‘লাশের রাজনীতি বন্ধ করুন’: মিটফোর্ড হত্যার বিচার দাবিতে চট্টগ্রামে বিক্ষোভ
Published: 12th, July 2025 GMT
রাজধানীর মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে ভাঙারি পণ্যের ব্যবসায়ী লাল চাঁদ সোহাগকে নৃশংসভাবে হত্যার সুষ্ঠু বিচারের দাবিতে চট্টগ্রাম নগরে বিক্ষোভ করেছেন বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। আজ শনিবার বিকেল সাড়ে চারটার দিকে নগরের ২ নম্বর গেটে এ বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়।
বেলা সাড়ে তিনটার দিকে নগরের ষোলশহর স্টেশন থেকে পদযাত্রা শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। পরে শিক্ষার্থীরা এসে জড়ো হন ২ নম্বর গেট মোড়ে। সেখানে তাঁরা ‘সন্ত্রাসীদের আস্তানা/ জ্বালিয়ে দাও, পুড়িয়ে দাও’, ‘চাঁদাবাজের আস্তানা, জ্বালিয়ে দাও, পুড়িয়ে দাও’, ‘বিএনপির অনেক গুণ/ ১০ মাসে এক শ খুন’—এমন আরও নানা স্লোগান দেন।
কর্মসূচিতে গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক খান তালাত মাহমুদ বলেন, ‘৫ আগস্টের পর থেকে সারা দেশে বিএনপির অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীদের চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড দেখেছি। আমরা দেখেছি, ১০ মাসে ১০০টির বেশি খুন করেছে। এ নতুন বাংলাদেশে আর কোনো চাঁদাবাজি বরদাশত করা হবে না। নতুন বাংলাদেশে আর কোনো সন্ত্রাসবাদ বরদাশত করা হবে না।’
খান তালাত মাহমুদ বলেন, ‘আমাদের একজন ভাইকে পাথর দিয়ে মারা হয়েছে। আমরা পরিষ্কারভাবে বলছি, আপনারা যদি লাশের রাজনীতি বন্ধ না করেন, তাহলে শেখ হাসিনা যে পথে গিয়েছে, আপনাদেরও সে পথে যেতে হবে। আপনারা যদি হাসিনার পথ অবলম্বন করেন, তাহলে হাসিনার মতোই আপনাদের পরিণতি হবে। নতুন করে হাসিনা হতে যাবেন না। মজলুম থেকে জালিম হতে যাবেন না। জালিমের পরিণতি ভালো হয় না।’
কর্মসূচিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চট্টগ্রাম নগরের মুখপাত্র লিজা খানম বলেন, ‘বাংলাদেশের বৃহত্তম দলের নেতা তারেক রহমান। আমি আপনাকে বলতে চাই, আপনি লন্ডনে থেকে বিড়াল নিয়ে ছবি পোস্ট করা অফ (বন্ধ) করেন। আপনি আপনার এ সন্ত্রাসকারী ভাইদের আটকান। আপনি লাগাম দেন। লন্ডনে বসে বসে আপনি উসকানি বন্ধ করেন। আপনি বলেছেন, অদৃশ্য শক্তি এখন দৃশ্যমান হয়েছে। আপনারা চাঁদাবাজি করবেন। আমরা শক্ত হাতে রুখে দিতে গেলেই অদৃশ্য শক্তি হয়ে যাই। আপনারা যে দলেরই হন না কেন, আমরা শেখ হাসিনারে হটিয়েছি। আপনাদের হটাতে আমাদের ১৫ সেকেন্ডও লাগবে না।’
ব্যবসায়ী লাল চাঁদ হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ করে ইসলামি ছাত্র শিবির চট্টগ্রাম মহানগরের নেতা-কর্মীরা। আজ বিকেল ৪টায় জিইসি মোড় এলাকায়.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার
রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।
গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।
সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।
ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’