ভারতে কারাভোগ শেষে ফিরলেন ১৪ বাংলাদেশি
Published: 19th, June 2025 GMT
কাজের সন্ধানে অবৈধভাবে ভারতে গিয়ে আটক হওয়া ১৪ বাংলাদেশি কারাভোগ শেষে দেশে ফিরেছেন।
বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) দুপুর সাড়ে ৩টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া স্থলবন্দরের ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট দিয়ে তারা দেশে ফেরেন। দেশে ফেরত আসা বাংলাদেশিদের মধ্যে ছয়জন নারী ও একজন শিশু রয়েছে।
ফেরত আসা বাংলাদেশিরা হলেন, ইসমাইল, হারুন মজুমদার, পাপিয়া আক্তার, লিজা খানম, লিজা খাতুন, আশা মণি, মফিজুল ইসলাম, তাহিয়াতুন নেসা, আঁখি ইসলাম, সঞ্জয় সরকার, স্বপন সরকার, যিশু কান্তি দাস, বিপুল দাস ও সুশেন দাস। তাদের বাড়ি ফেনী, নারায়ণগঞ্জ, গোপালগঞ্জ, নড়াইল, চাঁদপুর, খুলনা, নেত্রকোণা ও সুনামগঞ্জ জেলায়।
আরো পড়ুন:
প্যারোলে মুক্তি পেয়ে মায়ের জানাজায় যুবলীগ নেতা
চরমপন্থি নেতা নাসিমকে ছিনিয়ে নেয়ার ঘটনায় মামলা
ভারতের আগরতলার বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনের সহায়তায় এবং বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাকের মাইগ্রেশন বিভাগের মধ্যস্ততায় দেশে ফেরেন তারা। পরে স্থলবন্দরে শূন্যরেখায় এসব বাংলাদেশিদের তাদের স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
এ সময় আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জি এম রাশেদুল ইসলাম, বন্দরের ইমিগ্রেশন ইনচার্জ মোহাম্মদ আব্দুস সাত্তারসহ বিজিবি ও বিএসএফ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
দীর্ঘদিন পর স্বজনদের ফিরে পেয়ে আখাউড়া স্থলবন্দরের শূন্য রেখায় আবেগঘণ পরিবেশের সৃষ্টি হয়।
ভারত ফেরত খুলনার মাহফজুল ইসলামের মা আম্বিয়া বেগম বলেন, ‘‘আমার ছেলে, ছেলের বউ, নাতনি ১১ মাস আগে কাজের সন্ধানে বাড়ি থেকে বের হয় যায়। পরে খবর পাই ভারতে গিয়ে আটক হয়েছে। সরকারি প্রক্রিয়া শেষে আজকে ফিরে পেয়ে ভালো লাগছে।’’
ভারত ফেরত সুনামগঞ্জের স্বপন দাসের ভাই তপন দাস বলেন, ‘‘দালালের খপ্পড়ে পড়ে ভারতে ধান কাটতে গিয়েছিলেন তার ভাই। আজ আইনি প্রক্রিয়ার শেষে ভাইকে ফেরত পেয়ে ভালো লাগছে। পরে ব্র্যাকের পক্ষ থেকে প্রত্যেককে নগদ ৩ হাজার টাকা ও খাবার দেয়া হয়।’’
ব্র্যাকের মাইগ্রেশন বিভাগের ডেপুটি ম্যানেজার শায়লা শারমিন জানান, ফেরত আসা বাংলাদেশিদের আর্থিক প্রণোদনা ও জরুরি খাদ্য সহায়তা দেয়া হয়েছে। পরবর্তীতে তাদের পুনর্বাসনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে মাইগ্রেশন বিভাগ।
আগরতলার বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনের কনস্যুলার অ্যাসিস্টেন্ট ওমর শরীফ জানান, কাজের সন্ধানে অবৈধভাবে ভারত গিয়ে আটক হন ১৪ বাংলাদেশি। পরে আদালতের আদেশে কারাভোগ শেষে তাদের দেশে ফেরত পাঠানোর উদ্যোগ নেয়া হয়। আগরতলায় ক্ষণস্থায়ী কারাগারে আটক আরো ৩৩ জন বাংলাদেশিকে ফেরত আনার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
ঢাকা/পলাশ/বকুল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইসল ম সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
কুলাউড়ার প্রতিবন্ধী শিশুটির পাশে প্রশাসন, পেয়েছে ‘সুবর্ণ নাগরিক কার্ড’
মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় শারীরিক প্রতিবন্ধী শিশু গোপাল সাঁওতালের পাশে দাঁড়িয়েছে উপজেলা প্রশাসন। গতকাল সোমবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মহিউদ্দিন শিশুটির বাড়িতে গিয়ে পরিবারের খোঁজখবর নেন। এ সময় গোপালের নামে বরাদ্দকৃত সরকারি প্রতিবন্ধী ভাতার ‘সুবর্ণ নাগরিক কার্ড’ তার স্বজনদের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
সাড়ে তিন বছর বয়সী গোপাল সাঁওতাল উপজেলার কর্মধা ইউনিয়নের মুরইছড়া চা-বাগানের স্কুলটিলা এলাকার বাসিন্দা। সে চা-শ্রমিক অনিল সাঁওতাল ও সনছড়ি সাঁওতাল দম্পতির একমাত্র সন্তান।
উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, গতকাল দুপুরে ইউএনও মো. মহিউদ্দিন গোপালের বাড়িতে যান এবং তার স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে শিশুটির শারীরিক সমস্যার বিষয়ে খোঁজখবর নেন। এ সময় উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা প্রণেশ বর্মা, কর্মধা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হেলাল আহমদ ও ইউপি সদস্য সিলভেস্টার পাঠাং উপস্থিত ছিলেন।
ইউএনও মো. মহিউদ্দিন বলেন, শিশু গোপাল এত দিন প্রতিবন্ধী ভাতার আওতার বাইরে ছিল। ফেসবুক ও বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর বিষয়টি জানা যায়। এরপর গত রোববার স্বজনেরা সংশ্লিষ্ট দপ্তরে গিয়ে আবেদন করেন। দ্রুততার সঙ্গে ‘সুবর্ণ নাগরিক কার্ড’ তৈরি করে তা হস্তান্তর করা হয়েছে। চলতি মাসের শেষের দিকে শিশুটির পরিবারের বিকাশ নম্বরে এক বছরের ভাতা (প্রতি মাসে ৮৫০ টাকা করে) পাঠানো হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
আরও পড়ুনসন্তান দাঁড়াতে না পারায় গর্তে দাঁড় করিয়ে খাওয়ান মা১৫ জুন ২০২৫ইউএনও আরও বলেন, সমাজসেবা মন্ত্রণালয়ের আওতায় মৌলভীবাজার সদর উপজেলায় প্রতিবন্ধীসেবা ও সাহায্যকেন্দ্র রয়েছে। শিশু গোপালকে নিয়ে স্বজনেরা আগামী বুধবার সেখানে যাবেন। সেখানে চিকিৎসকেরা শিশুটির শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে প্রয়োজনীয় সহায়তার ব্যবস্থা করবেন। হুইলচেয়ার, অন্যান্য সরঞ্জাম বা ফিজিওথেরাপির প্রয়োজন হলে তা দেওয়া হবে। উপজেলা প্রশাসন এ বিষয়ে সব ধরনের সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে।
সম্প্রতি কয়েকজন ভ্রমণকারী মুরইছড়া এলাকায় বেড়াতে গিয়ে শিশু গোপালের কথা জানতে পারেন। জন্মের পর থেকে গোপাল কোমরের নিচের অংশে শক্তি পায় না। চিকিৎসকেরা এ রোগকে ‘সেরেব্রাল পালসি’ হিসেবে শনাক্ত করেন। অর্থসংকটে তার পরিবার চিকিৎসা করাতে পারছিল না। খিদে পেলে শিশুটিকে ঘরের মেঝেতে করা একটি গর্তে দাঁড় করিয়ে খাওয়াতে হতো। এ চিত্র দেখে এক ভ্রমণকারী, স্থানীয় কবি ও শিক্ষক সঞ্জয় দেবনাথ শিশুটির ছবিসহ একটি মানবিক পোস্ট দেন ফেসবুকে। পরে তা ভাইরাল হয়।
এ বিষয়ে ১৫ জুন প্রথম আলো অনলাইনে ‘সন্তান দাঁড়াতে না পারায় গর্তে দাঁড় করিয়ে খাওয়ান মা’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।