নোয়াখালীতে ২৪ ঘণ্টায় দেশের সর্বোচ্চ বৃষ্টি, ডুবেছে শহরের রাস্তাঘাট-ঘরবাড়ি
Published: 19th, June 2025 GMT
২৪ ঘণ্টায় দেশের সর্বোচ্চ ১৫১ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে নোয়াখালীতে। গতকাল বুধবার সকাল ছয়টা থেকে আজ বৃহস্পতিবার সকাল ছয়টা পর্যন্ত এই বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে। জেলা আবহাওয়া পর্যবেক্ষণকেন্দ্র থেকে আজ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে প্রথম আলোকে দেশের সর্বোচ্চ বৃষ্টির এই রেকর্ডের কথা নিশ্চিত করা হয়েছে।
এদিকে ২৪ ঘণ্টার এই বৃষ্টিতে ডুবে গেছে জেলা শহর মাইজদীর অধিকাংশ সড়ক। আজ সকালে সরেজমিনে জেলা শহর মাইজদীর নোয়াখালী সরকারি কলেজ সড়ক, সেন্ট্রাল রোড, হাকিম কোয়ার্টার সড়ক, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে, পুলিশ সুপারের কার্যালয়, জেলা শিল্পকলা একাডেমি এলাকা, জেলা জজ আদালত সড়ক এবং মাইজদী স্টেশন রোড এলাকা ঘুরে দেখা যায়, প্রায় প্রতিটি সড়কই বৃষ্টির পানিতে সৃষ্ট জলাবদ্ধতার কবলে পড়েছে। সড়কগুলোর পাশের নালা দিয়ে পানি সরছে অত্যন্ত ধীরগতিতে। এ কারণে যত বৃষ্টি হচ্ছে, পরিস্থিতি ততই খারাপ হচ্ছে।
লক্ষ্মীনারায়ণপুর এলাকার বাসিন্দা আবদুল জলিল পানি মাড়িয়ে বাজার করে বাসায় ফিরছিলেন। তিনি বলেন, ‘এই শহর নিয়ে, নাগরিকদের সুযোগ-সুবিধা নিয়ে আসলে কেউ ভাবে না। ড্রেনগুলোর বেশির ভাগই সরু ও অপরিকল্পিত। সরকারি অর্থের অপচয় ছাড়া কিছুই নয়। আবার যেসব ড্রেন আছে, সেগুলোও ঠিকমতো পরিষ্কার করা হয় না। এ কারণে বাসিন্দাদের দুর্ভোগের শেষ নেই। একটু বেশি বৃষ্টি হলেই সড়কে পানি ওঠে। ঘর থেকে বের হলেই পানি মাড়াতে হয়।
রাস্তাঘাট ছাড়াও জলমগ্ন হয়েছে শহরের অনেক বাড়িঘর। সীমাহীন দুর্ভোগ নেমে এসেছে শহরের বাসিন্দাদের জীবনে। শহরের অপরিকল্পিত ও অপর্যাপ্ত ড্রেনেজ ব্যবস্থা এই দুর্ভোগের প্রধান কারণ বলে মনে করছেন বাসিন্দারা। অপর দিকে অতিবৃষ্টির কারণে জলাবদ্ধতার পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে জেলার অন্যান্য উপজেলাতেও। বৃষ্টির পানি জমে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।
আজ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে জেলা আবহাওয়া পর্যবেক্ষণকেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো.
শহর ঘুরে দেখা যায়, পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের নিচতলায় বৃষ্টির পানি ঢুকে পড়েছে, সামনেও প্রায় এক ফুট পানি। পানি মাড়িয়ে সেবাপ্রার্থীরা কার্যালয়ে আসা-যাওয়া করছেন। একই চিত্র দেখা যায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের আশপাশেও। চারপাশেই পানি থই থই করছে। বৃষ্টির পানিতে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন শহরের সরকারি আবাসিক এলাকার সড়ক (ফ্ল্যাট রোড) ও প্রধান সড়কের পাশের অনেক ব্যবসায়ী। পানি ঢুকে পড়েছে সড়কসংলগ্ন দোকানগুলোতে। এতে ব্যবসায়ীরা আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন।
শহরের ফ্ল্যাট রোডের ব্যবসায়ী আলমগীর হোসেন বলেন, তাঁর দোকানের সামনের এই সড়ক দিয়ে সরকারি আবাসিক এলাকায় বসবাসকারী সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা যাতায়াত করেন প্রতিনিয়ত। তাঁরা যাতায়াতের এই সড়কের দিকেও নজর দেন না। সড়কের পাশে ড্রেন করা হয়েছে সড়ক থেকে উঁচু করে। পানি ড্রেনে না গিয়ে সড়কে জমে। এর ফলে ক্রেতারা দোকানে আসতে চান না।
জলাবদ্ধতার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে নোয়াখালী পৌরসভার প্রশাসক ও স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক (ডিডি-এলজিইডি) জালাল উদ্দীন বলেন, ড্রেনেজ সমস্যা জলাবদ্ধতার অন্যতম কারণ। শহরের চারপাশ খানিক উঁচু হওয়ায় পানি সরতে সময় লাগে। এতে ভোগান্তি বাড়ে। পরিস্থিতির উন্নয়নে অতিরিক্ত লোক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তিনি নিজেও সরেজমিনে পরিদর্শন করে ব্যবস্থা নেবেন বলে জানান।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: শহর র সরক র ম ইজদ ব যবস
এছাড়াও পড়ুন:
শেখ হাসিনা ভারতে বসে আবারও ষড়যন্ত্র করছে: দুদু
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, “ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকার জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়েছে এবং দেশের সম্পদ বিদেশে পাচার করেছে। স্বৈরাচার শেখ হাসিনা ভারতে বসে আবারও ষড়যন্ত্র করছে। চোরাগোপ্তা হামলার পরিকল্পনা করছে।”
জাতীয় নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বাংলাদেশ নাগরিক অধিকার আন্দোলনের উদ্যোগে আয়োজিত প্রতীকী যুব সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
শামসুজ্জামান দুদু বলেন, “তারা যদি আবার ষড়যন্ত্র করে, নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করে, তাহলে জনগণ আর কোনো ষড়যন্ত্র মেনে নেবে না। সম্মিলিতভাবে আবার তাদেরকে প্রতিহত করা হবে। বাংলাদেশে বর্তমান সময়ে সবচেয়ে বড় প্রয়োজন একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন। এ নির্বাচনের প্রত্যাশায় দীর্ঘ ১৬-১৭ বছর ধরে আন্দোলন-সংগ্রামে অনেক তরুণ প্রাণ ঝরে গেছে, লক্ষাধিক নেতা-কর্মীর নামে মামলা হয়েছে এবং গণতন্ত্র রক্ষায় মানুষ নির্বাসিত জীবনযাপন করছে।”
বিএনপির এই কেন্দ্রীয় নেতা বলেন, “যদি নির্বাচনের ঘোষণা আসে, তাহলে দেশে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসবে। নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণ বিএনপিকে আবারও ক্ষমতায় আনবে।”
তিনি বলেন, “আগামী দিনে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ও বেগম খালেদা জিয়ার জ্যেষ্ঠ পুত্র তারেক রহমান বাংলাদেশের নেতৃত্বে আসবেন এবং জনগণের ওপর নির্ভর করে দেশকে এগিয়ে নেবেন। স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা করে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার মধ্যে দিয়েই আগামী দিনের বাংলাদেশ গড়ে উঠবে।”
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন আয়োজক সংগঠনের সভাপতি এম জাহাঙ্গীর আলম এবং সঞ্চালনা করেন সদস্য সচিব ইঞ্জিনিয়ার মোফাজ্জল হোসেন হৃদয়। আরো বক্তব্য রাখেন—বিএনপির প্রশিক্ষণবিষয়ক সম্পাদক এ বি এম মোশাররফ হোসেন, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মো. রহমতুল্লাহ, বিলকিস ইসলাম, প্রিন্সিপাল শাহ মোহাম্মদ নেসারুল হক,মৎস্যজীবী দলের নেতা ইসমাইল হোসেন সিরাজী, কৃষক দলের নেতা আব্দুর রাজী, ছাত্রদলের নেতা শামীম আখন্দ প্রমুখ।
ঢাকা/রায়হান/রফিক