ফেনীতে টানা বৃষ্টিপাতের ফলে শহরে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। মঙ্গলবার সকাল ৯টা পর্যন্ত চব্বিশ ঘণ্টায় ২৩৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। যা এ বছরের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত বলে জানিয়েছে ফেনী আবহাওয়া অফিস।

গতকাল থেকে শুরু হওয়া টানা বৃষ্টির কারণে শহরের শহীদ শহীদুল্লাহ কায়সার সড়ক, ডাক্তারপাড়া, মিজান রোড, কলেজ রোড, একাডেমি রোড, রামপুর শাহীন একাডেমি এলাকা, পাঠানবাড়ি এলাকা, নাজির রোড, পেট্রোবাংলাসহ বিভিন্ন এলাকার সড়কে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে।

এলাকাবাসী অভিযোগ করে জানান, শহরের ড্রেনেজ ব্যবস্থা ভালো না থাকায় পানি নামছে ধীর গতিতে।
 
টানা বৃষ্টিপাত ও জলাবদ্ধতার কারণে স্কুল, কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থী, চাকরিজীবী ও খেটে খাওয়া শ্রমজীবীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ দুর্ভোগে পড়েছেন। সড়কে রিকশাসহ অন্যান্য যানবাহন কম থাকায় পয়ে হেঁটে লোকজনকে গন্তব্যে যেতে হচ্ছে।

এদিকে সীমান্তবর্তী তিন নদী মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনীয়াতে পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে ফেনী পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো.

আবুল কাশেম জানান নদীর পানি এখনও বিপৎসীমার নিচে রয়েছে।

ফেনী আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মজিবুর রহমান জানান, ফেনীতে সোমবার থেকে বৃষ্টিপাত শুরু হয়ে এখন পর্যন্ত চলছে। মঙ্গলবার সকাল নয়টা পর্যন্ত ২৩৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। যা এবছরের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত।

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

ভুল রেলস্টেশনে নামা কিশোরীকে ‘ধর্ষণ’, যুবক গ্রেপ্তার

মায়ের সঙ্গে সিলেট থেকে ট্রেনে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে নিজ বাড়িতে ফিরছিল এক কিশোরী (১৭)। সিলেট থেকে ভানুগাছ স্টেশন পর্যন্ত আসনবিহীন টিকিট কাটেন তারা। ট্রেনের বগিতে ভিড় থাকায় ভুল করে কুলাউড়া জংশন স্টেশনে নেমে পড়ে কিশোরী। কিন্তু মাকে খুঁজে না পেয়ে তার সন্দেহ হয়। তবে তার মধ্যেই ট্রেন ছেড়ে দেয়।

বাড়িতে ফিরতে পরবর্তী ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করছিল সেই কিশোরী। তখন আক্তার আলী (২৮) নামের এক গাড়িচালকের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। ওই ব্যক্তি তাকে বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে তাকে ধর্ষণ করেন বলে অভিযোগ। এমনকি কিশোরীকে জিম্মি করে তার স্বজনের কাছে ২০ হাজার টাকা দাবি করেন তিনি।

এ ঘটনায় কিশোরীর পরিবারের পক্ষ থেকে মঙ্গলবার কুলাউড়া রেলওয়ে থানায় ধর্ষণের অভিযোগে মামলা হয়েছে। পরে আক্তার আলীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। আক্তারের বাড়ি সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার কায়স্থ গ্রামে। তিনি পেশায় প্রাইভেটকারের চালক। কুলাউড়া রেলস্টেশন থেকে প্রতিদিন সিলেটে ভাড়ায় যাত্রী পরিবহন করতেন।

মামলার সংক্ষিপ্ত এজাহার ও কিশোরীর স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কিশোরীর পরিবার হতদরিদ্র। সিলেটের হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এক স্বজনকে দেখে গত ৩০ জুন মায়ের সঙ্গে সে বাড়িতে ফিরছিল। ট্রেনে ভিড়ের মধ্যে মাকে হারিয়ে ফেলে। ভুলে কুলাউড়া রেলস্টেশনে নামার পর গাড়িচালক আক্তার আলী তাকে বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার কথা বলেন। এতে কিশোরী রাজি হয়ে গাড়িতে ওঠেন। আক্তার তাকে সিলেটের একটি আবাসিক হোটেলে নিয়ে যান। সেখানে সেনা সদস্য পরিচয় দিয়ে বিয়ের আশ্বাস দেন এবং একপর্যায়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে তাকে ধর্ষণ করেন।

এজাহারে বলা হয়, নিখোঁজের সময় কিশোরীর কাছে একটি মোবাইল ফোন ছিল। সিলেটে যাওয়ার পর আক্তার তার মোবাইল ফোনটি কেড়ে নেন। ওই মোবাইল ফোনে থাকা কিশোরীর এক আত্মীয়ের সঙ্গে তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ইমোতে কথা বলেন। তখন তিনি নিজেকে সেনা সদস্য পরিচয় দিয়ে জানান, কিশোরী তাঁর হেফাজতে আছে। তাকে ফেরত পেতে বিকাশে ২০ হাজার টাকা পাঠাতে বলেন। পরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহযোগিতায় সোমবার রাতে নগরের কদমতলী এলাকা থেকে কিশোরীকে উদ্ধারের পাশাপাশি আক্তার আলীকে গ্রেপ্তার করা হয়।

কুলাউড়া রেলওয়ে থানার উপপরিদর্শক (এসআই) দিপক দেওয়ান বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আক্তার আলী অপরাধ স্বীকার করেছেন। তাকে মৌলভীবাজারের আদালতে পাঠানো হয়েছে। আর শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য কিশোরীকে মৌলভীবাজারের একটি হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ