যৌতুক না পেয়ে খাটের পায়ায় বেঁধে গৃহবধূকে নির্যাতন
Published: 22nd, June 2025 GMT
নোয়াখালীর হাতিয়ায় যৌতুকের জন্য খাটের পায়ায় স্ত্রীর হাত-পা বেঁধে বিশেষ অঙ্গে মরিচের গুড়া দিয়ে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে স্বামী ছালা উদ্দিনের (৪৫) বিরুদ্ধে। শনিবার বিকেলে অসুস্থ গৃহবধূকে পুলিশের সহযোগিতায় স্বজনরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।
এর আগে শুক্রবার রাতে উপজেলার সোনাদিয়া ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের মাইজচরা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত সালেহ উদ্দিন সোনাদিয়া মাইজচরার বাসিন্দা নুরুল হকের ছেলে। তিনি পেশায় ইট-ভাটার শ্রমিক সর্দার।
ঘটনার বিবরণে জানা গেছে, শুক্রবার রাতে অভিযুক্ত ছালা উদ্দিন শ্বশুর বাড়ি থেকে টাকা এনে দেওয়ার জন্য তার স্ত্রীকে চাপ দেন। এতে দুজনের মধ্যে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে ক্ষিপ্ত হয়ে ছালা উদ্দিন তার মা-বাবাসহ সবাইকে ঘর থেকে বের করে দিয়ে খাটের পায়ার সঙ্গে স্ত্রীর হাত-পা বাঁধেন। এর পর বেদম প্রহার করে তার বিশেষ অঙ্গে মরিচের গুড়া দিয়ে দেন। এতে স্ত্রীর চিৎকারে প্রতিবেশীরা এসে তাকে উদ্ধার করেন। সকালে সংবাদ পেয়ে ভুক্তভোগীর বাবা-মা গিয়ে হাসপাতালে আনার চেষ্টা করলে তাদেরকেও বাধা দেওয়া হয়। পরে পুলিশের সহায়তায় তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।
ভুক্তভোগী গৃহবধূর বাবা আবদুল খালেক বলেন, ‘দীর্ঘদিন থেকে আমার মেয়েকে নির্যাতন করে আসছে তার স্বামী। বিভিন্ন ধাপে তাকে প্রায় লক্ষাধিক টাকা দেওয়া হয়। এ বিষয়ে একাধিকবার গ্রাম্য সালিশ বৈঠকও হয়েছে। গতকাল আবারো আমার মেয়ের ওপর এ অমানুষিক নির্যাতন করে।’
হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা.
জাহাজমারা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আনিসুর রহমান জানান, সংবাদ পেয়ে পুলিশের একটি টিম পাঠিয়ে নির্যাতিতাকে উদ্ধার করে হাতিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার
রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।
গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।
সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।
ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’