টাঙ্গাইলে করোনাভাইরাসের চিকিৎসা নিয়ে শঙ্কা
Published: 20th, June 2025 GMT
টাঙ্গাইলে করোনাভাইরাস পরীক্ষার কিট না থাকায় চিকিৎসা সেবা নিয়ে বিপাকে পড়েছেন রোগীরা। আক্রান্ত হওয়ার তথ্য না জানাসহ চিকিৎসা সেবা নিয়েও শঙ্কায় রয়েছেন জেলার প্রায় ৪২ লাখ মানুষ। স্থানীয়রা বলছেন, রোগী শনাক্ত করতে না পারলে এ সংক্রমণ ফের মহামারি আকার ধারণ করতে পারে। আর চিকিৎসকরা বলছেন, করোনা পরীক্ষার কিটের চাহিদা দেওয়ার পাশাপাশি সার্বিক বিষয়ে কাজ করা হচ্ছে।
জানা যায়, মে মাসে দেশে নতুন করে করোনার প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। তবে জেলার হাসপাতালগুলোতে জ্বর, ঠাণ্ডা ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে আসা রোগীরা পরীক্ষা করাতে না পারায় করোনার চিকিৎসা নিতে পারছেন না। ফলে মহামারির শঙ্কা করছেন টাঙ্গাইলের সাধারণ মানুষ।
টাঙ্গাইল স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, ২০২১ সালের আগস্ট পর্যন্ত টাঙ্গাইলে ১৬ হাজারেরও বেশি মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন। এসব রোগীর মধ্যে ২৫০ জনের মতো মৃত্যুবরণ করে। ২০২১ সালের ২ মে করোনায় আক্রান্তদের জন্য টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে ১০ বেডের আইসিইউ ইউনিট চালু করা হলেও জনবল সংকটে তা প্রায় ৩ বছর ধরে বন্ধ রয়েছে। অযত্ন-অবহেলা আর ধুলাবালুর আস্তরে বেডসহ চিকিৎসা সরঞ্জাম নষ্ট হচ্ছে। স্বাস্থ্য বিভাগ, টাঙ্গাইল মেডিকেল ও জেনারেল হাসপাতালের সমন্বয়ে পুনরায় আইসিইউ ইউনিট চালুর পরিকল্পনা রয়েছে। তবে, যে ট্রমা সেন্টারে আইসিইউ ইউনিট চালু করা হবে তাও অগোছালো রয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘‘টাঙ্গাইলে চিকিৎসা সেবা চালু না হওয়ায় শঙ্কা তৈরি হচ্ছে। অনেকেই পরীক্ষা করানোর আগ্রহ থাকলেও কিট না থাকায় তা পারছেন না। করোনা পরীক্ষার কিট, আইসিইউ ইউনিট চালু ও আক্রান্তদের বিনামূল্যে অক্সিজেন সরবরাহ করা খুবই জরুরী।’’
শহিদুল ইসলাম নামের এক শিক্ষক বলেন, ‘‘ঢাকার খুব কাছের জেলা টাঙ্গাইল। এখানে যদি করোনা পরীক্ষার কিট না থাকে, তাহলে অন্য জেলার কি অবস্থা হবে।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘ইতিপূর্বে করোনার জন্য আইসিইউ ইউনিট চালু হলে সেটিও বন্ধ রয়েছে। রোগী শনাক্ত করতে না পারলে দ্রুত সময়ের মধ্যে করোনা ছড়িয়ে পড়বে।’’
সিরাজুল ইসলাম নামে টাঙ্গাইলের আরেকজন বাসিন্দা বলেন, ‘‘এখনই সময় করোনা প্রতিরোধ করার। সেখানে যদি শনাক্ত করাই না যায়, তাহলে কিভাবে সচেতন করা সম্ভব হবে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে করোনা প্রতিরোধে শহরে মাইকিং ও লিফলেট বিতরণ করতে হবে।’’
আইনজীবী আব্দুল মালেক বলেন, ‘‘ভৌগলিক দিক থেকে দেশের মধ্যাঞ্চল টাঙ্গাইলে প্রায় ৪২ লাখ মানুষের বসবাস। সেখানে করোনা পরীক্ষার কিটসহ চিকিৎসা ব্যবস্থা চালু না থাকা দুঃখজনক। করোনা সংক্রমণ রোধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার পাশাপাশি প্রতিরোধে জনসচেতনার জন্য মাইকিং ও লিফলেট বিতরণ করতে হবে।’’
টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক খন্দকার সাদিকুর রহমান বলেন, ‘‘করোনা পরীক্ষার কিট না থাকায় রোগী শনাক্ত সম্ভব হচ্ছে না। এছাড়াও চিকিৎসার বিভিন্ন সরঞ্জামও সার্ভিসিং এর চেষ্টা চলছে।’’
সিভিল সার্জন ডা.
ঢাকা/কাওছার/টিপু
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর পর ক ষ র ক ট র জন য কর ন র
এছাড়াও পড়ুন:
বিদেশি বিনিয়োগ বেড়েছে
বাংলাদেশে বৈদেশিক প্রত্যক্ষ বিনিয়োগ (এফডিআই) গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী এক বছরে ১৯ দশমিক ১৩ শতাংশ বেড়েছে। এর মধ্যে দিয়ে দেশে বিনিয়োগের অনুকূল পরিবেশের প্রতি আন্তর্জাতিক আস্থার প্রতিফলন দেখা গেছে।
বিশ্বব্যাংকের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, সম্প্রতি যেসব দেশে গণঅভ্যুত্থান ঘটেছে, সেসব দেশে পরবর্তী এক বছরে এফডিআই উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। এর মধ্যে শ্রীলঙ্কায় ২০২২ সালের পর এফডিআই কমেছে ১৯.৪৯ শতাংশ, চিলিতে ২০১৯ সালের পর কমেছে ১৫.৬৮ শতাংশ, সুদানে ২০২১ সালের পর ২৭.৬০ শতাংশ, ইউক্রেনে ২০১৪ সালের পর ৮১.২১ শতাংশ, মিশরে ২০১১ সালের পর ১০৭.৫৫ শতাংশ এবং ইন্দোনেশিয়ায় ১৯৯৮ সালের পর ১৫১.৪৯ শতাংশ কমেছে। এই ধারাবাহিক হ্রাসের মধ্যে বাংলাদেশে এফডিআইর ১৯.১৩ শতাংশ বৃদ্ধির চিত্র বিশেষভাবে নজরকাড়া।
বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী বলেছেন, “বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় গুণ হলো—শত প্রতিকূলতা সত্ত্বেও অর্থনীতিকে পুনরায় চালু করার অদ্ভুত ক্ষমতা। এই পরিসংখ্যান তার দারুন একটা প্রতিফলন। সাধারণত, গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে বিদেশি বিনিয়োগ কমে যায়, কিন্তু আমরা উল্টা দেখছি। সঠিক নীতি নির্ধারণ, বাংলাদেশ ব্যাংক, এনবিআরসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থার আন্তরিকতা এবং প্রাইভেট সেক্টরের অদম্য স্পৃহা কারণে এটি সম্ভব হয়েছে। আমরা সব সময় বিনিয়োগকারীদের সাহায্য করার চেষ্টা করেছি। সব সমস্যার সমাধান হয়নি, তবে সদিচ্ছার কোনো ত্রুটি ছিল না। শিগগিই সারা বছরের একটি আমলনামা (রিপোর্ট কার্ড) প্রকাশ করা হবে।”
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ সালে বিদেশি বিনিয়োগ ছিল ৪৮৮ দশমিক ৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, ২০২২ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৬৭০ দশমিক ৭ মিলিয়ন ডলারে। ২০২৩ সালে বিনিয়োগের পরিমাণ হয় ৯২৪ দশমিক ৪ মিলিয়ন ডলার, তবে ২০২৪ সালে কিছুটা কমে দাঁড়ায় ৬৭৬ দশমিক ৬ মিলিয়ন ডলারে। ২০২৫ সালের প্রথম ছয় মাসে বিদেশি বিনিয়োগ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৯২ দশমিক ৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে।
অর্থনীতিবিদদের মতে, বর্তমান বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে এই ধারা বজায় থাকা অত্যন্ত ইতিবাচক। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, দীর্ঘমেয়াদি নীতি সহায়তা ও অবকাঠামোগত উন্নয়নের মাধ্যমে বাংলাদেশ ভবিষ্যতে আরো বড় পরিসরে বৈদেশিক বিনিয়োগ আকর্ষণ করতে পারবে বলে মনে করছেন তারা।
ঢাকা/নাজমুল/রফিক