ইসরায়েল বিনা উসকানিতে গত শুক্রবার ভোর রাতে ইরানে হামলা করে। এ হামলায় ইরানের বেশ কয়েকজন পরমাণু বিজ্ঞানী, উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তা এবং বেসামরিক লোকজন নিহত হন। এরপরেই পাল্টা আক্রমণ শুরু ইরান। ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর (আইআরজিসি) অ্যারোস্পেস ফোর্স অপারেশন ট্রু প্রমিজ-৩-এর অংশ হিসেবে হামলা শুরু করে। গতকাল পর্যন্ত ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ১৩ দফায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইরান। খবর তাসনিম নিউজের

সামরিক বিশ্লেষকেরা বলছেন, ইরানের এ হামলাগুলোর বিশেষ ১০টি বৈশিষ্ট্য ইসরায়েলি আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে একপ্রকার অকার্যকর করে দিয়েছে।

ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলো হলো-

১.

ইরান রাতে ও দিনে উভয় সময়েই আক্রমণ চালায়। আক্রমণের এমন অনিয়মিত সময় ইসরায়েলকে প্রস্তুতি নিতে অক্ষম করে তুলেছে।

২. ছলনামূলক অভিযান ও বাস্তব আক্রমণের সংমিশ্রণ ইসরায়েলি বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে বিভ্রান্ত করেছে।

৩. ইরান আক্রমণে বিভিন্ন ধরণের অস্ত্র ব্যবহার করেছে। এর মধ্যে রয়েছে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র এবং আত্মঘাতী ড্রোন।

৪. ইরানি ক্ষেপণাস্ত্রগুলো ‘থাড’ থেকে শুরু করে ‘আয়রন ডোম’ ও ডেভিড’স স্লিং পর্যন্ত সব আধুনিক বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় প্রবেশ করেছে। এর ফলে ইসরায়েলিরা এ সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে, যে কিছুই তাদের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দিতে পারে না।

৫. ইরান মাঝে মধ্যে বিভিন্ন ধরনের এবং অপ্রত্যাশিত ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়েছে।

৬. ইরানের সশস্ত্র বাহিনী দখলকৃত অঞ্চলগুলোতে বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে থাকে, যা ইসরায়েলিদের অবাক করে দেয়।

৭. ইরানের প্রতিশোধমূলক হামলা কেবল একটি নির্দিষ্ট এলাকায় সীমাবদ্ধ নয় এবং দখলকৃত ফিলিস্তিনি অঞ্চলের উত্তরতম থেকে দক্ষিণতম বিন্দু পর্যন্ত সব অঞ্চলকে অন্তর্ভুক্ত করে।

৮. ইরানের কাছে লক্ষ্যবস্তুর একটি ডেটা ব্যাংক রয়েছে, যা সামরিক স্থাপনা, তেল শোধনাগার এবং গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোসহ বিভিন্ন স্থানে আঘাত করতে সক্ষম করে।

৯. ইরানের সশস্ত্র বাহিনী বারবার ইহুদিবাদীদের সতর্ক করে দিয়েছে, অধিকৃত অঞ্চলের কোথাও আর নিরাপদ নেই।

১০. ইরান এখনও পর্যন্ত তার দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্রের বেশ কয়েকটি নতুন প্রজন্ম উন্মোচন করেনি। তাই, ইসরায়েলি শাসনব্যবস্থার ওপর ক্রমাগত বিস্ময় প্রকাশের কৌশল আপাতত অব্যাহত থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ইসর য় ল ইসর য় ল ব যবস থ

এছাড়াও পড়ুন:

ভেনেজুয়েলার সঙ্গে যুদ্ধে জড়াবে না যুক্তরাষ্ট্র: ট্রাম্প

ভেনেজুয়েলার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধের সম্ভাবনাকে উড়িয়ে দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিকোলাস মাদুরোর দিন ফুরিয়ে এসেছে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন। খবর বিবিসির। 

ভেনেজুয়েলার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র যুদ্ধ করতে যাচ্ছে কিনা জানতে চাইলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট সিবিএস নিউজের ৬০ মিনিটসকে বলেন, “আমার সন্দেহ রয়েছে। আমার মনে হয় না। কিন্তু তারা আমাদের সঙ্গে খুব খারাপ আচরণ করছে।”

আরো পড়ুন:

ক্যারিবীয় জাহাজে আবারো যুক্তরাষ্ট্রের হামলা, নিহত ৩

নাইজেরিয়ায় হামলার হুমকি ট্রাম্পের

ক্যারিবীয় অঞ্চলে মাদক চোরাচালানের অভিযোগে নৌযানগুলোতে মার্কিন হামলা অব্যাহত থাকার মধ্যে ট্রাম্পের এই মন্তব্য এলো। ট্রাম্প প্রশাসনের দাবি, যুক্তরাষ্ট্রে মাদকের প্রবাহ বন্ধ করার জন্য এই হামলা প্রয়োজনীয়।

ট্রাম্প এমন অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন যে, ক্যারিবীয় সাগরে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক অভিযান মাদক বন্ধ করার লক্ষ্যে নয়, বরং ট্রাম্প বিরোধী মাদুরোকে ক্ষমতাচ্যুত করার জন্য। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, এটি ‘অনেক কিছু’ সম্পর্কে।

বিবিসির মার্কিন নিউজ পার্টনার সিবিএস নিউজ জানিয়েছে, সেপ্টেম্বরের শুরু থেকে ক্যারিবীয় ও পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগরে মার্কিন হামলায় কমপক্ষে ৬৪ জন নিহত হয়েছে।

সম্প্রতি ফ্লোরিডার মার-এ-লাগোতে এক বক্তব্যে ট্রাম্প বলেন, “মার্কিন হামলায় আপনি যেসব নৌযানে বিস্ফোরণ হতে দেখেন, তার প্রতিটিতে অন্তত ২৫ হাজার মাদকদ্রব্য ধ্বংস হয়। এগুলো যুক্তরাষ্ট্রে মাদক সরবরাহের জন্য দায়ী।”

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র স্থলপথে ভেনেজুয়েলায় হামলার পরিকল্পনা করছে কিনা, এই প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প তা উড়িয়ে দিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে বলেন, “আমি এটা বলতে চাই না যে আমি এটা করব...আমি ভেনেজুয়েলার সাথে কী করব, আমি তা করব কিনা, তা আমি বলব না।”

ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট মাদুরো ইতিমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ‘অঘোষিত যুদ্ধ’ শুরু করার অভিযোগ তুলেছেন। অন্যদিকে কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট গুস্তাভো পেট্রোর অভিযোগ, নৌযানগুলোতে হামলা চালানোর মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র লাতিন আমেরিকায় ‘আধিপত্য বিস্তার’ করার চেষ্টা করছে।

ট্রাম্প জানান, তার সরকার ‘সারা বিশ্ব থেকে’ সন্ত্রাসীদের যুক্তরাষ্ট্রে ‘আসতে’ দেবে না।

তিনি বলেন, “তারা কঙ্গো থেকে আসে, তারা সারা বিশ্ব থেকে আসে, তারা আসছে, কেবল দক্ষিণ আমেরিকা থেকে নয়। তবে বিশেষ করে ভেনেজুয়েলা- খারাপ। তাদের গ্যাং আছে।”

মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্দিষ্ট করে ভেনেজুয়েলার ‘ট্রেন দে আরাগুয়ার’ নাম উল্লেখ করেন। তিনি এটিকে ‘বিশ্বের সবচেয়ে খারাপ গ্যাং’ হিসেবে অভিহিত করেন।

জানুয়ারিতে হোয়াইট হাউজে ফিরে আসার পর থেকে, ট্রাম্প প্রশাসন মেক্সিকো এবং ল্যাটিন আমেরিকার বেশ কয়েকটি মাদক পাচারকারী সংগঠন ও অপরাধী গোষ্ঠীকে ‘সন্ত্রাসী সংগঠন’ হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে। এর মধ্যে রয়েছে ভেনেজুয়েলার ট্রেন দে আরাগুয়া এবং কার্টেল অব দ্য সানস, যেটি যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগ অনুযায়ী প্রেসিডেন্ট মাদুরো ও তার ঘনিষ্ঠ সামরিক কর্মকর্তারা পরিচালনা করে। তবে কারাকাস সরকার এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ