চলমান ইরান-ইসরায়েল সংঘাত নিয়ে টেলিফোনে কথা বলেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। ফোনালাপে ইসরায়েলের ইরানবিরোধী পদক্ষেপের নিন্দা জানিয়েছেন দুই বিশ্ব নেতা। সংঘাত থামাতে ভ্লাদিমির পুতিন আবারও মধ্যস্থতার প্রস্তাব দিয়েছেন বলে জানিয়েছে ক্রেমলিন। খবর- সিএনএন

ফোনালাপে পুতিনকে জিনপিং বলেন, যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে ইসরায়েলকে যত দ্রুত সম্ভব যুদ্ধবিরতিতে যাওয়া দরকার। রাশিয়ার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পুতিন ও জিনপিং একমত যে, এই সংঘাতের বা ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির কোনো সামরিক সমাধান নেই। এগুলো কেবল রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক উপায়েই সমাধান সম্ভব।

ক্রেমলিন উপদেষ্টা ইউরি উশাকভ বলেন, ‘যদি প্রয়োজন হয়, রাশিয়ার পক্ষ থেকে মধ্যস্থতার যেকোনো সম্ভাব্য উদ্যোগ নেওয়ার প্রস্তুতির কথা নিশ্চিত করেছেন ভ্লাদিমির পুতিন।’ 

অন্যদিকে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং তাৎক্ষণিকভাবে যুদ্ধবিরতির জন্য ইরান ও ইসরায়েলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। বিশেষে করে উত্তেজনা কমানোর জন্য ইসরায়েলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। 

এছাড়া সংঘাত নিরসনে ‘বড় শক্তিগুলোর’ প্রতি উত্তেজনা কমানোর আহ্বান জানিয়েছেন চীনের প্রেসিডেন্ট যা ইরানে যুক্তরাষ্ট্রের সম্ভাব্য হস্তক্ষেপ বিবেচনায় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রতি পরোক্ষ বার্তা বলে মনে করা হচ্ছে।

চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের নাম উল্লেখ না করে শি জিনপিং বলেন, ‘আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়- বিশেষ করে যেসব বড় শক্তির সংঘাতরত পক্ষগুলোর ওপর বিশেষ প্রভাব আছে তাদের উচিত পরিস্থিতি শান্ত করার উদ্যোগ নেওয়া, উল্টোটা নয়।’

এদিকে ইসরায়েল-ইরান সংঘাতে আমেরিকার হস্তক্ষেপ পরিবেশকে ‌‘আরেকটি ভয়াবহ উত্তেজনার দিকে নিয়ে যাবে’ বলে মন্তব্য করেছেন ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ।  রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা তাসকে এ কথা বলেন তিনি। এই সংঘাতে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া আলাদাভাবে দুই পক্ষকে সমর্থন করছে। ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানের কাছে ‘নিঃশর্ত আত্মসমর্পণ’ এবং তাদের বিরুদ্ধে হামলার কথা ভাবলেও, মস্কো তেহরানকে গুরুত্বপূর্ণ মিত্র হিসেবেই দেখে। চলতি বছরের শুরুতে ভ্লাদিমির পুতিন ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ানের সঙ্গে একটি কৌশলগত অংশীদারিত্ব চুক্তি স্বাক্ষর করেন, যেখানে প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা সহযোগিতা বৃদ্ধিতে আগ্রহের কথা জানিয়েছে দুই দেশ। ইরান মস্কোকে ‘শাহেদ ড্রোন’ সরবরাহ করেছে যা ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়ার যুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।

ইরানে ইসরায়েলের এই হামলার নিন্দা জানিয়েছে রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তারা এই পদক্ষেপকে উস্কানিমূলক বলেও উল্লেখ করেছে। এছাড়া বুধবারই ইসরায়েলকে সামরিক সহায়তা না দেওয়ার জন্য আমেরিকাকেও সতর্ক করেছেন রাশিয়ার উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই রিয়াবকভ। তিনি বলেছেন, ‘এটি নাটকীয়ভাবে পুরো পরিস্থিতিকে অস্থিতিশীল করবে।’ এমন প্রেক্ষাপট ইসরায়েল-ইরান সংকট নিয়ে মস্কো ও ওয়াশিংটনকে সংঘর্ষের পথে ঠেলে দিচ্ছে। ডোনাল্ড ট্রাম্প পুনরায় নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে রাশিয়া-মার্কিন সম্পর্কের উন্নতির ক্ষেত্রে এটি একটি বড় বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ইসর য় ল

এছাড়াও পড়ুন:

বিটিভি-বেতারের স্বায়ত্তশাসনে পাঁচ উপদেষ্টার সমন্বয়ে কমিটি গঠন

রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি) ও বাংলাদেশ বেতারের স্বায়ত্তশাসন নিশ্চিতে শিক্ষা উপদেষ্টা সি আর আবরারের নেতৃত্বে পাঁচ উপদেষ্টার সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠন করেছে সরকার। গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী এ কমিটি গঠন করা হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে এক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়েছে। পরে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং এ তথ্য জানিয়েছে।

এ কমিটি গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের সুপারিশগুলো বাস্তবায়নের পথরেখা তৈরিতে কাজ করবে। পাশাপাশি টেলিভিশন ও অন্যান্য গণমাধ্যমের গত ১৫ বছরের নীতিমালা পর্যালোচনা ও ভবিষ্যতের নীতি প্রণয়নে কাজ করবে।

শিক্ষা উপদেষ্টার নেতৃত্বাধীন এ কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল; পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান; সড়ক পরিবহন ও সেতু উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান এবং গৃহায়ণ ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান।

গত মার্চে গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে জমা দেওয়া হয়। এ কমিশনের প্রধান ছিলেন জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক কামাল আহমেদ।

প্রতিবেদনে বিটিভি, বাংলাদেশ বেতার এবং বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থাকে (বাসস) একীভূত করে একটি প্রতিষ্ঠান করার সুপারিশ করেছে গণমাধ্যম সংস্কার কমিশন। এ প্রতিষ্ঠানের নাম হতে পারে ‘বাংলাদেশ সম্প্রচার সংস্থা বা জাতীয় সম্প্রচার সংস্থা’। এ প্রতিষ্ঠানের বার্তা বিভাগ হিসেবে বাসসকে একীভূত করতে বলেছে কমিশন। এ ক্ষেত্রে এ প্রতিষ্ঠানে তিনটি বিভাগ থাকবে। এগুলো হলো টেলিভিশন, বেতার ও বার্তা বিভাগ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ