ষড়যন্ত্র ও নোংরামির অভিযোগ এনে ‘বৈষম্যবিরোধী প্ল্যাটফর্ম’ থেকে সরে যাওয়ার পর এবার জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সাবেক কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক উমামা ফাতেমা।

মঙ্গলবার (৮ জুলাই) ফেসবুকে প্রকাশিত একটি স্ট্যাটাসে তিনি ফাউন্ডেশনের কার্যক্রম নিয়ে তীব্র সমালোচনা করেন। উমামার অভিযোগ, শহীদ ও আহত পরিবারের সেবা প্রদানে প্রতিষ্ঠিত এই ফাউন্ডেশন তাদের দায়িত্বপালনে সম্পূর্ণ ব্যর্থ।

তিনি বলেন, “চিকিৎসা, আর্থিক সহায়তা ও পুনর্বাসন ছিল ফাউন্ডেশনের প্রধান কর্তব্য, কিন্তু কীভাবে টাকা এসেছে, কীভাবে বিতরণ হয়েছে, কারা পেয়েছে এবং কতজন এখনো পাওনা আছে—এসব বিষয় স্পষ্ট নয়।”

উমামা আরো জানান, অর্ধেকের বেশি আহতই ফাউন্ডেশনের প্রথম ধাপের আর্থিক সহায়তা পায়নি। এছাড়া, এক বছর পেরিয়ে গেলেও ফাউন্ডেশন আহতদের তালিকা তৈরি করতে পারেনি এবং পুরো প্রক্রিয়াটির গোঁজামিল অবস্থা বিরাজ করছে।

এই অবস্থায় মঙ্গলবার ফাউন্ডেশনের অফিসে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।

তিনি জোর দিয়ে বলেন, “ফাউন্ডেশনকে দ্রুত দায়িত্বশীল ও দক্ষ ব্যক্তিদের হাতে হস্তান্তর করে আহত ও শহীদ পরিবারের পাশে দাঁড়াতে হবে।” 

গতকাল শাহবাগে জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের অফিস কক্ষ ভাঙচুর করেন জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহতদের কয়েকজন। গতকাল সন্ধ্যার পর বারডেম হাসপাতালের পাশের ওই অফিস কক্ষে প্রথমে তালা লাগানো হয়। পরে জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের কর্মচারীদের সঙ্গে তর্কাতর্কির এক পর্যায়ে সেখানে ভাঙচুর করা হয়। এ সময় ২০ থেকে ২৫ জন জুলাই যোদ্ধা সেখানে উপস্থিত ছিলেন।

হামলাকারীদের অভিযোগ, জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে আহতদের কয়েকজনকে দ্বিতীয় ধাপের টাকা দেওয়ার কথা বলে তিন থেকে চারবার ঘোরানো হয়েছে। এরপর গতকাল টাকা দেওয়ার তারিখ দিয়েছিল। কিন্তু গতকালও টাকা দেওয়া হয়নি।

এর আগে নানা অনিয়ম আর দুর্নীতির অভিযোগ এনে গত ২৭ জুন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন থেকে সড়ে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্তের কথা জানান উমামা। এছাড়া, গত  ২৮ এপ্রিল উমামা জানিয়েছিলেন, নতুন রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সঙ্গে তার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। 

ঢাকা/ইভা 

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর গতক ল

এছাড়াও পড়ুন:

সহায়তার টাকা না পেয়ে জুলাই ফাউন্ডেশনের অফিসে ভাঙচুর আহতদের

রাজধানীর শাহবাগে জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের অফিস কক্ষ ভাংচুর করেছেন জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহতদের কয়েকজন। আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর বারডেম হাসপাতালের পাশের ওই অফিস কক্ষে প্রথমে তালা লাগানো হয়। পরে জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের কর্মচারীদের সঙ্গে তর্কাতর্কির এক পর্যায়ে সেখানে ভাঙচুর করা হয়। এ সময় ২০ থেকে ২৫ জন জুলাই যোদ্ধা সেখানে উপস্থিত ছিলেন।

হামলাকারীদের অভিযোগ, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহতদের কয়েকজনকে দ্বিতীয় ধাপের টাকা দেওয়ার কথা বলে তিন থেকে চার বার ঘোরানো হয়েছে। এরপর আজ টাকা দেওয়ার তারিখ দিয়েছিল। কিন্তু আজও টাকা দেওয়া হয়নি।

সহায়তার এই টাকা পেতে পাশের বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহত এই ব্যক্তিরা আজ দুপুরের পর ওই অফিসের সামনে ভিড় করেন। তিন থেকে চার ঘণ্টা অপেক্ষার পর সন্ধ্যার দিকে জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) কামাল আকবর বলেন, আজ টাকা দিতে পারবেন না। তাঁর এই কথা শুনে আহতরা ক্ষুব্ধ হয়ে অফিসে তালা লাগিয়ে দেন। এর মধ্যে ফাউন্ডেশনে একজন কর্মচারী খারাপ আচরণ করলে সেখানে ভাঙচুর করা হয় আহতদের কয়েকজন জানিয়েছেন।

ভাঙচুরের পর ওই অফিস কক্ষে গিয়ে দেখা যায়, অনেকগুলো চেয়ার এলোমেলো পড়ে আছে। পানির ফিল্টার ও তিনটি দরজার গ্লাসে ভেঙে ফেলা হয়েছে। মেঝেতে কাচের টুকরো ছড়িয়ে–ছিটিয়ে আছে।

মামুন হোসেন নামে আহতদের একজন প্রথম আলোকে বলেন, জুলাই ফাউন্ডেশনের এক কর্মী তাঁদেরকে ধাক্কা দিয়ে বের করে দেওয়ার কথা বলেন, এরপরে সবাই ক্ষুব্ধ হয়ে ফাউন্ডেশনের অফিসে ভাঙচুর চালায়। ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘আগে তো জুলাই ফাউন্ডেশন ছিল না। আমাদের আহতদের জন্য এই জুলাই ফাউন্ডেশন। আমরা আহতরা চিকিৎসার অর্থের জন্য এখানে আবেদন করি। কিন্তু এখানে আসার পর আমাদেরকে বারবার টাকা দেওয়া হবে বলে ঘুরানো হয়।’

গত বছর আন্দোলনে গিয়ে আহত হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত চিকিৎসাধীন আছেন বলে জানান মামুন হোসেন। তিনি বলেন, ‘আমার মাথার ভেতরে গুলি, ১১ মাস যাবত চিকিৎসাধীন। আমাদের জীবনের নিশ্চয়তা কী? আজকে সাধারণ একটা বিষয় নিয়ে পুলিশ আমাদেরকে মেরেছে, জুলাই ফাউন্ডেশনে ফোন দেওয়া হয়েছে, তখন এখান থেকে কেউ যায়নি। তো কিসের জুলাই ফাউন্ডেশন?’

আহত নাজমুল হোসেন সাভার সরকারি কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি বলেন, ‘সাত মাস ধরে দ্বিতীয় ধাপের টাকার জন্য ঘুরতেছি। এখানকার ভেতরের লোকদের সাথে যাদের সম্পর্ক ভালো, তাঁদেরকে আগে টাকা দেওয়া হচ্ছে। যাঁদের সাথে মামা-চাচার সম্পর্ক তাঁরাই টাকা পাচ্ছে। আমাদের যারা গুরুতর আহত, দেশে চিকিৎসা নেই, বাহিরে চিকিৎসা নিচ্ছে তাঁদেরকে সেকেন্ড টাইমের (দ্বিতীয় ধাপের) টাকা দেওয়া হচ্ছে না। জুলাই ফাউন্ডেশনের সিইও বারবার ডেট দিয়ে আমাদেরকে টাকা দিচ্ছেন না।’

জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের অফিস কক্ষে ভাঙচুরের পর চেয়ারগুলো পড়ে থাকতে দেখা যায়। রাজধানীর শাহবাগে ওই অফিস কক্ষে আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এই ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে ২১ দিনের কর্মসূচি ঘোষণা বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির
  • জুলাইয়ে প্রাণঘাতী শক্তি প্রয়োগের অনুমতি দিয়েছিলেন শেখ হাসিনা 
  • অর্থ সহায়তা পেতে জুলাই ফাউন্ডেশনে আহতদের হট্টগোল
  • সহায়তার টাকা না পেয়ে জুলাই ফাউন্ডেশনের অফিসে ভাঙচুর আহতদের
  • মহানগর ছাত্রদলের দোয়া মাহফিল ও বৃক্ষ বিতরণ 
  • টাঙ্গাইলের সড়কে ঝরল ৩ প্রাণ
  • জামায়াত ক্ষমতায় এলে জুলাই শহীদদের জাতীয় মর্যাদা দেবে: রেজাউল করিম