Samakal:
2025-09-17@21:27:07 GMT

কার্যকর পদক্ষেপ কাম্য

Published: 7th, July 2025 GMT

কার্যকর পদক্ষেপ কাম্য

চাউলের বাজারে নূতন করিয়া উত্তাপ কেবল উদ্বেগজনক নহে, বিস্ময়করও বটে। শনিবার প্রকাশিত সমকালের শীর্ষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, শুক্রবারও রাজধানীর খুচরা বাজারে সরু চাউল ৭৫ হইতে ৮৫ টাকা, মোটা চাউল ৫৫ হইতে ৫৮ টাকা কেজি দরে বিক্রয় হইয়াছে। সরকারি বাণিজ্য ও বিপণন সংস্থা টিসিবি প্রতিবেদনও বলিতেছে, গত এক মাসে সরু চাউলের দর ৫ শতাংশ এবং মাঝারি ও মোটা চাউলের দর ৯ শতাংশের অধিক বৃদ্ধি পাইয়াছে। দেশের সিংহভাগ মানুষের প্রধান খাদ্যপণ্যের এমন ঊর্ধগতি সাধারণ ভোক্তার জন্য ভোগান্তিকর। চাউলের দরে এই উল্লম্ফন এমন সময়ে ঘটিয়াছে যখন বিশেষত ক্ষুদ্র ও মধ্যম পর্যায়ের কৃষকের গোলায় ধান নাই। বরং তাহাদিগকেই চাউল ক্রয় করিতে হইতেছে। অর্থাৎ এই মূল্য বৃদ্ধির কারণে কৃষক দুইভাবে ক্ষতিগ্রস্ত– একদিকে স্ব-উৎপাদিত পণ্য অপেক্ষাকৃত কম মূল্যে বিক্রয় করিয়াছেন, অন্যদিকে অধিক দরে চাউল ক্রয় করিতেছেন।

আমরা জানি, দেশের ধান উৎপাদক সিংহভাগই ক্ষুদ্র ও মধ্যম পর্যায়ের কৃষক। এই প্রকারে ক্ষতিগ্রস্ত হইতে থাকিলে তাহাদের সর্বস্বান্ত হইতে অধিক সময়ের প্রয়োজন কি? উহার নেতিবাচক প্রভাব পড়িতে পারে জাতীয় খাদ্য নিরাপত্তার উপর। ইহা পরিহাসজনক, ফলন উত্তম হইলে সাধারণত সরবরাহ বৃদ্ধি পায়। ফলে বাজারে দর হ্রাস পায়। কিন্তু এইবার দেখা যাইতেছে বিপরীত প্রবণতা। দেশের মোট চাউলের প্রায় ৫৫ শতাংশ বোরো মৌসুমে উৎপাদন হয়, যাহা মাত্র কিছুদিন পূর্বে শেষ হইয়াছে এবং এই মৌসুমে রেকর্ড ২ কোটি ১৪ লক্ষ টন চাউল উৎপাদন হইয়াছে। বিশেষজ্ঞরা বলিয়া থাকেন, সরকারি পর্যায়ে খাদ্যের মজুত পর্যাপ্ত হইলে তাহার ইতিবাচক প্রভাব বাজারে পড়ে। খাদ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য বলিতেছে, এখন দেশের বিভিন্ন গুদামে খাদ্য মজুত আছে সাড়ে ১৭ লক্ষ টনের অধিক। ধান ও চাউলের এই মজুত গত বৎসর অপেক্ষা অধিক। অথচ টিসিবির হিসাবমতে, চাউলের দর গত এক বৎসরের ব্যবধানে গড়ে ১৫ শতাংশ বৃদ্ধি পাইয়াছে। এই সকল অসংগতি সম্পর্কে সরকারের সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলি সম্যক অবহিত হইলেও সেইগুলি দূরীকরণে কার্যকর পদক্ষেপ পরিলক্ষিত হইতেছে না। চাউলের বাজারের অস্থিরতা নিয়ন্ত্রণে সরকার কিছু উদ্যোগ গ্রহণ করিয়াছে, সত্য। বাজারে প্রতিযোগিতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে চাউল আমদানিতে কর-শুল্ক হ্রাস করিয়াছে। কিন্তু চাউল এমন পণ্য, আন্তর্জাতিক পর্যায়ে যাহার ক্রয়-বিক্রয় প্রক্রিয়ায় বৃহৎ পুঁজির নির্দিষ্ট ব্যবসায়ী ভিন্ন অন্যদের প্রবেশাধিকার সীমিত। অন্যদিকে, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ও জেলা খাদ্য বিভাগ চাউলের বাজারে কখনও কখনও অভিযান পরিচালনা করে বটে; তাহা কেবল খুচরা পর্যায়ে। চাউলকলের ফটক কিংবা বেসরকারি গুদামে নজরদারি দুর্বল। ফলে চাউলের বাজারের উত্তাপ হ্রাসে সরকারের সীমিত উদ্যোগ সামান্যই ফল বহিয়া আনিতে পারে। 

চাউলের এই অস্বাভাবিক দর বৃদ্ধির দায় বরাবরের ন্যায় চাপিয়াছে চাউলকল মালিকগণের উপর; যদিও তাহাদের ভাষ্য– বাজার নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রয়োজনীয় মজুত করিবার সক্ষমতা তাহাদের নাই, যাহা আছে করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলির। বিশ্লেষকরাও বলিতেছেন, করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলি ঈদের পূর্বে কৃষকের নিকট হইতে কম মূল্যে ধান ক্রয় করিয়া মজুত করিয়াছে এবং এখন কৃত্রিম সংকট দেখাইয়া মূল্য বৃদ্ধি করিতেছে। চাউলকল কিংবা করপোরেট– দায়ী যাহারাই হউক, সংশ্লিষ্ট দপ্তরের তদারকি ও নজরদারির অভাবেই যে উহা ঘটমান, তাহাতে সন্দেহ নাই। ফলস্বরূপ বিপাকে পড়িতেছে যে প্রান্তিক ভোক্তা ও উৎপাদক, উহাও সমান সত্য। চাউলের বাজার লইয়া এই সকল বিশ্লেষণ ও আলোচনাও নেহাত কম হয় নাই। এখন কার্যকর পদক্ষেপ কাম্য।  

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: চ উল র ব জ র কর য় ছ পর য য় সরক র উৎপ দ

এছাড়াও পড়ুন:

জকসুসহ তিন দফা দাবি মেনে নিল প্রশাসন, ৩২ ঘণ্টা পর অনশন ভাঙলেন শিক্ষার্থীরা

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জকসু) নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা ও সম্পূরক বৃত্তিসহ আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের তিন দফা দাবি মেনে নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রশাসনের আশ্বাসে ৩২ ঘণ্টা পর অনশন ভেঙে কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নিয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।

বুধবার রাত দশটার দিকে প্রশাসনের পক্ষে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক দাবি মেনে নেওয়ার ঘোষণা দিলে আন্দোলন প্রত্যাহার করে নেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় অনশনরত শিক্ষার্থীদের ফলের রস খাইয়ে অনশন ভাঙানো হয়। শিক্ষার্থীদের অনশন ভঙ্গ করান করান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক ও সিন্ডিকেট সদস্য বিলাল হোসাইন।

এর আগে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক শেখ গিয়াসউদ্দিন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, আগামী ২৭ নভেম্বর জকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সেই মোতাবেক নির্বাচনের রূপরেখাও ঘোষণা করা হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, আগামী জানুয়ারি থেকে আবাসন ভাতা পাবেন শিক্ষার্থীরা। সেই সঙ্গে বৃত্তির জন্য উপযুক্ত শিক্ষার্থীদের নভেম্বরের মধ্যে যাচাই-বাছাই করার কাজ শেষ করা হবে।

অনশনকারী শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে প্রক্টর মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক বলেন, শিক্ষার্থীদের দাবি অনুযায়ী ২৭ নভেম্বরের আগেই কেন্দ্রীয় পাঠাগারে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণযন্ত্র স্থাপন করা হবে। ক্যাফেটেরিয়ার খাবারের মানোন্নয়নে প্রশাসন কাজ করবে।

আরও পড়ুনতিন দাবিতে ২৪ ঘণ্টা ধরে ৪ শিক্ষার্থীর অনশন, দুজন অসুস্থ১২ ঘণ্টা আগে

এ সময় অনশনে বসা উদ্ভিদ বিজ্ঞানের বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী এ কে এম রাকিব বলেন, আমাদের যৌক্তিক দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে প্রশাসন। জকসুর রোডম্যাপ ঘোষণা করা হয়েছে। আবাসন ভাতার জন্য প্রতিশ্রুত সময়ও দিয়েছে প্রশাসন। কেন্দ্রীয় পাঠাগারে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণযন্ত্র স্থাপনের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। এ কারণে আমরা অনশন ভেঙে আন্দোলন প্রত্যাহার করেছি।

সতর্ক করে দিয়ে এ কে এম রাকিব আরও বলেন, যদি প্রশাসন ঘোষিত সময়ের মধ্যে আমাদের দাবিগুলো পূরণ করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে সমস্ত দায় মাথায় নিয়ে সম্পূর্ণ প্রশাসনকে পদত্যাগ করতে হবে।

এর আগে তিন দফা দাবি আদায়ে গত মঙ্গলবার বেলা দুইটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাশহীদ রফিক ভবনের নিচে অনশন শুরু করেন চারজন শিক্ষার্থী। সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের (বাগছাস) পক্ষ থেকে অনশন কর্মসূচি শুরুর কথা জানানো হয়। অনশনে বসা চার শিক্ষার্থীর মধ্যে তিনজন বাগছাসের নেতা।

আরও পড়ুনজকসু নির্বাচনের রূপরেখা ঘোষণা, ভোট ২৭ নভেম্বর২ ঘণ্টা আগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ