জুলাই শহীদ স্মরণে ‘গণমিনার’ হবে বিজয় সরণিতে
Published: 19th, June 2025 GMT
জুলাই অভ্যুত্থানে সংঘটিত গণপ্রতিরোধ ও আত্মত্যাগের স্মৃতিকে অম্লান রাখতে রাজধানীতে নির্মিত হচ্ছে ‘গণমিনার’। বীরউত্তম মেজর জেনারেল আজিজুর রহমান ও বিজয় সরণির মধ্যবর্তী সবুজ চত্বরে এই মিনার নির্মাণ করা হবে। এই উদ্যোগ বাস্তবায়নে গণমানুষের সম্পৃক্ততার লক্ষ্যে গণচাঁদা সংগ্রহেরও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) মধুর ক্যান্টিনে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এই উদ্যোগের কথা জানান গণমিনার বাস্তবায়ন কমিটির সদস্যরা। বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক মোহাম্মদ আজম বলেন, ‘৫ আগস্টের জয়ের মধ্য দিয়ে এ দেশের মানুষ মুক্তির আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়ন করেছে। এই অভ্যুত্থানে শহীদ হয়েছেন ১ হাজার ৪০০ জন, আহত হয়েছেন হাজার হাজার মানুষ। তাদের স্মরণেই নির্মাণ করা হবে এই গণমিনার। এটি নির্মাণে গণমানুষের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে গণচাঁদা সংগ্রহের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ লক্ষ্যে একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নম্বর ও অন্যান্য বিস্তারিত তথ্য শিগগিরই প্রকাশ করা হবে।’
মিনার নির্মাণের প্রাথমিক পর্যায়ের কাজ ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে জানিয়ে মোহাম্মদ আজম বলেন, আমরা ৫ আগস্টের মধ্যে এর একটি দৃশ্যমান রূপ দিতে চাই। তবে পূর্ণাঙ্গ নির্মাণকাজ চলতে থাকবে।
নির্মাতা ও স্থপতি কামার আহমাদ সাইমন বলেন, ‘লাখো মানুষের অংশগ্রহণে এবং হাজার হাজার শহীদের আত্মত্যাগে সংঘটিত এই অভ্যুত্থানকে আমরা স্মরণে রাখতে চাই মিনার নির্মাণের মাধ্যমে। মিনার একটি পাবলিক প্লেস, যেখানে সম্মান প্রদর্শন করা যায়; এটি জাদুঘরের মতো বদ্ধ নয়। প্রস্তাবিত মিনারটি মূলত দুটি উপাদানে গঠিত হবে– একটি দেয়াল এবং একটি এপিটাফ। এপিটাফে জাতিসংঘ স্বীকৃত ১ হাজার ৪০০ শহীদের নাম, জন্ম-মৃত্যুর সময়, পেশা এবং শহীদ হওয়ার স্থানের তথ্য খোদাই করে সংরক্ষণ করা হবে।’
জানা গেছে, গণমিনার বাস্তবায়ন কমিটি সর্বসম্মতিক্রমে বেশ কিছু কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। এর মধ্যে রয়েছে– ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে জমি বরাদ্দ ও প্রকৌশল সহায়তার আশ্বাস, জুলাই অভ্যুত্থানের শহীদদের পরিচিতি সংরক্ষণ এবং গত ২৫০ বছরের গণপ্রতিরোধ ও লড়াইয়ের ইতিহাস চিত্র ও খোদাইয়ের মাধ্যমে এই স্মারকে তুলে ধরা। কমিটি জানিয়েছে, এই গণমিনার হবে একটি সর্বজনীন স্মরণস্থল, যা রাজনৈতিক বিভাজন অতিক্রম করে সব মত ও পথের মানুষের সম্মিলিত উদ্যোগে নির্মিত হবে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাবির সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সামিনা লুৎফা, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক খোরশেদ আলম, লেখক মোহাম্মদ রোমেল প্রমুখ।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: জ ল ই গণহত য গণম ন র
এছাড়াও পড়ুন:
নোবিপ্রবির আওয়ামীপন্থি কর্মকর্তা স্থায়ী বহিষ্কার
আওয়ামী রাজনীতির সঙ্গে জড়িত নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের সহকারী পরিচালক জিয়াউর রহমান ভূঁইয়াকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে।
বিনা অনুমতিতে কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকায় এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে অশ্লীল ও শিষ্টাচার বহির্ভূত মন্তব্য করায় স্থায়ীভাবে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
আরো পড়ুন:
জুলাই বিরোধিতা: ইবির ৩০ শিক্ষক-কর্মচারী ও ৩৩ ছাত্রলীগ নেতার ‘শাস্তি’
আ.লীগে যোগ দেওয়া মুবিনকে আইনজীবী ফোরাম থেকে বহিষ্কার
সোমবার (৩ নভেম্বর) নোবিপ্রবির রেজিষ্টার (ভারপ্রাপ্ত) মো. তামজীদ হোসাইন চৌধুরী স্বাক্ষরিত এক নোটিশে এ বিষয়ে জানানো হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের রিজেন্ট বোর্ডের ৬৭তম সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
নোটিশে বলা হয়েছে, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের সহকারী পরিচালক জিয়াউর রহমান ভূঁইয়া অননুমোদিতভাবে কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকায় এবং যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমতি ব্যতিত বিদেশে গমন করেন, যা সরকারি কর্মচারী (শৃংখলা ও আপিল ) বিধিমালা ২০১৮ এর ধারা ২(চ) অনুযায়ী ‘পলায়ন’ ।
এছাড়া একজন সরকারি চাকরিজীবী হয়েও রাজনৈতিক মতাদর্শ প্রকাশ করায় ‘নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় আইন ,২০০১’ এর ধারা ৪৭(৫) এর স্পষ্ট লঙ্ঘন।
নোটিশে আরো বলা হয়েছে, গত ২৮ মে আপনাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করা হলে সেটির জবাব যথাযথ হয়নি। পরবর্তীতে তদন্ত কমিটি আপনাকে পুনরায় ৭ জুলাই বিজ্ঞ আইনজীবীর মতামত এবং ৩১ জুলাই প্রেরিত নোটিশের জবাব না দেয়ায় গত ১৩ সেপ্টেম্বর নোবিপ্রবি রিজেন্ট বোর্ডের ৬৭ তম সভার আলোচ্যসূচি-১৮ এর সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তাকে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় আইন ২০০১ এর ৪৭(৮) ধারা অনুযায়ী এবং সরকারি কর্মচারী (শৃংখলা ও আপিল ) বিধিমালা ২০১৮ এর বিধি ৩ (খ) ও (গ) অনুযায়ী নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এর সহকারী পরিচালক (সামরিক বরখাস্ত) পদ থেকে চূড়ান্ত বা স্থায়ীভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে কোনো লেনদেন থাকলে সেটি বিশ্ববিদ্যালয় আইন ও বিধি অনুযায়ী নিষ্পত্তি করা হবে বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
নোয়াখালী-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক একরামুল করিম চৌধুরীর ঘনিষ্ঠ হিসেবে জিয়াউর রহমান ভূঁইয়া আওয়ামী রাজনীতির সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে জড়িত। নিয়মিত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আওয়ামী রাজনীতির বিভিন্ন পোস্ট দিয়ে থাকেন এই কর্মকর্তা।
ঢাকা/শফিউল্লাহ/মেহেদী