‘মব’ তৈরি করে সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদাকে হেনস্তায় ঢাকা মহানগর উত্তর স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি শেখ ফরিদ হোসেন নেতৃত্ব দিয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। ভিডিও ফুটেজ ও তথ্য–উপাত্ত বিশ্লেষণ করে পুলিশ ফরিদসহ ছয়জনকে শনাক্ত করেছে। তাঁরা সবাই ঢাকা মহানগর উত্তর স্বেচ্ছাসেবক দলের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত।

পুলিশ এ ঘটনায় আজ মঙ্গলবার বাদী হয়ে উত্তরা পশ্চিম থানায় একটি মামলা করেছে। মামলায় ফরিদসহ ছয়জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। মামলায় অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদেরও আসামি করা হয়েছে। এর আগে গত সোমবার রাতে হানিফ মিয়া নামের একজনকে সেনাবাহিনী আটক করে উত্তরা পশ্চিম থানা–পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে। তিনি উত্তরা পশ্চিম থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্যসচিব। তাঁকে মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আজ আদালতে পাঠানো হয়েছে।

পুলিশ জানায়, মামলায় এজাহারনামীয় অন্য আসামিদের মধ্যে স্বেচ্ছাসেবক দলের তুরাগ থানার সভাপতি দুলাল, উত্তরা পশ্চিম থানার আহ্বায়ক সেলিম, উত্তরা পূর্ব থানার যুগ্ম আহ্বায়ক কাইয়ুম এবং দলের কর্মী মুজাম্মেল হোসেন ঢালী। ভিডিওতে দেখা গেছে, নূরুল হুদাকে জুতা দিয়ে মারছিলেন মুজাম্মেল হোসেন ঢালী।

উত্তরা পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাফিজুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, মামলায় কে এম নূরুল হুদাকে জুতা দিয়ে মারধর, তাঁর মানহানি এবং বাসায় অনধিকার প্রবেশের অভিযোগ আনা হয়েছে। তিনি বলেন, আইন–শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য ছাড়া নূরুল হুদার বাসায় অনধিকার প্রবেশ করে মব তৈরি করা হয়েছিল। মামলার এজাহারে এসব বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে। যাঁদের আসামি করা হয়েছে, তাঁরা সবাই ঘটনাস্থলে ছিলেন।

রাজধানীর উত্তরার বাসায় ঢুকে গত রোববার একদল লোক নূরুল হুদাকে বের করে আনেন, জুতার মালা পরিয়ে হেনস্তা করে পুলিশে সোপর্দ করেন। দেখা গেছে, ঘটনার সময় সেখানে পুলিশও উপস্থিত ছিল।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার

রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।

গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।

সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।

ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ