এ সপ্তাহে একটি শক্তিশালী ভূ-চৌম্বকীয় ঝড়ের কারণে স্টারলিংক স্যাটেলাইট ইন্টারনেট সেবায় ব্যাপক সমস্যা দেখা যায়।
অ্যাস্ট্রোফিজিক্যাল জার্নাল লেটার্সে প্রকাশিত গবেষণায় বলা হয়েছে, সৌর কার্যকলাপের বৃদ্ধি দীর্ঘ ২২ বছরের চক্রের অংশ হতে পারে। সূর্য এখন তার রহস্যময় দুই দশকের শান্ত অবস্থা থেকে বেরিয়ে যাচ্ছে। ২০০৮ সাল থেকে সৌরবায়ুর গতি ৬ শতাংশ ও ঘনত্ব ২৬ শতাংশ বেড়েছে।
সূত্র: ডেইলি মেইল