ইসলামী ব্যাংকের বার্ষিক রিপোর্ট চূড়ান্তে আরও তিন মাস সময়
Published: 19th, June 2025 GMT
ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশের বার্ষিক রিপোর্ট চূড়ান্ত করতে আরও তিন মাস সময় দিলো কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ব্যাংকটির বার্ষিক নিরীক্ষা প্রতিবেদন জমার জন্য আগামী ৩১ আগস্ট পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়েছে। গতকাল ব্যাংকটির সঙ্গে বৈঠকের পর আরও তিন মাস সময় দিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।
ব্যাংক কোম্পানি আইন অনুযায়ী, পরবর্তী বছরের এপ্রিল মাসের মধ্যে বার্ষিক আর্থিক প্রতিবেদন চূড়ান্ত করে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে জমা দিতে হয়। তবে এবার অনেক ব্যাংক নির্ধারিত সময়ে নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন চূড়ান্ত করতে না পারায় এক মাস সময় দিয়েছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক। গত ৩১ মে সেই সময়সীমা শেষ হয়। তবে নির্ধারিত সময়ে ইসলামী ব্যাংক প্রতিবেদন চূড়ান্ত করতে পারেনি। এরকম অবস্থায় ব্যাংকটিকে আগস্ট পর্যন্ত সময় দিলো কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংক গত ১৩ মার্চ এক নীতিমালায় বলে দিয়েছে– প্রভিশন সংরক্ষণসহ অন্যান্য ব্যয় মেটানোর জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক হতে ডেফারেল সুবিধা নেওয়া ব্যাংক ২০২৪ সালের জন্য কোন লভ্যাংশ দিতে পারবে না। আর চলতি বছর থেকে কোনো ব্যাংকের খেলাপি ঋণ ১০ শতাংশের বেশি হলে আগামী বছর থেকে আর লভ্যাংশ দিতে পারবে না।
জানা গেছে, আর্থিক বিবরণী চূড়ান্ত করার ক্ষেত্রে এবার আর কোনো শিথিলতা দেখাইনি কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এতে করে অধিকাংশ ব্যাংকের খেলাপি ঋণ বেড়ে দ্বিগুণ, তিনগুণ বা আরও বেশি হয়েছে। গত মার্চ শেষে ব্যাংক খাতের খেলাপি ঋণ চার লাখ ২০ হাজার ৩৩৪ কোটি টাকা বা ২৪ দশমিক ১৩ শতাংশে ঠেকেছে। ২০২৩ সালের ডিসেম্বর শেষে যা ছিলো এক লাখ ৪৫ হাজার ৬৩৩ কোটি টাকা। এর মানে প্রকৃত তথ্য বেরিয়ে আসায় ১৫ মাসে বেড়ে প্রায় তিনগুণ হয়েছে।
জানা গেছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের চূড়ান্ত হিসাবে গত ডিসেম্বর শেষে ইসলামী ব্যাংকের খেলাপি ঋণ দাঁড়িয়েছে ৬৫ হাজার ৭১৬ কোটি টাকা। মোট ঋণের যা ৪২ দশমিক ২২ শতাংশ। ব্যাংকটির মোট ৭৭ হাজার ৫৩৩ কোটি টাকার প্রভিশন সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে। যেখানে রাখতে পেরেছে মাত্র ৭ হাজার ৭১৭ কোটি টাকা। ফলে ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৬৯ হাজার ৮১৬ কোটি টাকা। বিপুল অংকের এই ঘাটতিসহ বার্ষিক প্রতিবেদন চূড়ান্ত করলে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে ব্যাংকটির খরচ বাড়বে। আবার আস্থাহীনতা তৈরি হয়ে আমানত উত্তোলনের চাপ তৈরি হবে। যে কারণে ব্যাংকটির বিবরণী চূড়ান্ত করতে আরও সময় দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ইসল ম ব য ক চ ড় ন ত করত ম স সময় সময় দ ইসল ম ত সময়
এছাড়াও পড়ুন:
ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা: চেরনোবিলের মতো বিপর্যয় হবে না
ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি লক্ষ্য করে বোমাবর্ষণ হলেও চেরনোবিল-ফুকুশিমার মতো বিপর্যয় ডেকে আনবে না বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। তারা বলেছেন, এগুলো মূলত ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ স্থাপনায় কেন্দ্রীভূত হয়েছে।
বিজ্ঞানীরা বিবিসিকে জানিয়েছেন, এ ধরনের স্থাপনায় ক্ষয়ক্ষতি হলেও তা চেরনোবিল বা ফুকুশিমার মতো ভয়াবহ ‘পারমাণবিক দুর্ঘটনা’ ঘটানোর ঝুঁকি তৈরি করে না। এর কারণ হলো সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্রে কোনো পারমাণবিক বিক্রিয়া (নিউক্লিয়ার রিঅ্যাকশন) ঘটে না। পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের রিঅ্যাক্টরে ইউরেনিয়ামের পরমাণু বিভাজিত হয়ে ফিশন প্রতিক্রিয়ার মাধ্যমে তাপ উৎপন্ন করে এবং তাতে তৈরি হয় অতিরিক্ত তেজস্ক্রিয় বর্জ্য।
অন্যদিকে, সমৃদ্ধকরণ স্থাপনাগুলো শুধু ইউরেনিয়ামকে জ্বালানি হিসেবে প্রস্তুত করে, সেখানে শক্তি উৎপাদনের কোনো প্রক্রিয়া চলে না।
ব্যাঙ্গোর বিশ্ববিদ্যালয়ের পারমাণবিক উপাদান বিশেষজ্ঞ সায়মন মিডলবার্গ বলেন, যদি কোনো সমৃদ্ধকরণ স্থাপনায় বোমা মারা হয়, তাহলে ভেতরের ইউরেনিয়াম পরিবেশে ছড়িয়ে পড়তে পারে। তবে এতে কোনো পারমাণবিক প্রতিক্রিয়া হওয়ার আশঙ্কা নেই। কাজেই এ ক্ষতি হবে স্থানীয় পর্যায়ে সীমাবদ্ধ এবং একমাত্র আশপাশের একটি ছোট এলাকা ছাড়া কোনো বিস্তৃত তেজস্ক্রিয় ঝুঁকি তৈরি হবে না।
রয়টার্স জানায়, ইরানের ভূগর্ভে নির্মিত পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর ওপর আঘাত হানতে সক্ষম একমাত্র প্রচলিত অস্ত্র হচ্ছে মার্কিন ‘বাঙ্কার-ব্লাস্টার’ বোমা। সাম্প্রতিক ইরান-ইসরায়লে সংঘাত পরিস্থিতিতে অনেকের মনেই প্রশ্ন, যুক্তরাষ্ট্র যদি আসলেই ইরানের সন্দেহভাজন পারমাণবিক অস্ত্র স্থাপনায় শক্তিশালী বাঙ্কার-ব্লাস্টার বোমা ফেলে, তাহলে এর পরিণতি কী হবে?
বিকিরণ ঝুঁকি বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, এই বোমা মাটির নিচের বাঙ্কার ধ্বংস করে ফেললেও এর ব্যাপক বিকিরণ দূষণের আশঙ্কা কম।
ইরানের ‘ফোরডো ফুয়েল এনরিচমেন্ট প্লান্ট’ নামের এই রহস্যময় স্থাপনা পাহাড়ের গুহায় নির্মিত এবং এখানে ইউরেনিয়াম আইসোটোপ প্রক্রিয়াকরণ করা হয়। এতে এখানে ইউরেনিয়াম সাধারণত ইউরেনিয়াম হেক্সাফ্লুরাইড নামক গ্যাস আকারে থাকে।
এ গ্যাস অণু তুলনামূলক বড় ও ভারী হওয়ায় এটি অনেক দূরে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা কম বলে জানান আলাবামা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য পদার্থবিজ্ঞান বিশেষজ্ঞ এমিলি ক্যাফ্রি। তিনি আরও বলেন, হামলার ফলে বিকিরণ বা দূষণ ওই স্থানেই সীমাবদ্ধ থাকবে।