খাগড়াছড়ির দীঘিনালায় দুটি পক্ষের মধ্যে গোলাগুলি হয়েছে। গতকাল শুক্রবার রাত আটটার দিকে উপজেলার জোড়া সিন্ধু কার্বারিপাড়া এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় চারজনের মৃত্যুর খবর জানালেও তাঁদের নাম নিশ্চিত করতে পারেনি পুলিশ।

পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সূত্র বলছে, পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস) ও ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের (ইউপিডিএফ) মধ্যে এই গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। রাত আটটার দিকে এই দুই সংগঠনের দুটি দল সিন্ধু কার্বারিপাড়া এলাকায় মুখোমুখি হলে দুই পক্ষই গুলি করে।

পুলিশের দাবি, এ ঘটনায় ইউপিডিএফের সামরিক শাখার (‘গণমুক্তি ফৌজ’ বা ‘পিপলস লিবারেশন আর্মি’) চার সদস্য নিহত হয়েছেন। তবে তাঁদের নাম–ঠিকানা জানা যায়নি।

দীঘিনালা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.

জাকারিয়া আজ শনিবার বেলা একটার দিকে প্রথম আলোকে, জেএসএসের মূল দল ও ইউপিডিএফের মধ্যে এ ঘটনা ঘটে। এতে ইউপিডিএফের চারজন নিহত হন। এখনো দুই পক্ষ মুখোমুখি অবস্থানে আছে।

তবে পুলিশের এই দাবি অস্বীকার করেন ইউপিডিএফের সংগঠক অংগ্য মারমা। আজ দুপুরে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তিনি বলেন, তাঁদের দলের চারজন নিহত হয়েছেন বলে যে খবর প্রচারিত হচ্ছে, তা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও গুজব। গোলাগুলির ঘটনার কোনো তথ্য ইউপিডিএফের জানা নেই। আবার ইউপিডিএফের ‘গণমুক্তি ফৌজ’ বা ‘পিপলস লিবারেশন আর্মি’ নামে কোনো সামরিক শাখা থাকার প্রশ্নই আসে না। এটি অবান্তর ও কাল্পনিক।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে অংগ্য মারমা দাবি করেন, ভাইবোনছড়ায় ত্রিপুরা কিশোরীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের বিরুদ্ধে চলমান আন্দোলন থেকে জনগণের দৃষ্টি ভিন্ন দিকে প্রবাহিত করতে একটি বিশেষ গোষ্ঠী মিথ্যা প্রচারে নেমেছে।

এ বিষয়ে অংগ্য মারমা প্রথম আলোকে বলেন, এ ধরনের কোনো ঘটনা তাদের দলের সঙ্গে ঘটেনি। অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

রাঙামাটির পাহাড়ে ইউপিডিএফের আস্তানায় সেনা অভিযান

রাঙামাটির দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের (ইউপিডিএফ) আস্তানায় অভিযান চালিয়েছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী।

মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) সকালে চালানো এই অভিযানে সন্ত্রাসীদের সঙ্গে গুলি বিনিময়ের ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)।

আইএসপিআর জানায়, সেনাবাহিনী ঘটনাস্থল থেকে একে-৪৭ রাইফেলসহ বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার করেছে। অভিযান এখনো চলছে। 

১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর পার্বত্য চট্টগ্রামের দীর্ঘদিনের সংঘাত নিরসনে তৎকালীন সরকার ও পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির (জেএসএস) মধ্যে শান্তিচুক্তি সই হয়। চুক্তিতে বহু ধারার উল্লেখ ছিল—এর কিছু বাস্তবায়ন করা হয়, আর বাকিগুলোর বাস্তবায়নের জন্য সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়। তবে পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর একটি বড় অংশের অভিযোগ, চুক্তির অধিকাংশ গুরুত্বপূর্ণ ধারা এখনও বাস্তবায়িত হয়নি।

এই চুক্তির বিরোধিতা করেই ১৯৯৮ সালের জুনে আত্মপ্রকাশ করে ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ)। সংগঠনটি মূলত চুক্তিবিরোধী অবস্থান নিয়ে পাহাড়ি তরুণদের মধ্যে শক্ত অবস্থান গড়ে তোলে।

এরপর থেকেই পার্বত্য অঞ্চলে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে ইউপিডিএফ ও জেএসএসের মধ্যে বিরোধ চরমে ওঠে। দুই সংগঠনের সংঘর্ষে বিভিন্ন সময়ে বহু কর্মী নিহত হন, আর সশস্ত্র সহিংসতায় পাহাড়জুড়ে বিরাজ করে আতঙ্ক।

২০১০ সালে জেএসএসের মূল ধারা (সন্তু লারমা নেতৃত্বাধীন) থেকে একটি অংশ বেরিয়ে এসে জেএসএস (এম এন লারমা) নামে নতুন একটি সংগঠন গঠন করে।

পরে ২০১৭ সালে ইউপিডিএফের অভ্যন্তরীণ বিভাজনের পর প্রসীত খিসার নেতৃত্বাধীন মূল সংগঠন থেকে আলাদা হয়ে আরেকটি অংশ ইউপিডিএফ-গণতান্ত্রিক নামে আত্মপ্রকাশ করে। 

ঢাকা/হাসান/ইভা 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • রাঙামাটির পাহাড়ে ইউপিডিএফের আস্তানায় সেনা অভিযান
  • খাগড়াছড়িতে গোলাগুলি, ১ জন নিহত
  • খাগড়াছড়িতে প্রতিপক্ষের গুলিতে গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের কর্মী নিহত
  • খাগড়াছড়িতে ইউপিডিএফ ও জেএসএসের গোলাগুলি