মুন্সিগঞ্জে কারাবন্দী আওয়ামী লীগের নেতা সারোয়ার হোসেন মারা গেছেন। আজ রোববার ভোররাত ৪টা ১০ মিনিটে মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।

সারোয়ার হোসেন (৬০) মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। তিনি গত বছরের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে মুন্সিগঞ্জ শহরে গুলিতে নিহত সজল মোল্লা হত্যা মামলার আসামি ছিলেন। গত ৫ মে থেকে তিনি মুন্সিগঞ্জ কারাগারে বন্দী ছিলেন।

কারাগার সূত্রে জানা গেছে, গতকাল শনিবার দিবাগত রাত সাড়ে তিনটার দিকে সারোয়ার হোসেন বুকে ব্যথা অনুভব করেন। কারা কর্তৃপক্ষ তাঁকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে পাঠায়। পরে ভোররাত ৪টা ১০ মিনিটে তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।

মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক আহমেদ কবির প্রথম আলোকে বলেন, ভোররাত চারটার দিকে সারোয়ার হোসেনকে হাসপাতালে আনা হয়। তখন তাঁর অবস্থা খুব খারাপ ছিল। অনেক সময় পরপর নিশ্বাস নিচ্ছিলেন। চিকিৎসা শুরু করা হলে ভোররাত ৪টা ১০ মিনিটের দিকে তিনি মারা যান। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে।

সারোয়ার হোসেনের মেয়ে সৌফি সারোয়ার (৩০) অভিযোগ করে বলেন, ‘আমার বাবা দিবাগত রাত তিনটার দিকেই কারাগারে মারা গিয়েছিলেন। পরবর্তী সময়ে তাঁকে হাসপাতালে আনা হয়। ভোরে আমাদের খবর দেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা যখন খুব ছোট ছিলাম, তখন তিনি রাজনীতি করতেন। এরপর দীর্ঘ সময় কোনো রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। সাবেক সংসদ সদস্য মোহাম্মদ ফয়সাল আমাদের আত্মীয় ছিলেন। সে কারণেই তাঁকে হত্যা মামলার আসামি করা হয়েছে।’

মুন্সিগঞ্জ কারাগারের সুপার মো.

এনায়েত উল্লাহ প্রথম আলোকে বলেন, আজ বেলা আড়াইটার দিকে ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

আবু সাঈদ হত্যা মামলায় অভিযোগ গঠন বিষয়ে আদেশ ৬ আগস্ট

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের প্রথম শহীদ রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ হত্যায় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় অভিযোগ গঠন হবে কি না, সে বিষয়ে আদেশ আগামী ৬ আগস্ট।

বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-২ আজ বুধবার এ তারিখ ধার্য করেন। ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন বিচারক মো. মঞ্জুরুল বাছিদ ও বিচারক নূর মোহাম্মদ শাহরিয়ার কবীর। এই মামলায় ৩০ জনকে আসামি করা হয়েছে। এর মধ্যে ২৪ আসামি পলাতক।

আরও পড়ুনআবু সাঈদ হত্যা: ‘ঘটনাস্থলে ছিলেন না’ দাবি করে দুই আসামির অব্যাহতির আবেদন২৯ জুলাই ২০২৫

আজ শুনানির সময় গ্রেপ্তার ছয়জনকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। এর আগে এই মামলায় পলাতক ২৪ আসামির পক্ষে রাষ্ট্র নিযুক্ত চারজন আইনজীবী ও গ্রেপ্তার আসামিদের পক্ষের আইনজীবীরা অভিযোগ থেকে অব্যাহতি চেয়ে দুই দিন শুনানি করেন। আর প্রসিকিউশন পক্ষে চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম মামলায় অভিযোগ গঠনের আরজি জানান।

গত ৩০ জুন আবু সাঈদ হত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ৩০ জনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আমলে নেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২।

সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন যখন সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছিল, তখন ১৬ জুলাই দুপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে পার্ক মোড়ে গুলিবিদ্ধ হন আবু সাঈদ। ২৫ বছর বয়সী আবু সাঈদ বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের কোটা সংস্কার আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক ছিলেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ