বিতর্কিত পুনর্নির্বাচনের বর্ষপূর্তিতে ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলা মাদুরোর বিরুদ্ধে ‘গোপন’ প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন দেশটির বিরোধীদলীয় নেত্রী মারিয়া কোরিনা মাচাদো।

ভেনেজুয়েলায় ২০২৪ সালের জুলাইয়ের সর্বশেষ প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অনুষ্ঠিত হয়। এতে জালিয়াতির অভিযোগ ও ভোটের বিস্তারিত ফলাফল প্রকাশ না করেই মাদুরোকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়।

ভেনেজুয়েলার বিরোধীদের দাবি, তাদের প্রার্থী এদমুন্দো গোনসালেস উররুতিয়াই প্রকৃত বিজয়ী। সাবেক এই কূটনীতিক নির্বাচনের পর নির্বাসনে চলে যান। বিরোধীদের পক্ষ থেকে মূলত নির্বাচন করতে চেয়েছিলেন মারিয়া কোরিনা মাচাদো। কিন্তু তাঁকে নির্বাচনে অংশ নিতে দেওয়া হয়নি। নির্বাচনের পর থেকে তিনি আত্মগোপনে রয়েছেন।

সোমবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত একটি ভিডিও বার্তায় মাচাদো বলেন, মাদুরো সেনাবাহিনী বা বিদেশি শক্তির দ্বারা ‘আক্রান্ত বা ক্ষমতাচ্যুত হওয়া নিয়ে খুব বেশি আতঙ্কিত’। কিন্তু এই বিরোধী নেত্রীর দাবি, ভেনেজুয়েলার লাখ লাখ মানুষই তাঁকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেবেন।

এদিকে ভেনেজুয়েলা কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, মাচাদো মাদুরোর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চালাচ্ছেন। গত জুলাইয়ের নির্বাচনের পর থেকে মাচাদোর ঘনিষ্ঠ সহযোগীসহ প্রায় এক হাজার নেতাকে আটক করা হয়েছে।

মাচাদো ভেনেজুয়েলার ভেতরে থাকা সব স্তরের কাঠামোর ‘গোপন সংগঠনের’ প্রতি স্বৈরতন্ত্রের অবাধ্য হয়ে সাংবিধানিক পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য প্রস্তুতির আহ্বান জানিয়েছেন। যাতে সময় এলে তাঁরা পুরোদমে সরকারবিরোধিতা শুরু করতে পারেন।

মাচাদোর নেতৃত্বাধীন বিরোধী জোট গত ২৫ মে পার্লামেন্ট ও প্রাদেশিক নির্বাচন এবং গত সপ্তাহান্তে অনুষ্ঠিত মেয়র নির্বাচন বর্জনের ডাক দিয়েছিল।

দুই নির্বাচনেই মাদুরোর দল সহজে জয় পেয়েছে। সোমবার প্রেসিডেন্ট প্রাসাদ মিরাফ্লোরেসের বাইরে জয় উদ্‌যাপন করেন মাদুরো। কড়া ভাষায় তিনি সমালোচনার জবাব দেন।

মাদুরো বলেন, ‘ফ্যাসিবাদীরা যথেষ্ট করেছে। আর কোনো ষড়যন্ত্র নয়, আর কোনো বিদেশি হস্তক্ষেপের আহ্বান নয়, আর কোনো অর্থনৈতিক যুদ্ধ নয়। ফ্যাসিবাদকে যথেষ্ট সুযোগ দেওয়া হয়েছে, এখন আর কোনো সহিংসতা নয়। ভেনেজুয়েলা কাজ চায়, সমৃদ্ধি চায়। আমরা ঐক্য চাই।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আর ক ন

এছাড়াও পড়ুন:

নির্বাচন বাতিলের সব ষড়যন্ত্র রুখে দেওয়ার আহ্বান সিপিবির

আগামী জাতীয় নির্বাচন ঘিরে ‘নির্বাচন বাতিল বা বিলম্বের ষড়যন্ত্র’ রুখে দিতে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)। দলটি বলেছে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন ও শোষণমুক্ত সমাজ গড়তে হলে সাম্রাজ্যবাদ ও পুঁজিবাদবিরোধী আন্দোলনকে জোরদার করতে হবে।

শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর মিরপুরের ঈদগাহ মাঠসংলগ্ন সেনপাড়ায় সিপিবি ঢাকা মহানগর উত্তরের উদ্যোগে আয়োজিত জনসভায় এ আহ্বান জানানো হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন মহানগর উত্তরের সভাপতি হাসান হাফিজুর রহমান এবং সভা পরিচালনা করেন সংগঠনের এই শাখার সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য ফেরদৌস আহমেদ।

সভায় প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিপিবির সভাপতি কাজী সাজ্জাদ জহির। আরও বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন, কেন্দ্রীয় সদস্য ও মহানগর উত্তরের সাবেক সভাপতি আহাম্মদ সাজেদুল হক, মহানগর উত্তরের সাধারণ সম্পাদক লূনা নূর, সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য মোতালেব হোসেন ও মহানগর কমিটির সদস্য রিয়াজ উদ্দিন।

সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে কাজী সাজ্জাদ জহির বলেন, মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে অর্জিত চার মূলনীতি সমুন্নত রাখতে হবে। শোষণ ও বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠার সংগ্রামকে বেগবান করতে শ্রমিক, কৃষক, যুব ও নারী সমাজকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে মাঠে নামতে হবে। বামপন্থীদের সরকার গঠন করতে সব দেশপ্রেমিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। তাঁদের নেতৃত্বেই আগামী দিনের ক্ষমতায় লড়াইকে অগ্রসর করতে হবে।

সিপিবির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রুহিন হোসেন বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে যাদের অবস্থান ছিল, আজ তারাই রাষ্ট্র ও সমাজের বিভিন্ন স্তরে পৃষ্ঠপোষকতা পাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে কেবল ক্ষমতার পরিবর্তন নয়, ব্যবস্থার পরিবর্তনই সময়ের দাবি। কমিউনিস্টরা সেই ব্যবস্থার পরিবর্তনের সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে। আমরা আহ্বান জানাই, গণতন্ত্রের প্রথম শর্ত হলো নিরপেক্ষ ও সময়োপযোগী নির্বাচন। আগামীকাল থেকেই আমরা জাতীয় নির্বাচনের কাউন্টডাউন (ক্ষণগণনা) দেখতে চাই।’

নির্বাচনের কাউন্টডাউন শুরু না হলে জনগণের মধ্যে অনিশ্চয়তা বাড়বে বলে উল্লেখ করেন রুহিন হোসেন। তিনি বলেন, ‘গণতন্ত্রের প্রথম শর্ত হলো নিরপেক্ষ ও সময়োপযোগী নির্বাচন। সরকারকে দ্রুত নির্বাচনের নির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণা করতে হবে। কমিউনিস্টরা ক্ষমতায় গিয়ে দুর্নীতি, লুটপাট ও শোষণের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা বদলের সংগ্রামকে জনগণের আন্দোলনে রূপ দেবে।’

সাম্রাজ্যবাদী শক্তি ও তাদের দেশীয় দোসরদের হাতে দেশের সম্পদ লুট হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন সিপিবির ঢাকা মহানগর উত্তরের সাবেক সভাপতি আহাম্মদ সাজেদুল হক। তিনি বলেন, বাংলাদেশের জনগণ এখনো অনিশ্চিত যে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে কি না। কারণ, বর্তমান সরকার এখনো সুনির্দিষ্টভাবে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেনি। জনগণ আজ অর্থনৈতিক সংকট, বৈষম্য ও দুর্নীতির শিকার। একদিকে জনগণের ঘামঝরানো টাকায় দেশ চলছে, অন্যদিকে সাম্রাজ্যবাদী শক্তি ও তাদের দোসররা দেশের সম্পদ লুট করছে। সমুদ্রবন্দর, গ্যাস, বিদ্যুৎ, টেলিযোগাযোগসহ জাতীয় সম্পদ বিদেশিদের হাতে তুলে দেওয়ার চক্রান্ত চলছে। এটি দেশের সার্বভৌমত্ব ও স্বাধীনতার ওপর সরাসরি আঘাত।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • দ্রুত নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করুন: দুলু
  • অদৃশ্য শক্তি ও ফ্যাসিষ্টরা নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত খোরশেদ
  • নির্বাচন বাতিলের সব ষড়যন্ত্র রুখে দেওয়ার আহ্বান সিপিবির