ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে গতকাল ভারত ও ইংল্যান্ডের মধ্যে ড্র হওয়া চতুর্থ টেস্টে পাকিস্তানের জার্সি পরে গ্যালারিতে এসেছিলেন এক সমর্থক। মাঠের নিরাপত্তাকর্মী তাঁকে জার্সিটি ঢেকে ফেলতে বলেন। এ ঘটনার তদন্তে নেমেছে ল্যাঙ্কাশায়ার। কাউন্টি দলটির ঘরের মাঠ ওল্ড ট্র্যাফোর্ড।

পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, সেই দর্শকের নাম ফারুক নজর। জার্সি ঢেকে ফেলার নির্দেশ পাওয়ার প্রমাণ রাখতে তিনি এই ঘটনার ভিডিও পোস্ট করেছেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। শুরুতে মাঠের নিরাপত্তারক্ষীদের এক সদস্য এসে ফারুককে জার্সি ঢেকে রাখার অনুরোধ করেন। এ সময় ফারুকের গায়ে ছিল সংক্ষিপ্ত সংস্করণে পাকিস্তানের সবুজ রঙিন জার্সি।

আরও পড়ুনস্টোকসের ‘হ্যান্ডশেকের’ প্রস্তাবে কেন রাজি হয়নি ভারত৯ ঘণ্টা আগে

ইএসপিএনক্রিকইনফো জানিয়েছে, সেই নিরাপত্তারক্ষী নিজেকে ল্যাঙ্কাশায়ারের হয়ে কাজ করেন বলে পরিচয় দিয়েছেন। তিনি ফারুকের কাছে গিয়ে বলেছেন, ‘আমাকে কন্ট্রোল রুম থেকে বলা হয়েছে, আপনি যদি ওই শার্টটা ঢেকে রাখতে পারেন, ভালো হয়। পরে আরেকজন স্টুয়ার্ড এসে বলেন, জার্সিটা “জাতীয়তাবাদী” হিসেবে বিবেচিত হতে পারে।’

ভিডিওতে দেখা যায়, বারবার অনুরোধে বিরক্ত ও উত্তেজিত হয়ে পড়েন ফারুক। একপর্যায়ে একজন পুলিশ কর্মকর্তা এসে তাঁকে আলাদা জায়গায় গিয়ে কথা বলতে বলেন। পরবর্তী সময়ে সংবাদমাধ্যমের খবরে জানা যায়, ফারুক জার্সি ঢাকার পরিবর্তে স্টেডিয়াম ছেড়ে চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।

ভারত-পাকিস্তানের রাজনৈতিক সম্পর্কে কয়েক বছর ধরেই উত্তেজনা বিরাজ করছে। চলতি বছর মে মাসে দুই দেশের সীমান্তে একটি সামরিক সংঘাতের পর সেই উত্তেজনা আরও তীব্র হয়। এই টানাপোড়েনের ছায়া পড়েছে দুই দেশের ক্রিকেট সম্পর্কেও।

আরও পড়ুনগিল-সুন্দর-জাদেজার সেঞ্চুরিতে ভারতের জয়ের সমান এক ড্র২২ ঘণ্টা আগে

২০১২–১৩ সালের পর আর কোনো দ্বিপক্ষীয় সিরিজ খেলেনি ভারত-পাকিস্তান। টেস্ট ক্রিকেটে মুখোমুখি হওয়ার ঘটনা আরও পুরোনো—২০০৭–০৮ মৌসুমে। এমনকি আইসিসি টুর্নামেন্টে অংশ নেওয়ার সময় একে অন্যের দেশে গিয়ে খেলাতেও তৈরি হয় জটিলতা। ফলে সম্প্রতি দুই দলের ম্যাচ নিরপেক্ষ ভেন্যুতে আয়োজন করতে হচ্ছে ‘হাইব্রিড মডেল’-এর অংশ হিসেবে।

ওল্ড ট্রাফোর্ডে ভারত–ইংল্যান্ড টেস্ট ড্র হয়.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

ইসিকে নিশানা করে ‘অ্যাটম বোমা’ ফাটালেন রাহুল গান্ধী, এখনো বাকি ‘হাইড্রোজেন বোমা’

ভারতের নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে ভোটচুরির অভিযোগ এনে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী বলেছিলেন, এটা ‘অ্যাটম বোমা’। তবে আরও ভয়ংকর তথ্য তিনি পরে আনবেন, যা ‘হাইড্রোজেন বোমার সমতুল্য’।

আজ বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে আবার বিস্ফোরক অভিযোগ এনে রাহুল বলেন, নির্বাচন কমিশনের মদদে কিছু লোক, সংস্থা ও কল সেন্টার সংগঠিতভাবে কেন্দ্রে কেন্দ্রে বেছে বেছে কংগ্রেস, দলিত, আদিবাসী ভোটারদের নাম বাদ দিচ্ছে।

আজ সংবাদ সম্মেলন করে রাহুল বলেন, নির্দিষ্ট সফটওয়্যারের মাধ্যমে নকল আবেদন করে ভোটারদের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে।

‘অ্যাটম বোমা’ ফাটানোর দিন রাহুল কর্ণাটকের মহাদেবপুরা বিধানসভা কেন্দ্রের ‘ভোট চুরির’ নমুনা পেশ করেছিলেন। আজ তিনি উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরেন কর্ণাটকেরই আলন্দ কেন্দ্রকে।

রাহুলের অভিযোগ, নকল আবেদনের মাধ্যমে ওই কেন্দ্রের ৬ হাজার ১৮ জন ভোটারের নাম বাদ দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে। যেসব কেন্দ্রে কংগ্রেস শক্তিশালী, বেছে বেছে সেসব কেন্দ্রকেই নিশানা করা হয়েছে। ভুয়া ভোটারের নাম তোলার পাশাপাশি বৈধ ভোটারদের নাম বাদ দেওয়া হচ্ছে। এটা সংগঠিতভাবে করা হচ্ছে। কর্ণাটক পুলিশ সেই বিষয়ে তথ্য জানতে চাইলেও নির্বাচন কমিশন কোনো তথ্য দিচ্ছে না।

রাহুলের অভিযোগ, যাঁদের নামে আবেদন জানানো হচ্ছে এবং যাঁদের নাম মোছার আরজি জানানো হচ্ছে, তাঁদের কেউ–ই তা জানতে পারছেন না। সংবাদ সম্মেলনে এই ধরনের কিছু মানুষকে রাহুল হাজিরও করান।

কিছু নম্বরও দাখিল করে রাহুল বলেন, এসব নম্বর থেকে ভোটারদের নাম বাদ দেওয়ার আবেদন জানানো হয়। তাঁর প্রশ্ন, ওই নম্বরগুলোয় ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড বা ‘ওটিপি’ কীভাবে গেল?

কংগ্রেস নেতা বলেন, নির্দিষ্ট কিছু ঠিকানা থেকে নির্দিষ্ট ‘আইপি’ অ্যাড্রেস ব্যবহার করে নাম বাদ দেওয়ার আবেদন জানানো হচ্ছে। অভিযোগ তদন্ত করে দেখতে কর্ণাটক পুলিশের গোয়েন্দারা ইসির কাছে কিছু তথ্য চেয়েছিলেন। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) জ্ঞানেশ কুমার কোনো তথ্যই দেননি। এতেই বোঝা যাচ্ছে, ইসি ভোটচোরদের আড়াল করছে।

রাহুল বলেন, কর্ণাটক সিআইডি ভোটারদের নাম বাদ দেওয়া বিষয়ে তথ্য জানতে চেয়ে ইসিকে ১৮ বার চিঠি লিখেছে। অথচ একটি চিঠিরও জবাব ইসি দেয়নি। ইসিকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে রাহুল বলেন, কমিশন স্বচ্ছ হলে এক সপ্তাহের মধ্যে কর্ণাটক সিআইডিকে যাবতীয় তথ্য দিয়ে সাহায্য করুক।

রাহুল মহারাষ্ট্রের রাজুরা বিধানসভা আসনের ভোটার তালিকা তুলে ধরে বলেন, সেখানে অনলাইনে ৬ হাজার ৮৫০ জনের নাম অবৈধভাবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তাঁর অভিযোগ, বিভিন্ন রাজ্যে ভোটার তালিকায় এভাবে সংযোজন–বিয়োজন চলছে।

এর আগেও রাহুল নিশানা করেছিলেন সিইসি জ্ঞানেশ কুমারকে। আজও তিনি তাঁকে কাঠগড়ায় তোলেন। রাহুল বলেন, নির্বাচন স্বচ্ছ ও অবাধ করার বদলে তিনি পক্ষপাতমূলক আচরণ করেই চলেছেন। ভোট চুরি করাচ্ছেন। ভোটচোরদের রক্ষাও করছেন।

রাহুলের অভিযোগ এবারও খারিজ করে দিয়েছে ইসি। রাহুলের ডাকা সংবাদ সম্মেলনের পর আজ ইসি এক বিবৃতি দেয়। তাতে রাহুলের অভিযোগ ‘অসত্য ও ভিত্তিহীন’ জানিয়ে বলা হয়, অনলাইনে কেউ কোনো ভোটারের নাম বাদ দিতে পারেন না। নাম বাদ দেওয়ার আগে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বক্তব্য শোনা হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ