সম্প্রতি আফ্রিকা অঞ্চলে পৃথিবীর পৃষ্ঠ থেকে আসা হৃৎস্পন্দনের মতো সংকেত শনাক্ত করেছেন যুক্তরাজ্যের সাউদাম্পটন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা। বিজ্ঞানীদের ধারণা, পৃথিবীর টেকটোনিক প্লেটের গভীর আবরণ থেকে উত্তপ্ত পদার্থের ঊর্ধ্বমুখী প্রবাহের কারণে এই সংকেত তৈরি হতে পারে।

বিজ্ঞানীদের তথ্যমতে, ইথিওপিয়ার আফার অঞ্চলের গভীরে যেখানে তিনটি টেকটোনিক প্লেট মিলিত হয়েছে, সেখানে এই সংকেত পাওয়া গেছে। পৃথিবীর পৃষ্ঠের অভ্যন্তরে থাকা ম্যাগমা ভূত্বককে নিচে থেকে আঘাত করায় এই সংকেত তৈরি হতে পারে। এই ধাক্কার কারণে ধীরে ধীরে মহাদেশ ভাগ হয়ে যাচ্ছে। একটি নতুন মহাসাগর তৈরি হচ্ছে বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা।

সাউদাম্পটন বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থ সায়েন্সের অধ্যাপক টম গারনন বলেন, রাসায়নিক সংকেত থেকে হৃৎস্পন্দনের মতো স্পন্দন শোনা যায়। স্পন্দনের মাত্রা থেকে বোঝা যাচ্ছে কোন স্পন্দন কত শক্তিশালী।

সোয়ানসি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানী এমা ওয়াটস বলেন, ‘আমরা দেখেছি আফার এলাকার নিচের আবরণটি স্থির নয়। এখানকার স্পন্দন স্বতন্ত্র রাসায়নিক স্বাক্ষর বহন করে। আংশিকভাবে গলিত আবরণের ভেতরের এই ঊর্ধ্বমুখী স্পন্দন ওপরের ফাটলে প্রভাব তৈরি করে। পৃথিবীর অভ্যন্তর ও পৃষ্ঠের মধ্যে মিথস্ক্রিয়ার জন্য এই স্পন্দন গুরুত্বপূর্ণ।

বিজ্ঞানীরা আফার অঞ্চল ও মেইন ইথিওপিয়ান রিফ্ট জুড়ে ১৩০টির বেশি আগ্নেয়গিরির শিলার নমুনা সংগ্রহ করার পাশাপাশি ভূত্বক ও আবরণের গঠন থেকে নতুন এক মডেল তৈরি করেছেন। বিজ্ঞানীদের ধারণা, পৃথিবীর পৃষ্ঠে স্পন্দনের প্রভাবে আফ্রিকা মহাদেশটি বিভক্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে একটি নতুন সমুদ্র অববাহিকা তৈরি হচ্ছে। এর ফলে ভবিষ্যতে আফ্রিকায় নতুন মহাসাগর তৈরি হতে পারে।

সূত্র: এনডিটিভি

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

জিবের রং শরীরের যেসব লক্ষণ প্রকাশ করে

সুস্থ জিব হয় হালকা গোলাপি। দুই পাশে সমান থাকে। অনেক সময় হালকা সাদা আবরণ থাকতে পারে। এটি কেরাটিন নামক প্রোটিন, যা খাবার খাওয়ার সময় ঘর্ষণ থেকে জিবকে রক্ষা করে। জিবের ওপর ছোট ছোট দানা বা ফোঁটা থাকে, যাকে বলা হয় প্যাপিলা। এগুলো স্পর্শ ও তাপমাত্রা অনুভব ও খাবার গিলতে সাহায্য করে।

যেসব পরিবর্তন চিন্তার কারণ

বাদামি বা কালো জিব

হঠাৎ যদি দেখেন জিবের রং বাদামি বা কালো, সে ক্ষেত্রে কারণ খতিয়ে দেখা দরকার। জিবে প্যাপিলা অস্বাভাবিকভাবে বড় হয়ে ব্যাকটেরিয়া জমে এমন হয়।

অ্যান্টিবায়োটিক বা অ্যান্টিহিস্টামিন সেবন বা ধূমপান থেকেও এমন হতে পারে।

এ ছাড়া মুখ শুকিয়ে যাওয়া, অতিরিক্ত চা–কফি পান, খারাপ ওরাল হাইজিনের কারণে অনেক সময় এ রকম হতে পারে।

ঘন সাদা আবরণ বা দাগ

অনেক সময় জিবে ঘন সাদা আবরণ বা দাগ পড়ে। এটি ছত্রাক সংক্রমণের কারণে হয়। শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা দুর্বল হলে ছত্রাক হয়।

যেমন ডায়াবেটিস, এইচআইভি, অ্যান্টিবায়োটিক বা স্টেরয়েড–জাতীয় ওষুধ সেবন, ক্যানসার বা ক্যানসারের চিকিৎসা। স্টেরয়েড ইনহেলার ব্যবহার করলেও হতে পারে।

এ ধরনের সাদা দাগ মুখগহ্বর ক্যানসারের লক্ষণও হতে পারে।

আরও পড়ুনপাকিস্তানের সাত্তার বক্স যেভাবে আইনি লড়াইয়ে বিশ্বখ্যাত স্টারবাকসকে টেক্কা দিল৪ ঘণ্টা আগে

লাল বা হলুদ ব্যথাযুক্ত ঘা

জিবে লাল বা হলুদ ব্যথাযুক্ত ঘা সাধারণত ক্যাঙ্কার সোর, ওরাল থ্রাস বা সংক্রমণের কারণে হয়।

তবে দীর্ঘস্থায়ী হলে মুখের ক্যানসারের লক্ষণও হতে পারে।

উজ্জ্বল লাল জিব

অনেক সময় জিব উজ্জ্বল লাল দেখায়। ভিটামিন বি১২–এর ঘাটতির কারণে বা স্কারলেট ফিভারে এ রকম হতে পারে।

যদি জিবের লাল দাগগুলো ব্যথাহীন হয় এবং এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় সরে যায়, তাহলে এটিকে জিওগ্রাফিক টাঙ বলা হয়। এটি ক্ষতিকর নয়।

অনেক সময় আয়রন খনিজের ঘাটতির কারণে এ রকম হতে পারে।

জিব পরিষ্কার রাখার নিয়ম

জিব পরিষ্কার রাখা জরুরি। দাঁত ব্রাশের সময় জিবও ব্রাশ করতে হবে।

জিব বের করে পেছন থেকে সামনে—মাঝখান, বাঁ ও ডান দিকে—তিনবার টেনে ব্রাশ করতে হবে।

মিষ্টি, চিনি ইত্যাদি খাওয়ার পর কুলি করতে হবে।

ইনহেলার ব্যবহার করার পরও কুলি করা উচিত।

ধূমপান, পান, জর্দা, সাদাপাতা, গুল ইত্যাদি জিবের জন্য খুব ক্ষতিকর।

আরও পড়ুনদলিলে লেখা এসব শব্দের অর্থ জেনে রাখুন, নাহলে পড়তে পারেন আইনি জটিলতায়১২ ঘণ্টা আগেকখন চিকিৎসক দেখাবেন

জিবে অস্বাভাবিক পরিবর্তন হলে চিকিৎসক দেখানো প্রয়োজন। যেমন জিবে অস্বাভাবিক রং, ঘা বা দাগ, জ্বর, গলাব্যথা বা দীর্ঘস্থায়ী সমস্যা।

চিকিৎসক পরীক্ষা করে সঠিক কারণ শনাক্তের চেষ্টা করবেন।

সমস্যা পেলে প্রয়োজনীয় ওষুধ দেবেন।

প্রয়োজনে জিবের বায়োপসি করারও প্রয়োজন হতে পারে।

আরও পড়ুনআপনি কি হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকিতে আছেন? বোঝার উপায় জানালেন চিকিৎসক১ ঘণ্টা আগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জিবের রং শরীরের যেসব লক্ষণ প্রকাশ করে