যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস অঙ্গরাজ্যে হঠাৎ বন্যায় একটি খ্রিষ্টান গ্রীষ্মকালীন ক্যাম্প নিখোঁজ দুই ডজনের বেশি শিশুকে খুঁজে বের করতে প্রাণপণে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে উদ্ধারকারীরা। অঙ্গরাজ্যের স্যান অ্যান্টোনিও শহরে তুমুল বৃষ্টির কারণে নদীর পানি বেড়ে হঠাৎ বন্যা হয়। এতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৩২ জনে দাঁড়িয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ।

স্থানীয় সময় শুক্রবার অঙ্গরাজ্যের স্যান অ্যান্টোনিও শহরে প্রবল বর্ষণের ফলে সেখানকার গুয়াদালুপ নদীর পানি প্রায় নয় মিটার (২৯ ফুট) বেড়ে যায়। গ্রীষ্মকালীন ওই ক্যাম্পটি নদীর ধারেই ছিল। ওই ক্যাম্পে ৭৫০ শিশু অবস্থান করছিল।

কের কাউন্টির পুলিশ কর্মকর্তা ল্যারি লেইথা শনিবার সাংবাদিকদের জানান, বন্যায় যারা মারা গেছেন, তাদের মধ্যে ১৪ জনই শিশু। শনিবার সকালে বন্যার পানি সরে যেতে শুরু করলে ওই অঞ্চল থেকে প্রায় ৮০০ জনকে সরিয়ে নেওয়া হয়।

কের কাউন্টির কাছের শহর কারভিলের নগর ব্যবস্থাপক ডালটন রাইস জানিয়েছেন, ক্যাম্পে অংশগ্রহণকারী ২৭ জন এখনো নিখোঁজ রয়েছেন।

জাতীয় আবহাওয়া পরিষেবা (এনডব্লিউএস) জানিয়েছে, কের কাউন্টিতে বন্যার জরুরি অবস্থা মূলত শেষ হয়ে এসেছে। তবে তারা আরও ভারী বৃষ্টির সতর্কতা দিয়েছে এবং বন্যা পর্যবেক্ষণ চালু আছে।

ডালটন রাইস বলেন, উদ্ধার ও তল্লাশি অভিযানে সহায়তার জন্য এক হাজারেরও বেশি উদ্ধারকর্মী ঘটনাস্থলে আছেন। হেলিকপ্টার ও ড্রোন ব্যবহার করা হচ্ছে। কিছু মানুষকে গাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। সহায়তার জন্য মার্কিন কোস্টগার্ডের গার্ডের হেলিকপ্টারও এসেছে।

শনিবার সকালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, কেন্দ্রীয় সরকার বন্যা মোকাবিলায় রাজ্য ও স্থানীয় কর্মকর্তাদের সঙ্গে একযোগে কাজ করছে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত বিভিন্ন ভিডিওতে দেখা গেছে, বন্যার পানিতে ঘরবাড়ি ও গাছপালা উপড়ে গেছে। স্থানীয় আবহাওয়া অফিসের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার রাতে কের এলাকায় ১২ ইঞ্চি বৃষ্টিপাত হয়েছে। এটি এলাকাটিতে বছরে মোট বৃষ্টির তিন ভাগের এক ভাগ।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

কোনাবাড়ীতে পানিতে ভাসছিল মাদ্রাসার দুই ছাত্রের লাশ

গাজীপুর সিটি করপোরেশনের কোনাবাড়ীতে ডোবায় গোসল করতে নেমে পানিতে ডুবে মাদ্রাসার দুই ছাত্রের মৃত্যু হয়েছে। রোববার সকালে মেট্রো থানার দেওয়ালিয়া দির্ঘীর পাড় গ্রামে এই ঘটনা ঘটে।

মারা যাওয়া দুই শিশু হলো- রংপুর জেলার মিঠাপুকুর থানার বড় মির্জাপুর শঠিবাড়ী গ্রামের আকমলের ছেলে মো. জুনায়েদ (১২)। সে বাবা-মার সঙ্গে দক্ষিণ দেওয়ালিয়াবাড়ী এলাকায় ইউনুস মিয়ার বাড়িতে ভাড়া থেকে বাগানবাড়ি চার রাস্তার মোড় আল ইসলামিয়া ক্যাডেট মাদ্রাসায় পঞ্চম শ্রেণিতে পড়াশোনা করতো। অন্যজন, সিরাজগঞ্জ জেলার শাহজাদপুর থানার তাতলা গ্রামের মো. শামীমের ছেলে মো. আব্দুল মোমিন (১২)। সে তার বাবা-মার সঙ্গে এনায়েতপুরের মামুনের বাড়িতে ভাড়া থেকে একই  মাদ্রাসায় পড়াশোনা করতো।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, সকালে তারা দুইজন ওই ডোবায় গোসল করতে নামে। সাঁতার না জানায় তারা ডোবার মাঝখানে গেলে তলিয়ে যায়। বেলা ১১টার দিকে ডোবার পাশেই ঈদগাহ মাঠে ফুটবল খেলছিলো ছোট্ট ছোট্ট শিশুরা। হঠাৎ শামীম নামে এক শিশু তাদের দুইজনের মরদেহ পানিতে ভাসতে দেখে চিৎকার শুরু করে। পরে আশেপাশের লোকজন এসে ডোবা থেকে ওই দুই শিশুর মরদেহ মাটিতে তোলা হয়।

মো. রুবেল নামে স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, ছোট্ট শিশুদের চিৎকারে এগিয়ে এসে দেখি ডোবায় দুই শিশুর মরদেহ ভাসছে। পরে আমিসহ কয়েকজন পানিতে নেমে তাদের মরদেহ ওপরে তুলি। এর মধ্যে ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ওই দুই শিশুর পরিবারের সদস্যরা এসে তাদের সন্তানদের শনাক্ত করে।

গাজীপুর মেট্রোপলিটন কোনাবাড়ী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. রফিকুল ইসলাম জানান, পরিবারের লিখিত আবেদনের প্রেক্ষিতে বিনা ময়নাতদন্তে মরদেহ দাফনের আবেদন করা হয়েছে। পরে ওই দুই শিশুর মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ