যুক্তরাষ্ট্র–ভারত শুল্ক চুক্তি কি অনিশ্চিত হয়ে পড়ছে
Published: 22nd, July 2025 GMT
যুক্তরাষ্ট্রে বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর আরোপ করা পাল্টা শুল্ক কমাতে ওয়াশিংটনের সঙ্গে আলোচনার সময়সীমা শেষ হচ্ছে ১ আগস্ট। এই সময়ের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের মধ্যে একটি অন্তর্বর্তী বাণিজ্য চুক্তিতে পৌঁছানোর সম্ভাবনা ক্ষীণ হয়ে এসেছে। ভারত সরকারের দুটি সূত্র রয়টার্সকে এ তথ্য জানিয়েছে।
গত ২ এপ্রিল বিভিন্ন দেশের ওপর পাল্টা শুল্ক আরোপ করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ভারতের পণ্যের ওপর আরোপ করা হয় অতিরিক্ত ২৬ শতাংশ শুল্ক। যদিও আলোচনার সুযোগ দিয়ে অন্যান্য দেশের মতো ভারতের ওপর আরোপ করা শুল্কও ১ আগস্ট পর্যন্ত স্থগিত করা হয়েছে। আর ভারতকে এখনো নতুন শুল্কের পরিমাণ জানিয়ে চিঠিও দেয়নি ট্রাম্প প্রশাসন।
শুল্কের পরিমাণ কমানোর জন্য ওয়াশিংটনের সঙ্গে দফায় দফায় আলোচনা করেছে ভারতের প্রতিনিধিদল। সম্প্রতি কোনো অগ্রগতি ছাড়াই পঞ্চম দফা আলোচনা করে ভারতে ফিরে এসেছেন ওই দলের সদস্যরা। যুক্তরাষ্ট্রের একটি প্রতিনিধিদল আলোচনার জন্য শিগগিরই নয়াদিল্লি আসতে পারেন জানিয়ে একটি সূত্র বলেছে, ১ আগস্টের আগে একটি অন্তর্বর্তী চুক্তি কঠিন বলে মনে হচ্ছে।
বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে আলোচনায় স্থবির হয়ে পড়ার কয়েকটি কারণ রয়েছে। ভারতের কৃষি ও দুগ্ধ খাত মার্কিনিদের জন্য উন্মুক্ত করে দিতে চায় না নয়াদিল্লি। অপরদিকে ইস্পাত, অ্যালুমিনিয়াম ও গাড়ির ওপর শুল্কছাড়ের যে দাবি ভারত তুলেছে, তা মানছে না যুক্তরাষ্ট্র। সূত্রের তথ্য অনুযায়ী, আপাতত অন্তর্বর্তী চুক্তি করে পরের ধাপে গিয়ে এই বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করতে চায় নয়াদিল্লি।
ভারতের ফেডারেশন অব এক্সপোর্ট অর্গানাইজেশনের পরিচালক অজয় সাহানি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের ২৬ শতাংশ শুল্ক কার্যকর হলে রত্নপাথর ও অলংকারের মতো খাতগুলো সবচেয়ে বড় ধাক্কা খাবে। তবে এই সংকট সাময়িক হতে পারে। কারণ, দুই দেশই চুক্তির লক্ষ্য নিয়ে এগোচ্ছে। আর যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট বলেছেন, চুক্তি নিয়ে আলোচনার জন্য ১ আগস্টের পর কোনো দেশকে বাড়তি সময় দেওয়া হবে কি না, তা ট্রাম্পের ওপরই নির্ভর করছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: য ক তর ষ ট র ১ আগস ট র জন য র ওপর
এছাড়াও পড়ুন:
মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার
রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।
গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।
সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।
ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’