নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে সরকারি আদমজীনগর এম ডব্লিউ কলেজে ছাত্র দলের কমিটির অনুমোদন করা হয়েছে। গত ১০ জুলাই রেজওয়ান মাহমুদ রাফিকে সভাপতি ও নাবিল মাহমুদ রাফিকে সাধারণ সম্পাদক করে কমিটির অনুমোদন দেয়া হয়। 

এদিকে ছাত্রদলের এ কমিটিকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দিখিয়েছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এছাড়া কমিটি ঘোষণাকে কেন্দ্র করে কলেজ অধ্যক্ষ মো: ছোলাইমান খন্দকারকে দায়ী করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন অনেক শিক্ষার্থী।

তাঁদের অভিযোগ অধ্যক্ষ কলেজে ছাত্র দলের রাজনীতি কে প্রশ্রয় দিচ্ছেন এবং তাঁর শেল্টারে ছাত্রদল কলেজের ভেতরে মতবিনিময় সহ রাজনৈতিক প্রোগ্রাম করে যাচ্ছে। আমরা কলেজে ছাত্র রাজনীতির ভয়ংকর রূপ দেখতে চাই না।

দেশে কলেজ প্রশাসন থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে রাজনীতি নিষিদ্ধ করার পরেও পেশীশক্তির জোরে ছাত্রদল সরকারি এম ডব্লিউ কলেজে  কমিটি দিয়েছে। কলেজ প্রশাসন যথাযথ ব্যবস্থা না নিলে প্রয়োজনে আমরা শিক্ষার্থীরা আবারও ২৪ নিয়ে আসবো তারপরেও কলেজে কোনো প্রকার লেজুড়বৃত্তিক রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতে দেব না। 

এম ডব্লিউ কলেজ থেকে চলমান এইচএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহন করা মোহাম্মদ মুজাহিদ জানান, এই সরকারি আদমজীনগর (মার্চেন্ট ওয়ার্কারস) এম ডব্লিউ কলেজে আমার জানামতে বিগত ৪৫ বছরের ইতিহাসে এই প্রথমবারের মতো রাজনৈতিক কোনো দলের সূচনা হয়েছে কমিটিও দেয়া হয়েছে।

আমি রাজনীতির বিরোধীতা করছি না, তবে আমার প্রশ্ন হচ্ছে এমন একটা ইন্টারমিডিয়েট কলেজে কিভাবে রাজনৈতিক কোনো দলের কমিটি দেয়া হয় এবং সেটায় কিভাবে কেন্দ্রীয় নেতাকর্মীদের স্বাক্ষর থাকে? কলেজে অধ্যয়নরত বেশীরভাগ শিক্ষার্থীরা পিছিয়ে পড়া এবং দরিদ্র পরিবারের সন্তান। তাই অধ্যক্ষ মহোদয়ের নিকট আকুল আবেদন, সার্বিক দিকগুলো বিবেচনা করে আমাদের এম ডব্লিউ কলেজ বিগত বছরগুলোর ন্যায় রাজনীতিমুক্ত এবং বিশৃঙ্খলামুক্ত রাখুন।
অত্র কলেজ রাজনীতিমুক্ত ছিল, সামনেও থাকবে ইনশাআল্লাহ। আশা করি কলেজ কর্তপক্ষ বিষয়টি বিবেচনায় রাখবেন এবং খুব শীঘ্রই জরুরী নোটিশের মাধ্যমে ক্যাম্পাসের ভিতরে রাজনৈতিক দলের কমিটি প্রত্যাহার করবেন। 
এবিষয়ে কথা হলে অত্র কলেজের ২০১৫ ব্যাচের শিক্ষার্থী আহসানুল হাবিব সোহাগ জানান, সরকারি আদমজীনগর এম ডব্লিউ কলেজটি আমার আবেগের স্থান। এ কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষা দিয়ে আমি উচ্চ মাধ্যমিকের গন্ডি পার করেছি। বিগত ৪৫ বছরে জাতীয় পার্টি, আওয়ামী লীগ ও বিএনপি অনেক বার ক্ষমতায় এসেছে। কখনও এ কলেজে রাজনীতি ছিল না। অভিভাবকরাও স্বাচ্ছন্দে ছেলে-মেয়েদের ভর্তি করিয়েছেন। এখন এ কলেজে রাজনীতির পরিবেশ তৈরি হলে তা ভালো কিছু বয়ে আনবে বলে মনেকরি না। তাই যিনি অধ্যক্ষের দায়িত্ব রয়েছেন তার প্রতি অনুরোধ থাকবে তিনি যেনো এ কলেজ থেকে রাজনীতি বন্ধ করতে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করেন।
এদিকে দ্বাদশ শ্রেণির এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক সালমা সুলতানা বলেন, কলেজে রাজনীতি থাকলে সেখানে শিক্ষার পরিবেশ থাকে না। এমনিতেই এ কলেজের পাসের হার অনেক কম। যদি এখন রাজনীতি শুরু হয় তাহলে শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা থেকে আরও পিছিয়ে পড়বে। আমাদের অভিভাবকদেরও নানা টেনশনে থাকতে হবে সন্তানদের নিয়ে। 
বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের নারায়ণগঞ্জ জেলার যুগ্ম আহবায়ক মেহরাব হোসেন প্রভাত বলেন, ‘শহীদদের ত্যাগ আমাদের অঙ্গীকারে শক্তি যোগায় এবং তাদের আদর্শ আমাদের পথপ্রদর্শক। শহীদদের আত্মত্যাগের কারণে আমরা আজ একটি নিরাপদ ও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশে বাঁচতে পারছি। তাদের স্মৃতি আমাদের সংগ্রামের অনুপ্রেরণা। শহীদদের রক্তভেজা এই বাংলাদেশে শিক্ষার্থীদের অধিকার সুনিশ্চিত হবে, কোনো বৈষম্য থাকবে না। 
ছাত্র রাজনীতি বন্ধের লক্ষ্যে গৃহীত নীতির অধীনে সবসময় ঐক্যবদ্ধ থেকেছেন জানিয়ে প্রভাত আরও বলেন, ‘আমরা একটি নিরাপদ, নিরপেক্ষ ও রাজনীতিমুক্ত ক্যাম্পাসের জন্য সংগ্রাম করে যাচ্ছি, যেখানে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় থাকবে এবং শিক্ষার মানোন্নয়ন হবে-এটাই আমাদের মূল লক্ষ্য। আমরা দীর্ঘদিন ধরে একটি নিরপেক্ষ, নিরাপদ এবং রাজনীতিমুক্ত ক্যাম্পাসের জন্য সংগ্রাম করে আসছি। শিক্ষার্থীরা সম্মিলিতভাবে এম ডব্লিউ  কলেজ ক্যাম্পাসকে রাজনীতিমুক্ত ঘোষণা করেছিলাম। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে ক্যাম্পাসে একটি ছাত্রসংগঠনের কার্যক্রম আমাদের অধিকার ও নিরাপত্তা হুমকির মুখে ফেলছে, যা আমরা সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য বলে মনে করি। 
এদিকে এ বিষয়ে বক্তব্যের জন্য সরকারি আদমজীনগর এম ডব্লিউ কলেজের অধ্যক্ষ মো: ছোলাইমান খন্দকারকে একাধিকবার কল দেয়া হলে তিনি মোবাইল রিসিভ করেননি।
প্রসঙ্গত, ১৯৮০ সালে আদমজী কদমতলী এলাকায় কলেজটি প্রতিষ্ঠিত হয়।
 

.

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: স দ ধ রগঞ জ র জন ত ন র য়ণগঞ জ কল জ র জন ত ম ক ত আদমজ নগর র জন ত ক র র জন ত এ কল জ আম দ র কল জ র সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

বিজয় মিছিলকে সফল করতে মহানগর বিএনপির ব্যাপক প্রস্তুতি 

আগামী ৫ ও ৬ আগস্ট আওয়ামী ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পলায়ন দিবস উপলক্ষে ৫ আগস্ট বন্দর উপজেলা ও ৬ আগস্ট ঢাকায় বিএনপির বিজয় মিছিলকে সফল করতে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপি'র বিভিন্ন ইউনিট ও অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দকে নিয়ে এক প্রস্তুতি সভার মাধ্যমে ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। 

শুক্রবার (১ আগস্ট) বিকেল চারটায় শহরের মিশন পাড়া হোসিয়ারি কমিউনিটি সেন্টার প্রাঙ্গনে এই সভার আয়োজন করা হয়। 

সভায় নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এড. সাখাওয়াত হোসেন খান ও সদস্য সচিব এড. আবু আল ইউসুফ খান টিপু নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আওতাধীন সকল থানা, ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন বিএনপি, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক, ছাত্রদল, শ্রমিকদল, কৃষকদল, মহিলাদল, ওলামাদলসহ অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদেরকে আগামী ৫ ও ৬ আগস্ট বন্দর উপজেলা ও ঢাকায় বিএনপির বিজয় মিছিলকে সফল করতে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপি'র বিভিন্ন ইউনিট ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদেরকে দীক নির্দেশনা দেয়া হয়। 

নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এড. সাখাওয়াত হোসেন খানের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব এড. আবু আল ইউসুফ খান টিপুর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন, নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুগ্ম আহ্বায়ক মনির হোসেন খান, যুগ্ম আহ্বায়ক ফহেত মোহাম্মদ রেজা রিপন, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য এড. রফিক আহমেদ, ডা. মজিবুর রহমান, এড. এইচএম আনোয়ার প্রধান, মাহবুব উল্লাহ তপন, বরকত উল্লাহ, হাবিবুর রহমান মিঠু, কামরুল হাসান চুন্নু সাউদ, মহানগর যুবদলের আহ্বায়ক মনিরুল ইসলাম সজল, সদর থানা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক নাজমুল হক, মহানগর শ্রমিকদলের সদস্য সচিব ফারুক হোসেন , মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক সাখাওয়াত ইসলাম রানা, সদস্য সচিব মমিনুর রহমান বাবু, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মির্জা কামাল উদ্দিন জনি, বিএনপি নেতা শেখ সেলিম, নাজমুল হক, চঞ্চল মাহমুদ, ইকবাল হোসেন, শাহাদুল্লাহ মুকুল, সাইফুল ইসলাম বাবু, হিরা সরদার, ইকবাল হোসেন, সোহেল খান বাবু, গোগনগর বিএনপির সভাপতি আক্তার হোসেন, সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর হোসেন মিয়াজী, মুছাপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি তারা মিয়া, ধামগড় ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি জাহিদ খন্দকার, বন্দর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি রাজু আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক মাসুদ রানা, আলীরটেক ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আঃ রহমান, সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন, মদনপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মামুন ভূইয়া, সাধারণ সম্পাদক শাহেন শাহ্ মিঠু, বন্দর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি রাজু আহম্মেদ, সাধারণ সম্পাদক মাসুদ রানা, মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি শাহাজাদা আলম রতন, মহানগর ওলামা দলের সভাপতি হাফেজ মামুনসহ অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • হাতে সময় নিয়ে বের হতে এইচএসসি-বিসিএস পরীক্ষার্থীদের আহ্বান ডিএমপির
  • প্রকাশিত সংবাদ নিয়ে যা বললেন বিএনপি  নেতা জাহাঙ্গীর হোসেন স্বাধীন
  • বেরোবির স্নাতকে ভর্তি শুরু রবিবার
  • ছাত্রদল-এনসিপির সমাবেশ রবিবার: যান চলাচলে ডিএমপির নির্দেশনা
  • শাহবাগ, শহীদ মিনার ও সোহরাওয়ার্দীতে রোববার সমাবেশ, যান চলাচলে ডিএমপির বিশেষ নির্দেশনা
  • সন্ত্রাসমুক্ত ও শান্তিময় দেশ গড়তে ইসলামী শক্তির বিকল্প নাই : মাসুম বিল্লাহ
  • না’গঞ্জ জেলা ও মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের বিশেষ সাধারণ সভা 
  • বিজয় মিছিলকে সফল করতে মহানগর বিএনপির ব্যাপক প্রস্তুতি 
  • আদমজী এম.ডব্লিউ স্কুলে জুলাই ডকুমেন্টারি প্রদর্শন
  • মাঝরাতে সরকারি কর্মকাণ্ড কতটা স্বাভাবিক