দীর্ঘ সাত বছর ধরে নিখোঁজ। বৃদ্ধ মা-বাবা ধরেই নিয়েছিলেন তাদের ছেলে মারা গেছেন। কিন্তু সম্প্রতি বাংলাদেশে খোঁজ মিলেছে সেই নিখোঁজ ভারতীয় তরুণের। 

নিখোঁজ ওই তরুণের নাম গোলাম মোস্তফা (২৯)। তিনি পশ্চিমবঙ্গের মালদা জেলার হরিশ্চন্দ্রপুর ব্লক এলাকার বাসিন্দা।

পরিবার সূত্রে জানা গেছে, হঠাৎ করেই বাড়ি থেকে নিখোঁজ হন মোস্তফা। অনেক খোঁজাখুঁজি করেও সন্ধান মেলেনি তার। সম্প্রতি বাংলাদেশি কয়েকজন নাগরিকের সৌজন্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় গোলাম মোস্তফার ছবি ছড়িয়ে পড়ে। সেই ছবি নজরে আসে তরুণের গ্রামবাসীদের। ছড়িয়ে পড়া ছবির নিচে লেখা ছিল, গোলাম মোস্তফা বাংলাদেশের দিনাজপুরের একটি জায়গায় আটক রয়েছেন। অনুমান করা হচ্ছে, তিনি কোনো পুনর্বাসন কেন্দ্রে কিংবা সংশোধনাগারে রয়েছেন। বিষয়টি জানানো হয় গোলাম মোস্তফার পরিবারকে। এর পরই গোলাম মোস্তফাকে ভারতে ফেরাতে উদ্যোগ নেয় তার পরিবার ও গ্রামবাসী। ঘটনা জানানো হয় স্থানীয় প্রশাসনকে। প্রশাসনের তরফে যোগাযোগ করা হয় কলকাতাস্থ বাংলাদেশ ডেপুটি হাই-কমিশনে। হাই কমিশন সূত্রের খবর, তরুণকে ফেরাতে আপাতত কোনো জটিলতা নেই। তবে ওই তরুণ কিভাবে বাংলাদেশে যান সেটা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ভারতের স্থানীয় প্রশাসনকে যুবকের মানসিক ভারসাম্যহীন হওয়ার তথ্য সঠিক কী না সেই বিষয় যাচাই করে দেখার আবেদন জানানো হয়েছে। 

সোমবার প্রশাসনের নির্দেশ মেনে ওই যুবকের বাড়িতে যায় স্থানীয় পুলিশ-প্রশাসন। স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য আবদুল হাইয়ুম বলেন, ‘বিষয়টি সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে জানতে পারি। তারপর আমরা শনাক্ত করি ছেলেটি আমাদের গ্রামের। স্থানীয় একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সঙ্গে কথা হয়েছে। তারা বাংলাদেশের সঙ্গে যোগাযোগ করবে। অবিলম্বে তাকে কীভাবে দেশে ফেরানোর ব্যবস্থা করা যায় সেই বিষয়ে কথা চলছে।’ 

এ দিকে তরুণের বৃদ্ধ বাবা শেখ আনারুল বলেন, ‘এত বছর পর ছেলের খোঁজ পাব ভাবতে পারিনি। হঠাৎ করেই আমার ছেলে মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পড়েছিল। তবে বাংলাদেশ থেকে তাকে কীভাবে ফেরাব সেটা নিয়ে এখন চিন্তায় পড়েছি। আশা করব, প্রশাসন আমাদের পাশে রয়েছে।’

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: তর ণ র

এছাড়াও পড়ুন:

মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার

রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।

গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।

সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।

ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ