টানা তিন দিনের ভারী বৃষ্টি ও উজানের ঢলে ফেনী-পরশুরাম আঞ্চলিক সড়ক পানির নিচে তলিয়ে গেছে। এতে পরশুরামের সঙ্গে জেলা সদরের সরাসরি যোগাযোগ সম্ভব হচ্ছে না। বাধ্য হয়ে যাত্রীরা ছাগলনাইয়া-খন্ডলহাই সড়ক ব্যবহার করছেন। তবে, ওই সড়কে যানবাহন কম এবং ভাড়া বেশি হওয়ায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ মানুষ।

সিএনজি অটোরিকশার চালক আবদুল ওয়াদুদ বলেছেন, “ফেনী থেকে মুন্সিরহাট পর্যন্ত যাওয়া গেলেও এর পর পুরো সড়ক পানির নিচে। তাই, খন্ডলহাই সড়ক ব্যবহার করছি।”

বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা শ্যামল রায় বলেছেন, “পরশুরাম যেতে দ্বিগুণ ভাড়া দিতে হচ্ছে। যাতায়াত কষ্টসাধ্য হয়ে উঠেছে।”

স্থানীয় বাসিন্দা রাজু বলেছেন, গতকাল রাত দেড়টার দিকে হঠাৎ করে বাড়িতে পানি উঠে যায়। কিছু বুঝে ওঠার আগেই ঘরের ভেতর হাঁটুসমান পানি হয়। কোনোরকমে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে স্থানীয় আশ্রয়কেন্দ্রে উঠেছি।

এদিকে, ফেনীতে বন্যা পরিস্থিতি আরো অবনতির দিকে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় কর্মকর্তারা। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) ফেনী কার্যালয়ের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী আবুল কাশেম জানিয়েছেন, মুহুরী নদীর পানি এখন বিপৎসীমার ৭৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গতকালের চেয়ে পানিপ্রবাহ কিছুটা কমলেও বাঁধ ভেঙে পরশুরাম ও ফুলগাজীর অনেক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।

ফুলগাজী উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা ফারিহা ইসলাম জানিয়েছেন, উপজেলার অন্তত সাতটি স্থানে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙেছে। এতে ১৪টি গ্রাম পানির নিচে চলে গেছে। আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে দেড় শতাধিক মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। তাদের জন্য শুকনো খাবার ও রান্না করা খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পরশুরাম ও ফুলগাজীতে ১৩১টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

স্থানীয়দের অভিযোগ, বাঁধের ভাঙন ঠেকাতে আগেভাগে কোনো কার্যকর ব্যবস্থা না নেওয়ায় প্রতিবছরের মতো এবারও সাধারণ মানুষকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

ঢাকা/সাহাব উদ্দিন/রফিক

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর কর মকর ত পরশ র ম

এছাড়াও পড়ুন:

মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার

রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।

গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।

সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।

ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ