বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, “ঢাকার উত্তরার মাইলস্টোন স্কুলে যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় আমাদের ধারণা, শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছেন। যদিও এখনো এর প্রকৃত সংখ্যা জানা যায়নি।” তিনি নিহতদের সঠিক তালিকা দ্রুত প্রকাশ করার দাবি জানান।

মঙ্গলবার (২২ জুলাই) বিকেলে রংপুর সদর উপজেলার মমিনপুরে যান জাতায়াতের আমির। সেখানে তিনি ঢাকায় জাতীয় সমাবেশে যোগ দিয়ে মারা যাওয়া জামায়াত কর্মীর কবর জিয়ারত করেন। এসময় তিনি এসব কথা বলেন। 

জামায়াতের আমির মাইলস্টোন স্কুল এন্ড কলেজে যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় যারা নিহত হয়েছেন তাদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করেন এবং আহতদের দ্রুত সুস্থতায় দোয়া করেন। 

আরো পড়ুন:

দুর্নীতি মুক্ত মানবিক সমাজ দেখতে চায় জামায়াত: শফিকুর রহমান

জামায়াতের আমির খুলনায় আসছেন মঙ্গলবার

ডা.

শফিকুর রহমান বলেন, “আগামী নির্বাচনে যারা জামায়াতের এমপি-মন্ত্রী হবেন তারা সরকারি প্লট গ্রহণ করবে না। তারা বিনা ট্যাক্সের পরিবহনও ব্যবহার করবেন না।”

তিনি বলেন, “স্বাধীনতার ৫৪ বছর দেশে অনেককে শাসন করতে দেখেছি। জনগণের কাঙ্খিত প্রতিফলন ঘটেনি। এবার দুর্নীতিমুক্ত মানবিক রাষ্ট্র গঠনের লক্ষ্যেই কাজ করে যাচ্ছে জামায়াত। অপরাধের সমস্ত কালো পর্দা খানখান করে দেশের সর্বত্র শান্তির সুবাতাস ফিরিয়ে আনতে সেবক হয়ে কাজ করে যাবে আমার দল।”

এসময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ারসহ দলের কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা।

গত ১৯ জুলাই রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জাতীয় সমাবেশে যোগ দিয়ে গরমে অসুস্থ হয়ে মারা যান জামায়াতের রংপুর মহানগরীর রোকন কৃষিবিদ শাহ আলম। আজ বিকেলে মোমিনপুর ইউনিয়নের মোক্তার পাড়ায় তার কবর জিয়ারতে আসেন ডা. শফিকুর রহমান। পরে তিনি মারা যাওয়া কর্মীর পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন।

ঢাকা/আমিরুল/মাসুদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র আম র

এছাড়াও পড়ুন:

সব্যসাচী কাজী মোতাহার হোসেন বিজ্ঞান ও শিল্পের মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন

প্রথিতযশা অধ্যাপক ও পরিসংখ্যানবিদ কাজী মোতাহার হোসেন ছিলেন একজন সব্যসাচী মানুষ। তিনি নিজের কাজের মাধ্যমে বিজ্ঞান ও শিল্পের মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন। তাঁর ঐতিহ্য শিক্ষার্থীদের ধারণ করতে হবে।

জ্ঞানতাপস কাজী মোতাহার হোসেনের ১২৮তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আজ বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তারা এ কথাগুলো বলেন।

অনুষ্ঠানে স্মারক বক্তৃতা, বৃত্তি, পদক, পুরস্কার ও সনদ দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানের যৌথ আয়োজক কাজী মোতাহার হোসেন ফাউন্ডেশন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগ এবং পরিসংখ্যান গবেষণা ও শিক্ষণ ইনস্টিটিউট।

অনুষ্ঠানে ‘যুগলের বন্ধন: কাজী নজরুল ইসলাম-কাজী মোতাহার হোসেন’ শীর্ষক স্মারক বক্তৃতা দেন অধ্যাপক ভীষ্মদেব চৌধুরী। তিনি দুই বন্ধুর সম্পর্কের রসায়নের নানা দিক তুলে ধরেন।

প্রধান অতিথি বক্তব্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়াজ আহমেদ খান বলেন, এই অনুষ্ঠানের দুটো প্রাপ্তি আছে। প্রথমত, মানুষের অবদান ও মেধাকে স্বীকার করা হচ্ছে। দ্বিতীয়ত, এই উপমহাদেশের একজন প্রথিতযশা সব্যসাচী মানুষের ঋণ স্বীকার করা হচ্ছে।

কাজী মোতাহার হোসেন যেকোনো বিবেচনায় একজন দার্শনিক বলে উল্লেখ করেন নিয়াজ আহমেদ খান। তিনি বলেন, কাজী মোতাহার হোসেন বিজ্ঞান ও শিল্পের মধ্যে মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন। প্রথম সারির পরিসংখ্যানবিদ, বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা ছাড়াও তিনি অনেকগুলো সামাজিক আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছেন, প্রভাব বিস্তার করেছেন। একজন মানুষের ছোট জীবদ্দশায় এত গুণ সন্নিবেশিত করা কঠিন। কিন্তু তিনি তা করে দেখিয়েছেন।

সবাইকে নিয়ে চলা, প্রতিষ্ঠান তৈরি করা, নিজের জগতের বাইরে নানা কিছুতে হাত বাড়িয়ে দেওয়ার মতো ঐতিহ্য কাজী মোতাহার হোসেন করে গেছেন বলে উল্লেখ করেন নিয়াজ আহমেদ খান। তিনি বলেন, তাঁর সম্মানে যাঁরা আজ স্বীকৃতি পেলেন, তাঁরা এই ঐতিহ্যকে ধারণ করবেন। এটা (বিশ্ববিদ্যালয়) যে সামাজিক প্রতিষ্ঠান, সে বার্তা দেবেন। যেসব শিক্ষার্থী সম্মাননা পাচ্ছেন, তাঁদের ছোট প্রোফাইল তৈরি করে ওয়েবসাইটে তুলে দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

কাজী মোতাহার হোসেন ফাউন্ডেশনের সভাপতি অধ্যাপক আবদুল মাজেদ বলেন, কাজী মোতাহার হোসেন একজন সব্যসাচী মানুষ ছিলেন। বিজ্ঞানের এমন কোনো দিক নেই, যেখানে তাঁর পদচারণা ছিল না। তিনি দাবা খুব পছন্দ করতেন। দাবা খেলার কথা শুনলে তিনি ছুটে যেতেন। কাজী মোতাহার হোসেনকে নিয়ে তাঁর শোনা নানা গল্প তিনি স্মৃতিচারণা করেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক জাফর আহমেদ খান বলেন, কাজী মোতাহার হোসেন পরিসংখ্যান চর্চার পথিকৃৎ ছিলেন। বিজ্ঞান, দাবাচর্চারও পথিকৃৎ ছিলেন। এমন কোনো পুরস্কার নেই যে, তিনি পাননি। তাঁর দেখানো পথে যেন শিক্ষার্থীরা নিজেদের আলোকিত করতে পারেন।

অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন কাজী মোতাহার হোসেন ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক কাজী রওনাক হোসেন। এই আয়োজনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের বিভিন্ন বর্ষের সেরা শিক্ষার্থীদের বই, নগদ অর্থ ও সনদ তুলে দেওয়া হয়। এ ছাড়া কাজী মোতাহার হোসেনকে নিয়ে আয়োজিত রচনা প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ