ধর্ষণ মামলা মিথ্যা প্রমাণিত হাওয়ায় বাদী শ্রীঘরে
Published: 23rd, June 2025 GMT
পটুয়াখালীতে দুমকীতে ধর্ষণ মামলা মিথ্যা প্রমাণিত হওয়ায় মামলার বাদীকে পাঠিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে মামলা থেকে অব্যাহতি পেয়েছেন মো. মোক্তার মৃধা ও মেহেদী হাসান ওরফে রাসেল হাওলাদার। রোববার বিকেলে পটুয়াখালীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক নীলুফার শিরিন এ আদেশ দেন।
মোক্তার মৃধা ও মেহেদী হাসানের বাড়িও একই ইউনিয়নের দক্ষিণ মুরাদিয়া গ্রামে।
মামলা সূত্রে জানা যায়, প্রতিবন্ধী মেয়েকে ধর্ষণের অভিযোগে ২০২৩ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর তার মা দুমকী থানায় ধর্ষণ মামলা করেন। আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, মোক্তার মৃধা ও মেহেদী হাসান দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় ঘরে একা পেয়ে বাদীর প্রতিবন্ধী মেয়েকে ধর্ষণ করেন। কিন্তু পুলিশি তদন্ত, মেডিকেল রিপোর্ট ও ডিএনএ রিপোর্টে ধর্ষণের কোনো আলামত না পাওয়ায় মামলাটি মিথ্যা প্রমাণিত হয়। ফলে আদালত আসামিদের মামলার থেকে অব্যাহতি দেন।
এ দিকে মেহেদী হাসান ওরফে রাসেল হাওলাদার মানহানি ও হয়রানির অভিযোগে বাদীসহ সাতজনের বিরুদ্ধে ২০২৪ সালের ৯ সেপ্টেম্বর মামলা করেন। মামলার অন্য আসামিরা হচ্ছে- স্বামী ও দুই মেয়ে, ইউপি সদস্য নাসির হাওলাদার, চৌকিদার মিজানুর রহমান এবং আরও এক নারী। ওই মামলায় ধর্ষণ মামলার বাদী রোববার আদালতে আত্মসমর্পণ করলে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
এ ব্যাপারে বাদীর স্বামী বলেন, ‘আমার স্ত্রীকে কেন কারাগারে পাঠানো হয়েছে, তা আমি বলব কেমন করে। সেটা আদালতই ভালো বলতে পারবেন।’
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
আইএমএফের দুই কিস্তির ১৩০ কোটি ডলার মিলবে দু-এক দিনের মধ্যে
বাংলাদেশের জন্য চলমান ঋণ কর্মসূচির চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তির অর্থ ছাড়ের প্রস্তাব অনুমোদনে করেছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে সংস্থাটির নির্বাহী পর্ষদের সভায় এ অনুমোদন করা হয়। আগামী দু-এক দিনের মধ্যে একসঙ্গে দুই কিস্তির ১৩০ কোটি মার্কিন ডলার বাংলাদেশ পাবে বলে অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।
২০২৩ সালের ৩১ জানুয়ারি আইএমএফ বাংলাদেশের জন্য সাড়ে তিন বছর মেয়াদি ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ প্রস্তাব অনুমোদন করে। বাংলাদেশের সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতা বজায় রাখা, ঝুঁকিতে থাকা ও পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে সুরক্ষা দেওয়া এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক ও পরিবেশসম্মত প্রবৃদ্ধি অর্জনে সহায়তা দিতে ঋণ কর্মসূচি অনুমোদন করা হয়। চলতি হিসাবের ঘাটতি বেড়ে যাওয়া, টাকার দরপতন ও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে যাওয়ায় ওই সময় আইএমএফের কাছে ঋণ চেয়েছিল তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার।
আইএমএফের ঋণ কর্মসূচির মধ্যে বর্ধিত ঋণ সহায়তা (ইসিএফ) ও বর্ধিত তহবিল সহায়তা (ইএফএফ) বাবদ ঋণ রয়েছে ৩৩০ কোটি ডলার। আর রেজিলিয়েন্স অ্যান্ড সাসটেইনেবিলিটি ফ্যাসিলিটি (আরএসএফ) বাবদ রয়েছে ১৪০ কোটি ডলার। আরএসএফ হলো আইএমএফের একটি নতুন তহবিল, যেখান থেকে এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশকেই প্রথম ঋণ দেওয়া হচ্ছে।
২০২৩ সালের ২ ফেব্রুয়ারি আইএমএফের কাছ থেকে প্রথম কিস্তির ৪৭ কোটি ৬৩ লাখ ডলার পায় বাংলাদেশ। একই বছরের ডিসেম্বরে দ্বিতীয় কিস্তির ৬৮ কোটি ১০ লাখ ডলার এবং ২০২৪ সালের জুনে তৃতীয় কিস্তির ১১৫ কোটি ডলার পেয়েছে। তিন কিস্তিতে আইএমএফের কাছ থেকে এখন পর্যন্ত ২৩১ কোটি ডলার পেয়েছে বাংলাদেশ। বাকি আছে ২৩৯ কোটি ডলার। ১৩০ কোটি পাওয়া গেলে ১০৯ কোটি ডলার বাকি থাকবে। তবে এ কর্মসূচির সঙ্গে নতুন করে প্রায় ৭৬ কোটি যুক্ত হওয়ার কথা রয়েছে।
আইএমএফের ঋণের চতুর্থ কিস্তির অর্থ গত বছরের ডিসেম্বরে পাওয়ার কথা থাকলেও শর্ত পরিপালন নিয়ে, বিশেষত টাকা-ডলার বিনিময় হার বাজারের ওপর ছেড়ে দেওয়া নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়। ফেব্রুয়ারিতে অর্থ মন্ত্রণালয় জানায়, চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তি একসঙ্গে ছাড়ের সিদ্ধান্ত হয়েছে। এপ্রিলে আইএমএফের একটি প্রতিনিধিদল শর্ত পালনের অগ্রগতি পর্যালোচনায় ঢাকায় আসে। তবে সমঝোতা না হওয়ায় চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তির অর্থ ছাড় আটকে যায়। এর পর ওয়াশিংটনে ২১ থেকে ২৬ এপ্রিল অনুষ্ঠিত আইএমএফ-বিশ্বব্যাংকের বসন্তকালীন বৈঠকে এ বিষয়ে আরও আলোচনা হয়।
সবশেষ গত মাসে এ নিয়ে আইএমএফের সঙ্গে কয়েকটি ভার্চুয়াল বৈঠক করে বাংলাদেশ ব্যাংক। ১২ মে দুই পক্ষ চূড়ান্ত সমঝোতা হয় এবং বিনিময় হার বাজারভিত্তিক করে বাংলাদেশ। ১৪ মে আইএমএফ জানায়, দুই পক্ষের মধ্যে সমঝোতা হয়েছে এবং পর্ষদ সভার অনুমোদন সাপেক্ষে ঋণের অর্থ ছাড় করা হবে জুনে।