পিরোজপুরে আয়োজিত শিল্প ও বাণিজ্য মেলায় লটারির নামে জুয়ার অভিযোগ তুলেছেন স্থানীয় লোকজন। দ্রুত সময়ের মধ্যে এই কর্মকাণ্ড বন্ধের দাবি জানিয়েছেন তারা। গতকাল শুক্রবার জুমার নামাজের পর এ দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। 
পিরোজপুর কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ থেকে ‘তৌহিদি জনতা’র ব্যানারে বের হওয়া মিছিলটি শহরের বিলাশ চত্বরে পথসভায় মিলিত হয়। 
জানা গেছে, ১৮ জুন শহরতলির রানিপুরে শুরু হয়েছে শিল্প ও বাণিজ্য মেলা। জেলা ব্যবসায়ী সমিতি মাসব্যাপী এ মেলার আয়োজক। অভিযোগ উঠেছে, মেলায় টিকিট বিক্রির নামে জুয়া চলছে। 
শুক্রবারের পথসভায় বক্তারা এমন জুয়া বন্ধের দাবি জানিয়ে বলেন, সারাদেশ অস্থিতিশীল অবস্থায় আছে। এরই মধ্যে পিরোজপুরে মেলার নামে জুয়ার আসর বসিয়ে শিশু-কিশোর, যুবকসহ সাধারণ মানুষের পকেট কাটার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। কয়েক দিনের মধ্যেই এইচএসসি পরীক্ষা শুরু। এই সময়ে মেলা ও জুয়া চলতে থাকলে পরীক্ষার্থীদের পড়াশোনায় ক্ষতি হবে। পাশাপাশি তেমনি বেড়ে যাবে চুরি-ছিনতাই। 
কর্মসূচিতে বক্তব্য দেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আখতারুজ্জামান শেখ রাহাত, কমল একাডেমির সভাপতি মাইনুল আহসান মুন্না, জেলা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এম ডি বদিউজ্জামান শেখ রুবেল, স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক এমাদুল হক মাসুদ, জেলা ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইমরান গাজী ইমু প্রমুখ।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, প্রতিদিন পিরোজপুরের উপজেলাগুলোসহ পাশের বাগেরহাট ও ঝালকাঠি জেলায় কয়েকশ অটোরিকশা দিয়ে মাইকিং করে এই মেলার টিকিট বিক্রি হচ্ছে। ঘোষণা দেওয়া হচ্ছে মোটরসাইকেল, স্বর্ণের চেইন, গরু, পালঙ্ক-খাটসহ বিভিন্ন লোভনীয় পুরস্কারের। চক্রটি দিনে প্রায় ১৫-১৬ লাখ টাকার লটারির টিকিট বিক্রি করছে। মেলা প্রাঙ্গণসহ শহরের বিভিন্ন স্থানে বসে বিক্রি করা হচ্ছে টিকিট। প্রতি রাত ১০টার পরে মেলা প্রাঙ্গণে ‘উঠাও বাচ্চা’ হিসেবে পরিচিত এ লটারির ড্র অনুষ্ঠিত হয়। 
কয়েকজন অংশগ্রহণকারীর অভিযোগ, লটারিতে ঘোষণা দেওয়া ৫৯টি পুরস্কারের মধ্যে দুয়েকটি দামি পুরস্কার। অন্য সব পুরস্কারই ৫০০-১০০০ টাকার মধ্যে। এ ছাড়া মাঝেমধ্যে লটারির ড্র আয়োজনও করছে চক্রটি।
এ বিষয়ে পিরোজপুর জেলা ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আহসানুল  কবির বলেন, জেলার শিল্প ও বাণিজ্য বৃদ্ধির জন্যই এই মেলা। সেখানে টিকিট বিক্রির নামে কোনো জুয়ার আয়োজন বরদাশত করা হবে না। মেলায় এমন আয়োজন বন্ধ করে দেওয়া হবে। ইতোমধ্যে এ নিয়ে ইভেন্ট আয়োজনকারীদের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। লটারির নামে জুয়া বন্ধ করার আশ্বাস দেন তিনি।
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: প রস ক র

এছাড়াও পড়ুন:

গণঅভ্যুত্থান দিবসের অনুষ্ঠানে জুলাই যোদ্ধাদের দুই গ্রুপের ধস্তাধস্তি

চাঁপাইনবাবগঞ্জে গণঅভ্যুত্থান দিবসের অনুষ্ঠানে ‘জুলাই যোদ্ধাদের’ দুই গ্রুপের মধ্যে কথা কাটাকাটি ও ধস্তাধস্তি হয়েছে। 

মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) বেলা ১২টার দিকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের কালেক্টরেট চত্বরে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপাারের সামনেই এ ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের চাঁপাইনবাবগঞ্জ ইউনিটের সাবেক সদস্য সচিব সাব্বির হোসেন জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবসের অনুষ্ঠানের মঞ্চে বক্তৃতা করতে গেলে আরেক ছাত্রনেতা ইসমাইল হোসেন সিরাজীর পক্ষের লোকজন তাকে ‘চাঁদাবাজ’ ও ‘ভুয়া’ বলে দুয়োধ্বনি দিতে থাকেন। এ সময় সাব্বিরের পক্ষের লোকজনও তাদের উদ্দেশে দুয়োধ্বনি দেন। একপর্যায়ে উভয় পক্ষ ধস্তাধস্তিতে জড়ায়। জেলা প্রশাসক মো. আব্দুস সামাদ ও জেলা পুলিশ সুপার মো. রেজাউল করিম পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন। পুলিশ সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনলে আবার শুরু হয় অনুষ্ঠান।

ছাত্রনেতা ইসমাইল হোসেন সিরাজী সাংবাদিকদের বলেছেন, “অনুষ্ঠানে আমি বাধা দেওয়ার কেউ না। আমি বাধা দিইনি। জুলাই যোদ্ধাদের কাউকে দাওয়াত দেওয়া হয়নি। তাদের কোনো মূল্যায়নই করা হয়নি। এই অকৃতজ্ঞতার প্রতিবাদ জানিয়েছি সচেতন নাগরিক হিসেবে।”

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সদস্য সচিব সাব্বির হোসেন বলেছেন, “জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবসের অনুষ্ঠানটি জেলা প্রশাসনের। এটি আমাদের নিজস্ব কোনো অনুষ্ঠান নয়। এখানে দাওয়াত দেওয়ার বিষয়ে আমরা কেউ না। এই অনুষ্ঠানে আমাদের কোনো দায়িত্বই ছিল না। শুধু তাই নয়, আমাকে বক্তৃতার জন্য ডাকা হবে, এটা আমি নিজেও জানতাম না।”

চাঁপাইনবাবগঞ্জের পুলিশ মো. রেজাউল করিম বলেছেন, “মঞ্চে জুলাই যোদ্ধাদের দুই গ্রুপের মধ্যে কথা কাটাকাটি ও ধাক্কাধাক্কি হয়েছে। আমরা পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেছি। ওই দুই গ্রুপের মধ্যে পূর্ববিরোধ ছিল। এ নিয়েই তাদের ঝামেলা হয়েছে। কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পর আবারও অনুষ্ঠান শুর হয়।”

এ বিষয়ে কথা বলতে জেলা প্রশাসক মো. আব্দুস সামাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি সাড়া দেননি।

ঢাকা/শিয়াম/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ