কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) শিক্ষার্থীদের দীর্ঘদিনের দাবি ছাত্র সংসদ প্রতিষ্ঠার জন্য শিক্ষার্থীরা ‘কুকসু প্রতিষ্ঠা আন্দোলন’ নামে নতুন একটি প্লাটফর্ম ঘোষণা করেছে। এছাড়া, আগামী ১৫ দিনের মধ্যে সিন্ডিকেট সভা ডেকে ছাত্র সংসদ গঠনের দাবি বাস্তবায়নের আল্টিমেটাম দেন তারা।

মঙ্গলবার (৮ জুলাই) বিকেল সাড়ে ৪টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়ায় একটি সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীরা এ ঘোষণা দেন। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক বাজেট ঘাটতি ও প্রশাসনিক জটিলতার কারণে শিক্ষার্থীদের ন্যায্য দাবিগুলো নিয়মিতভাবে উপেক্ষিত হচ্ছে বলে অভিযোগ তোলা হয় সংবাদ সম্মেলনে।

আরো পড়ুন:

খুবির ২ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে আনা ‘চাঁদাবাজি’র অভিযোগের নতুন মোড়

টিউশনির টাকায় বিসিএসের প্রস্তুতি: ৪৩-এ শিক্ষা, ৪৪-এ পররাষ্ট্র ক্যাডার

এ সময় শিক্ষার্থীরা বলেন, কুবিতে এখন একটি কার্যকর ও গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ (কুকসু) প্রতিষ্ঠা জরুরি হয়ে পড়েছে। এ লক্ষ্য বাস্তবায়নে বিভিন্ন মতাদর্শের শিক্ষার্থীদের নিয়ে গঠন করা হয়েছে নতুন একটি নিরপেক্ষ প্ল্যাটফর্ম ‘কুকসু প্রতিষ্ঠা আন্দোলন’।

ফার্মেসী বিভাগের শিক্ষার্থী নাঈম ভূইঁয়া বলেন, “লেজুড়বৃত্তিক ছাত্র রাজনীতি থেকে বের হয়ে এসে শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ের জন্য ছাত্র সংসদ প্রতিষ্ঠা এখন সময়ের দাবি। আমরা প্রশাসনকে ১৫ দিনের আলটিমেটাম দিচ্ছি। এর মধ্যে যদি কার্যকর কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ না করে, তাহলে আমরা কঠোর আন্দোলনে যাব।”

সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীরা পাঁচটি দাবি উত্থাপন করেন। দাবিগুলো হলো– কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় আইনে ‘ছাত্র সংসদ থাকবে’— এমন ধারা অনতিবিলম্বে সংযুক্ত করতে হবে; আইনে ছাত্র সংসদের সুনির্দিষ্ট কাঠামো বর্ণনা করতে হবে; ছাত্র সংসদ প্রতিষ্ঠার প্রথম ধাপ হিসেবে গঠনতন্ত্র প্রণয়ন কমিটি গঠন করতে হবে; আসন্ন ছাত্র সংসদ নির্বাচনের লক্ষ্যে একটি সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ প্রকাশ করতে হবে এবং আগামী ১৫ দিনের মধ্যে সিন্ডিকেট সভা আহ্বান করে এসব দাবির বাস্তবায়ন করতে হবে।

ঢাকা/এমদাদুল/মেহেদী

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

বগুড়ায় ফুটপাত দখল করে দোকানের পসরা, কোটি টাকার চাঁদাবাজির অভিযোগ

বগুড়া শহরের সার্কিট হাউস-কালীবাড়ি মোড় সড়কে সারি সারি ভ্যানে হরেক খাবারের পসরা। পিৎজা, বার্গার, স্যান্ডউইচ, চিকেন শর্মা, মিটবক্স—সবই মিলছে রাস্তার পাশের এসব দোকানে। ক্রেতারা মূলত কিশোর ও তরুণ-তরুণী।

দোকানগুলোতে নেই কোনো আলাদা শেফ। বিক্রেতারাই নিজের হাতে খাবার তৈরি করছেন, পরিবেশনও করছেন। কারও হাতে গ্লাভস নেই, শরীরে নেই অ্যাপ্রোন। বিকেল গড়াতেই এসব ভ্রাম্যমাণ খাবারের দোকানে ভিড় জমছে। কোর্ট হাউস স্ট্রিটের পাশেই আছে ‘পিজ অ্যান্ড বার্গ’, ‘পদ্মা ফুডস’ ও ‘হিলিয়াম রেস্টুরেন্ট’-এর মতো নামীদামি খাবারের দোকান। একসময় সন্ধ্যায় এসব প্রতিষ্ঠানে ক্রেতার ঢল নামত। এখন সে ভিড় চলে গেছে রাস্তার পাশে বসা দোকানগুলোর দিকে।

পদ্মা ফুডসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও জলেশ্বরীতলা ব্যবসায়ী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এমদাদ আহমেদ বলেন, ‘অভিজাত এ এলাকায় একটি খাবারের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে ৮ থেকে ১০ লাখ টাকা বিনিয়োগ করতে হয়। অন্তত ১৪টি প্রতিষ্ঠান থেকে সনদ নিতে হয়। এসব নবায়নে প্রতিবছর মোটা অঙ্কের টাকা গুনতে হয়। ভবন ভাড়া, দামি শেফ ও কর্মচারীর বেতন—সব মিলিয়ে খরচ বিপুল। অথচ রাস্তার পাশে ভ্যানে বসা দোকানে বিনিয়োগ মাত্র ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা। কোনো সনদ নেই, দোকানভাড়া নেই, কর্মচারীও নেই। শুধু দামে সস্তা বলে ক্রেতারা ঝুঁকছেন ওদিকে। সড়ক দখল করে দোকান বসায় যানজটও বাড়ছে। অভিযোগ করেও প্রশাসনের কাছ থেকে কোনো প্রতিকার মিলছে না।

বগুড়া হোটেল মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এসএম দেলোয়ার হোসেন বলেন, জলেশ্বরীতলা অভিজাত এলাকা। এখানে দোকান দিতে বিপুল বিনিয়োগ লাগে। নামীদামি দোকানে একটি পিৎজার দাম ৫০০ টাকা হলে ভ্রাম্যমাণ দোকানে বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকায়। স্বাস্থ্যঝুঁকি থাকলেও ক্রেতারা সস্তা পেয়ে সেখান থেকেই কিনছেন। এতে অভিজাত রেস্টুরেন্টগুলো লোকসানে পড়ছে। এর সঙ্গে তিনি যুক্ত করেন, ‘আমরা স্ট্রিট ফুড ব্যবসার বিরোধী নই। তবে সেটা অভিজাত এলাকা থেকে সরিয়ে পৌর পার্ক, অ্যাডওয়ার্ড পার্কসংলগ্ন সড়ক কিংবা সরকারি আজিজুল হক কলেজের পাশের এলাকায় নিতে প্রশাসনকে অনুরোধ করেছি।’

সড়কজুড়ে দোকান, ভোগান্তিতে শহরবাসী

সম্প্রতি দেখা যায়, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের সামনে সড়কের এক পাশে ২০-২৫টি ভ্রাম্যমাণ খাবারের দোকান বসেছে। অন্য পাশে ফলের দোকান। বিকেল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত আদালত প্রাঙ্গণের সামনে যানজট লেগেই থাকে।

এ ছাড়া পৌরসভা লেন, জেলা খানা মোড়, বীর মুক্তিযোদ্ধা রেজাউল বাকী সড়ক, মহিলা ক্লাব মোড়, শহীদ আবদুল জব্বার সড়ক, সাতমাথা-সার্কিট হাউস সড়কসহ শহরের নানা সড়কেই বসছে ফুচকা, চটপটি, জুস, ফাস্ট ফুড ও ফলের দোকান।

সাতমাথায় প্রতিদিন বসছে অর্ধশতাধিক দোকান। জিলা স্কুলের সামনে চটপটি ও কাবাবের দোকানগুলোর চেয়ার বসানো হয়েছে ফুটপাত দখল করে। কবি নজরুল ইসলাম সড়ক, থানা মোড়, বড়গোলা, দত্তবাড়ি, কালিতলা—সবখানেই দুই পাশে দোকান।

রাস্তা দখল করে দোকান বসানোয় বেশির ভাগ সময় যানজটে থাকে শহরে। সম্প্রতি তোলা

সম্পর্কিত নিবন্ধ