যুক্তরাষ্ট্রের ঘোষিত শুল্ক আলোচনার ভিত্তিতে ঠিক হবে: অর্থ উপদেষ্টা
Published: 8th, July 2025 GMT
বাংলাদেশের পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের ঘোষিত শুল্ক চূড়ান্ত নয় বলে জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেছেন, ওয়ান টু ওয়ান নিগোসিয়েশনের মাধ্যমে এটা ঠিক হবে। এ লক্ষ্যে আগামীকাল ৯ জুলাই ভোরে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধির দপ্তরের (ইউএসটিআর) কর্মকর্তাদের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য প্রতিনিধিদের বৈঠক হবে।
বাংলাদেশি রপ্তানি পণ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ৩৫ শতাংশ পাল্টা শুল্ক আরোপ করে গতকাল বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে চিঠি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এরপর এ নিয়ে আজ মঙ্গলবার সচিবালয়ে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘ওখানে (যুক্তরাষ্ট্রে) আমাদের বাণিজ্য উপদেষ্টা আছেন। উনি তিন দিন আগে গেছেন। আজকেই বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের দল যাচ্ছে। ৮ তারিখে মিটিং। ওদের ৮ তারিখ মানে আগামীকাল বুধবার খুব ভোরবেলা। মিটিংয়ের পর আমরা বুঝতে পারব।’ তিনি বলেন, ‘ইউএসটিআরের সঙ্গে আলাপ করবেন উনি (বাণিজ্য উপদেষ্টা)। কালকের পর আপনারা বুঝতে পারবেন।’
মিটিংয়ে কি কোনো উন্নতি হওয়ার আশা করা যায়? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের উত্তরে সালেহউদ্দিন বলেন, ‘আমরা আশা করি। যাই হোক, সেটার পরিপ্রেক্ষিতে আমরা অন্য পদক্ষেপগুলো নেব।’
ভিয়েতনাম কমাতে পারলে বাংলাদেশ কেন সেভাবে কমাতে পারল না—এই প্রশ্নের জবাবে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘এটা ঠিক যে আমাদের ঘাটতি মাত্র ৫ বিলিয়ন ডলার। ভিয়েতনামের ১২৫ বিলিয়ন ডলার। ওখানে কিন্তু ওরা মোটামুটি ছাড় দিতে পারে। কিন্তু আমাদের এত কম বাণিজ্যঘাটতি, তাই এত শুল্ক দেওয়ার তো ন্যায্যতা থাকে না।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: য ক তর ষ ট র র
এছাড়াও পড়ুন:
ওয়াশিংটনের পাল্টা শুল্ক কার্যকরের সময় পেছানোয় স্বস্তিতে ঢাকা
বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশের ওপর ওয়াশিংটনের আরোপিত পাল্টা শুল্ক কার্যকর করার সময়সীমা তিন সপ্তাহ পিছিয়ে দেওয়ায় কিছুটা স্বস্তি বোধ করছে ঢাকা। এ শুল্ক প্রত্যাহার বা কমাতে চুক্তি স্বাক্ষরের জন্য চলমান দরকষাকষিতে বাড়তি সময় পাওয়া যাবে বলে মনে করছেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের কাছে কোন পণ্যে শুল্কমুক্ত সুবিধা চায় তার তালিকাসহ প্রস্তাবিত চুক্তির 'এনেক্সার ডকুমেন্ট' বাংলাদেশকে দেওয়ার কথা থাকলেও সোমবার বিকেল পর্যন্ত তা পাওয়া যায়নি বলে সমকালকে নিশ্চিত করেছেন বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান। এছাড়া প্রস্তাবিত চুক্তি নিয়ে দরকষাকষির অংশ হিসেবে মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধির (ইউএসটিআর) সঙ্গে বাংলাদেশের একটি বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। ইউএসটিআরের পক্ষ থেকে তা স্থগিত করে আগামী বুধবার সভার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। তাতে সম্মতি দিয়েছে বাংলাদেশ।
এ প্রসঙ্গে বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান সমকালকে বলেন, ‘চুক্তি নিয়ে ৯ জুলাই যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আরও একটি মিটিং হবে। যুক্তরাষ্ট্র থেকে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দিন ও জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান সভায় যোগ দেবেন। আমি ঢাকা থেকে অনলাইনে যুক্ত হবো’।
ইউএসটিআরের সঙ্গে চলমান নেগোসিয়েশনে সরাসরি অংশ নিতে বাণিজ্য সচিবকে যুক্তরাষ্ট্র যাওয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা। সোমবার বাণিজ্য সচিবের যুক্তরাষ্ট্র যাওয়ার কথা থাকলেও ইউএসটিআর থেকে চুক্তির ডকুমেন্ট না পাওয়ায় যেতে পারেননি তিনি।
সচিব বলেন, ‘৩ জুলাইয়ের বৈঠকে এই ডকুমেন্ট পাঠানোর বিষয়ে সমঝোতা হয়েছে। বৈঠকে আরও জানানো হয় যে, স্বল্পোন্নত দেশগুলোর (এলডিসি) যুক্তরাষ্ট্র আলাদা কিছু ভাবছে, এ জন্যই হয়তো ডকুমেন্ট পাঠাতে দেরি হচ্ছে। তারা ডকুমেন্ট পাঠানোর পর দুই-একদিনের মধ্যে বাংলাদেশের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করে আমি যুক্তরাষ্ট্রে যাব।’
তিনি বলেন, 'ওখানে যাওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্র যদি আমাদের কাছে গাড়ির ওপর শুল্কমুক্ত সুবিধা চায়, সেখানে বসে তো আমরা কোনো সিদ্ধান্ত দিতে পারবো না। কারণ জাপানের সঙ্গে আমাদের ইকোনমিক পার্টনারশিপ এগ্রিমেন্ট চুক্তি স্বাক্ষরের নেগোসিয়েশন চলছে। জাপান তাদের গাড়ির ওপর শুল্কমুক্ত সুবিধার ক্ষেত্রেও আমরা রাজি হইনি। যুক্তরাষ্ট্র আমাদের কাছে কী প্রস্তাব দেবে এবং তার পরিপ্রেক্ষিতে সরকারের সিদ্ধান্ত নিয়ে যেতে হবে।'
বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে গত ২ এপ্রিল বিভিন্ন দেশের ওপর ‘পাল্টা শুল্ক’ আরোপ করেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বাংলাদেশের পণ্যের ওপর অতিরিক্ত শুল্ক ঘোষণা করা হয় ৩৭ শতাংশ। তবে ৯ এপ্রিল পাল্টা শুল্ক তিন মাসের জন্য স্থগিত করেন প্রেসিডেন্ট। গত রোববার মার্কিন প্রশাসন জানিয়েছে, সব দেশের ওপর বাড়তি শুল্ক আগামী ১ আগস্ট থেকে কার্যকর হবে।