আমতলীতে বিএনপির দুই পক্ষে দফায় দফায় সংঘর্ষ, আহত ১৫
Published: 10th, July 2025 GMT
বরগুনায় আমতলী উপজেলার চাওড়া ইউনিয়ন বিএনপির সম্মেলনের প্রস্তুতি সভা শেষে দুই পক্ষের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে উপজেলার তালুকদার বাজারে এ ঘটনা ঘটে।
সংঘর্ষে উভয় পক্ষের ১৫ জন নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ১১ জনকে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। হাসপাতালের চিকিৎসা কর্মকর্তা লুনা বিনতে হক বলেন, আহত ব্যক্তিদের হাসপাতালে ভর্তির পর যথাযথ চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, ১৭ জুলাই চাওড়া ইউনিয়ন বিএনপির সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। সম্মেলন উপলক্ষে আজ তালুকদার বাজারের একটি মাদ্রাসায় প্রস্তুতি সভার আয়োজন করা হয়। সভায় ইউনিয়নের ৭, ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বিএনপির নেতা-কর্মীরা অংশ নেন। সভায় ছালাম মল্লিক ও হাসান বয়াতি ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কমিটির সভাপতি পদ দাবি করেন। এ নিয়ে তাঁদের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়। এ ঘটনার জেরে হাসান বয়াতির ভাতিজা সোহাগ বয়াতিকে ছালাম মল্লিকের ছেলে শাহীন মল্লিক মারধর করেন।
প্রত্যক্ষদর্শী লোকজন জানান, সোহাগের বাবা ইদ্রিস বয়াতি ছেলেকে মারধরের বিষয়টি জানতে পেরে ছালাম মল্লিকের কাছে গেলে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। পরে উভয় পক্ষ হাসপাতালে যাওয়ার পথে আবার তালুকদার বাজারের চৌরাস্তায় সংঘর্ষে জড়ায়। সংঘর্ষে দুই পক্ষের ১৫ জন আহত হন। তাঁদের মধ্যে আহত ইদ্রিস বয়াতি (৪০), সাগর (১৫), আল মামুন (২৬), সোহাগ বয়াতি (২১), ইমরান মাতুব্বর (১৮), হিরণ মৃধা (২৩), হাসান বয়াতি (৩২), শাহীন মল্লিক (২৫), সালাম মল্লিক (৫২), নুর আলম মল্লিক (২১) ও আসিফ মল্লিককে (২২) উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। অন্যরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।
জানতে চাইলে সভাপতি পদপ্রার্থী হাসান বয়াতি প্রথম আলোকে বলেন, ছালাম মল্লিক গত ১৬ বছর আওয়ামী লীগ করেছেন। এখন তিনি ৮ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির কমিটিতে সভাপতির পদ দাবি করেন। তাঁর ভাতিজা সোহাগ বয়াতি এর প্রতিবাদ করেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে সোহাগকে মারধর করেন ছালামের ছেলে শাহীন। এর জেরে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনায় তাঁর পক্ষের ১০ জন আহত হয়েছেন।
এ বিষয়ে ছালাম মল্লিক বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে উসকানিমূলক কথা বলায় আমার ছেলের সঙ্গে হাসানের ভাতিজার কথা–কাটাকাটি হয়েছে। এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটেছে। এতে আমার পক্ষের পাঁচজন আহত হয়েছেন।’
জানতে চাইলে চাওড়া ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক রেজাউল করিম প্রথম আলোকে বলেন, প্রস্তুতি সভা শেষে পদ-পদবি নিয়ে ছালাম মল্লিক ও হাবিব বয়াতির লোকজনের মধ্যে মারধরের ঘটনা ঘটেছে। এতে দুই পক্ষের বেশ কয়েকজন নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন।
আমতলী উপজেলা বিএনপির সদস্যসচিব তুহিন মৃধা বলেন, ‘ঘটনা শুনেছি। যাঁরা এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত, তাঁদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
আমতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো.
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আহত হয় ছ ন হ স ন বয় ত য় স ঘর ষ ব এনপ র ম রধর উপজ ল এ ঘটন
এছাড়াও পড়ুন:
আসামিকে আপ্যায়নের ঘটনায় আদালত পরিদর্শকসহ ৬ পুলিশ সদস্য প্রত্যাহার
সন্ত্রাস দমন, বিস্ফোরক নিয়ন্ত্রণ আইন ও বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলার আসামি এবং আমতলী পৌর যুবলীগ সভাপতিকে পুলিশের ব্যারাকে নিয়ে আপ্যায়নের অভিযোগে আমতলী উপজেলা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের পরিদর্শক বশির আলমসহ ছয় পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
প্রত্যাহার হওয়া অন্য পুলিশ সদস্যরা হলেন এ টি এস আই মামুন, কনস্টেবল আশিস, মো. ফয়সাল, সোহরাব মিয়া ও শাহদাত হোসেন। তাঁদের পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়েছে।
গতকাল সোমবার বিকেলে আদালত থেকে তাঁদের প্রত্যাহার করা হয়। এ ঘটনায় তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেন বরগুনা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আল-মামুন শিকদার।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ২ সেপ্টেম্বর আমতলীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের পুলিশ ব্যারাকে মামলার আসামি আরিফ-উল হাসানকে ভাত খাওয়ান আদালত পরিদর্শক বশির আলম। এ সময় তাঁর সঙ্গে ব্যারাকের ভেতরে দুজন নারী, দুজন পুরুষ এবং একটি শিশু ছিল। ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ভিডিও প্রকাশের পর আসামিকে আপ্যায়নের অভিযোগে আদালত পরিদর্শক বশির আলমসহ ছয় পুলিশ সদস্যকে দায়িত্ব থেকে গতকাল প্রত্যাহার করা হয়।
বরগুনার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আল-মামুন শিকদার প্রথম আলোকে বলেন, আমতলীতে আদালতের গারদখানার সংস্কারকাজ চলায় আসামিকে পুলিশ ব্যারাকে নেওয়া হয়েছিল। পরে সেখানে তাঁর খাবারের আয়োজন করা হয়। ঘটনার ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নজরে আসে। তাঁদের নির্দেশে ছয় পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। তদন্ত চলছে, বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।