ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশের বার্ষিক রিপোর্ট চূড়ান্ত করতে আরও তিন মাস সময় দিলো কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ব্যাংকটির বার্ষিক নিরীক্ষা প্রতিবেদন জমার জন্য আগামী ৩১ আগস্ট পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়েছে। গতকাল ব্যাংকটির সঙ্গে বৈঠকের পর আরও তিন মাস সময় দিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।

ব্যাংক কোম্পানি আইন অনুযায়ী, পরবর্তী বছরের এপ্রিল মাসের মধ্যে বার্ষিক আর্থিক প্রতিবেদন চূড়ান্ত করে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে জমা দিতে হয়। তবে এবার অনেক ব্যাংক নির্ধারিত সময়ে নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন চূড়ান্ত করতে না পারায় এক মাস সময় দিয়েছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক। গত ৩১ মে সেই সময়সীমা শেষ হয়। তবে নির্ধারিত সময়ে ইসলামী ব্যাংক প্রতিবেদন চূড়ান্ত করতে পারেনি। এরকম অবস্থায় ব্যাংকটিকে আগস্ট পর্যন্ত সময় দিলো কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

বাংলাদেশ ব্যাংক গত ১৩ মার্চ এক নীতিমালায় বলে দিয়েছে– প্রভিশন সংরক্ষণসহ অন্যান্য ব্যয় মেটানোর জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক হতে ডেফারেল সুবিধা নেওয়া ব্যাংক ২০২৪ সালের জন্য কোন লভ্যাংশ দিতে পারবে না। আর চলতি বছর থেকে কোনো ব্যাংকের খেলাপি ঋণ ১০ শতাংশের বেশি হলে আগামী বছর থেকে আর লভ্যাংশ দিতে পারবে না।

জানা গেছে, আর্থিক বিবরণী চূড়ান্ত করার ক্ষেত্রে এবার আর কোনো শিথিলতা দেখাইনি কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এতে করে অধিকাংশ ব্যাংকের খেলাপি ঋণ বেড়ে দ্বিগুণ, তিনগুণ বা আরও বেশি হয়েছে। গত মার্চ শেষে ব্যাংক খাতের খেলাপি ঋণ চার লাখ ২০ হাজার ৩৩৪ কোটি টাকা বা ২৪ দশমিক ১৩ শতাংশে ঠেকেছে। ২০২৩ সালের ডিসেম্বর শেষে যা ছিলো এক লাখ ৪৫ হাজার ৬৩৩ কোটি টাকা। এর মানে প্রকৃত তথ্য বেরিয়ে আসায় ১৫ মাসে বেড়ে প্রায় তিনগুণ হয়েছে।

জানা গেছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের চূড়ান্ত হিসাবে গত ডিসেম্বর শেষে ইসলামী ব্যাংকের খেলাপি ঋণ দাঁড়িয়েছে ৬৫ হাজার ৭১৬ কোটি টাকা। মোট ঋণের যা ৪২ দশমিক ২২ শতাংশ। ব্যাংকটির মোট ৭৭ হাজার ৫৩৩ কোটি টাকার প্রভিশন সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে। যেখানে রাখতে পেরেছে মাত্র ৭ হাজার ৭১৭ কোটি টাকা। ফলে ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৬৯ হাজার ৮১৬ কোটি টাকা। বিপুল অংকের এই ঘাটতিসহ বার্ষিক প্রতিবেদন চূড়ান্ত করলে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে ব্যাংকটির খরচ বাড়বে। আবার আস্থাহীনতা তৈরি হয়ে আমানত উত্তোলনের চাপ তৈরি হবে। যে কারণে ব্যাংকটির বিবরণী চূড়ান্ত করতে আরও সময় দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ইসল ম ব য ক চ ড় ন ত করত ম স সময় সময় দ ইসল ম ত সময়

এছাড়াও পড়ুন:

গাজীপুরের ছয়টি আসনের ৪টিতে বিএনপির প্রার্থী হলেন যারা

গাজীপুরের ছয়টি সংসদীয় আসনের মধ্যে চারটিতে প্রার্থী ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। সোমবার (৩ নভেম্বর) বিকেলে রাজধানীর গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন।

তিনি জানান, গাজীপুর-১ ও গাজীপুর-৬ আসনের প্রার্থীদের নাম পরে জানানো হবে। 

আরো পড়ুন:

বিএনপির প্রার্থী ঘোষণা হয়নি ঢাকা-২০ আসনে, অপেক্ষায় ৪ নেতা

চাঁপাইনবাবগঞ্জে অভিজ্ঞদের ওপর আস্থা রাখল বিএনপি

গাজীপুর-২ আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন- গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক এম এ মান্নানের ছেলে এম. মঞ্জুরুল করিম রনি। গাজীপুর-৩ আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক অধ্যাপক ডা. রফিকুল ইসলাম বাচ্চু। গাজীপুর-৪ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন দলটির স্থায়ী কমিটির সাবেক সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আ স ম হান্নান শাহের ছেলে শাহ রিয়াজুল হান্নান এবং গাজীপুর-৫ আসনে দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও সাবেক সংসদ সদস্য এ কে এম ফজলুল হক মিলন।

মির্জা ফখরুল বলেন, “যেসব আসনে প্রার্থী ঘোষণা করা হয়নি, সেগুলোর বিষয়ে পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত জানানো হবে। এছাড়া, শরিক দলের জন্য কিছু আসন খালি রাখা হয়েছে।”

এর আগে, দুপুরে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এক জরুরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। প্রায় পাঁচ ঘণ্টাব্যাপী সেই বৈঠকে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে সভাপতিত্ব করেন দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। বৈঠকে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে দলীয় প্রার্থী চূড়ান্তকরণ এবং রাজনৈতিক পরিস্থিতি মোকাবেলায় করণীয় নির্ধারণ করা হয়।

বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আব্দুল মঈন খান, মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু ও ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন।

নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত সময়সূচি অনুযায়ী, আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে প্রকাশ করা হতে পারে আনুষ্ঠানিক তফসিল।

এদিকে প্রার্থী ঘোষণার খবর পেয়ে গাজীপুর মহানগরসহ জেলার বিভিন্ন স্থানে বিএনপি নেতাকর্মীরা আনন্দ মিছিল ও মিষ্টি বিতরণ করেছেন। তবে গাজীপুর-৫ আসনে দলীয় মনোনয়ন পাওয়া জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও সাবেক সংসদ সদস্য এ কে এম ফজলুল হক মিলন তানিয়া দলীয় নেতাকর্মীদের আনন্দ মিছিল করা থেকে বিরত থাকার অনুরোধ করেছেন।

ঢাকা/রফিক/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ