থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়া সীমান্ত সংঘাত নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতার পরও গোলাগুলি অব্যাহত রয়েছে। শনিবার স্কটল্যান্ডে ব্যক্তিগত সফরের ফাঁকে ট্রাম্প দাবি করেন, দুই দেশের নেতাদের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলে তিনি তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতি ও শান্তির জন্য চাপ দিয়েছেন। খবর বিবিসির। 

ট্রাম্প তার ট্রুথ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখেছেন, দুই দেশ দ্রুত বৈঠক করে যুদ্ধবিরতি ও চূড়ান্ত শান্তির পথে এগিয়ে যেতে সম্মত হয়েছে।

থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়া ট্রাম্পের উদ্বেগ ও যুদ্ধবিরতির প্রচেষ্টার জন্য তাকে ধন্যবাদ জানিয়েছে। কম্বোডিয়া ট্রাম্পের আহ্বানে সাড়া দিয়ে তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়েছে। দেশটির প্রধানমন্ত্রী হুন মানেত জানান, ট্রাম্পের হস্তক্ষেপ বহু সেনা ও বেসামরিক মানুষের জীবন বাঁচাতে সাহায্য করবে। 

আরো পড়ুন:

জন্মের সময় শিশুটির ওজন ছিল একটি সাবানের সমান

যুক্তরাষ্ট্রে টেকঅফের ঠিক আগে বিমানের চাকায় আগুন

অন্যদিকে থাইল্যান্ডের ভারপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রী ফুমথাম ওয়েচায়াচাইও ট্রাম্পকে ধন্যবাদ জানিয়ে যুদ্ধবিরতির নীতিগত সমর্থন দিয়েছেন। তবে তিনি বলেন, কম্বোডিয়ার আন্তরিকতা দেখতে হবে, দ্বিপাক্ষিক আলোচনার মাধ্যমেই সমাধান আসতে হবে।

তবে ট্রাম্পের যুদ্ধবিরতির আহ্বানে দুই দেশের ইতিবাচক প্রতিক্রিয়ার পরও শনিবার রাতভর সীমান্তে গোলাগুলি হয়েছে। কম্বোডিয়া অবশ্য আরো আগেই যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দিয়েছে; তাদের সামরিক বাহিনী থাইল্যান্ডের তুলনায় দুর্বল এবং থাই আর্টিলারি বোমাবর্ষণ ও বিমান হামলায় তারা যুদ্ধসরঞ্জাম হারাচ্ছে।

থাইল্যান্ড ও কম্বেডিয়ায় ২৪ জুলাই থেকে শুরু হওয়া সংঘাতে এ পর্যন্ত ৩৩ জন সেনা নিহত এবং হাজারো মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেছেন, তিনি কম্বোডিয়া এবং থাইল্যান্ডের সঙ্গে বাণিজ্য আলোচনা শুরু করার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন। দেশ দুটি আগামী ১ আগস্টের মধ্যে ওয়াশিংটনের সঙ্গে কোনো বাণিজ্য চুক্তিতে না পৌঁছালে আমেরিকার বাজারে ৩৬ শতাংশ শুল্কের মুখে পড়বে। ট্রাম্প জানিয়েছেন, যুদ্ধ বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত বাণিজ্য আলোচনার সুযোগ নেই। 

ট্রাম্প কীভাবে এই পরিস্থিতিতে জড়িত হয়েছেন তা স্পষ্ট নয়, কারণ মাত্র একদিন আগে থাইল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মারিস সাংগিয়াম্পোংসা বলেছিলেন, “আমি মনে করি না আমাদের এখনও তৃতীয় কোনো দেশের মধ্যস্থতার প্রয়োজন।”

মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম এর আগে থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার মধ্যে আলোচনা সহজ করার প্রস্তাব দিয়েছিলেন।

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এই দেশ দুটির মধ্যে মুয়েন থম মন্দির ও এর সংলগ্ন অঞ্চল ঘিরে দীর্ঘদিনের সীমান্ত বিবাদ হঠাৎ সংঘর্ষের চেহারা নেয় গত বৃহস্পতিবার। যুদ্ধবিমান, কামান, ট্যাংক নামিয়ে দুই দেশের স্থল বাহিনী মুখোমুখি যুদ্ধে নেমে পড়ে। উভয় দেশ একে অপরের বিরুদ্ধে প্রথমে গুলি চালানোর অভিযোগ করেছে।

থাইল্যান্ডের দাবি, বৃহস্পতিবার সংঘর্ষ শুরু হয় কম্বোডিয়ার সেনারা সীমান্তে থাই বাহিনীর ওপর ড্রোন দিয়ে নজরদারি চালানোয়। তবে কম্বোডিয়ার অভিযোগ, থাই সেনারা পূর্বের এক চুক্তি লঙ্ঘন করে সীমান্তবর্তী একটি খেমার-হিন্দু মন্দির এলাকায় অগ্রসর হওয়ায় সংঘর্ষ শুরু হয়। 

মূলত মে মাসের শেষদিকে এক কম্বোডিয় সেনার মৃত্যু ঘিরে সীমান্তে উত্তেজনা শুরু হয়। এরপর থেকেই দুই দেশ সীমান্তে সেনা সংখ্যা ও অস্ত্রভাণ্ডার বাড়াতে থাকে। তবে, দুই দেশের মধ্যে বিরোধ ১০০ বছরেরও বেশি সময় আগে থেকে চলে আসছে, যখন ফরাসিরা কম্বোডিয়া দখলের পর দুই দেশের সীমানা নির্ধারণ করা হয়েছিল।

ঢাকা/ফিরোজ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর য ক তর ষ ট র কম ব ড য কম ব ড য়

এছাড়াও পড়ুন:

মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার

রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।

গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।

সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।

ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ