নওগাঁর মান্দা উপজেলায় ১৫ বছর আগে এক কিশোরীকে (১৭) ধর্ষণের অভিযোগে করা মামলায় দুজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাঁদের এক লাখ টাকা করে অর্থদণ্ড, অনাদায়ে ছয় মাসের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২-এর বিচারক জেলা ও দায়রা জজ মেহেদী হাসান তালুকদার এ রায় দেন। দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা হলেন মান্দা উপজেলার চকদেবীরামপুর গ্রামের রবিউল ইসলাম ও বালুবাজার গ্রামের মোরশেদ হোসেন। রাষ্ট্রপক্ষের বিশেষ কৌঁসুলি রেজাউল ইসলাম রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

আদালত–সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, রায় ঘোষণার সময় দুই আসামি আদালতে হাজির ছিলেন। পরে তাঁদের কারাগারে পাঠানো হয়।

মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা যায়, কিশোরীর সঙ্গে রবিউল ইসলামের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। ২০১০ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি বিয়ের প্রলোভনে রবিউল তাকে মোরশেদের বাড়িতে নিয়ে ধর্ষণ করেন। ওই সময় মুঠোফোনে ধর্ষণের দৃশ্য ধারণ করেন। পরে রবিউল ওই কিশোরীকে বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানান। এরপর কিশোরীর পরিবার তাকে অন্যত্র বিয়ে দেয়। কিশোরীর বিয়ে হওয়ার পর রবিউল তার স্বামীকে ধর্ষণের ছবি ও ভিডিও পাঠান। যে কারণে ওই কিশোরীর স্বামী তাকে তালাক দেন। ধর্ষণের শিকার কিশোরীকে আবার বিয়ে দিলে দ্বিতীয় স্বামীকেও রবিউল ছবি ও ভিডিও পাঠান। এ ঘটনার পর ওই কিশোরীর দ্বিতীয় স্বামী তাঁকে আইনের আশ্রয় নেওয়ার জন্য পরামর্শ দেন।

আদালত-সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ২০১২ সালে ভুক্তভোগী কিশোরী আদালতে মামলা করে। আদালতের নির্দেশে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) তদন্ত করে রবিউল, মোরশেদসহ তিনজনের বিরুদ্ধে প্রতিবেদন দেয়। ১২ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য ও যুক্তিতর্ক শেষে আদালত রবিউল ও মোরশেদকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। অপর আসামিকে খালাস দেওয়া হয়।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

ঢাবি থেকে ড. জাকির নায়েককে ডক্টরেট দেওয়ার দাবি শিক্ষার্থীদের

তুলনামূলক ধর্মতত্ত্বের ওপর বিশ্ববরেণ্য ইসলামী বক্তা ড. জাকির নায়েককে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) পক্ষ থেকে সম্মানসূচক ‘ডক্টরেট ডিগ্রি’ দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন একদল শিক্ষার্থী।

সোমবার (৩ নভেম্বর) এ দাবিতে ঢাবি উপ-উপাচার্যের (প্রশাসন) কাছে স্মারকলিপি দিয়েছেন তারা। স্মারকলিপি প্রদান শেষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন এ তথা জানান তারা।

আরো পড়ুন:

বিএনপি ক্ষমতার একচ্ছত্র দখলদারি বহাল রাখতে চায়: ডাকসু

ঢাবি শিক্ষার্থীদের মানবিক মূল্যবোধে উদ্বুদ্ধ করতে ২ কমিটি

সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীরা বলেন, ড. জাকির নায়েক একজন আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত ইসলামী চিন্তাবিদ ও মানবতাবাদী সংগঠক। তিনি শুধু ইসলাম প্রচারই করেননি, বরং মানবকল্যাণে নানা উদ্যোগ নিয়েছেন। তার প্রতিষ্ঠিত ‘ইউনাইটেড এইড’ নামের সংগঠনের মাধ্যমে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের হাজারো শিক্ষার্থী বৃত্তি ও সহযোগিতা পাচ্ছে। এসব কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে তিনি বিশ্বমঞ্চে মানবতার প্রতিনিধি হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছেন।

তারা বলেন, ভারতের উগ্র হিন্দুত্ববাদী সরকারের ষড়যন্ত্রে তাকে দেশত্যাগে বাধ্য করা হলেও মালয়েশিয়া তাকে রাষ্ট্রীয় অতিথি হিসেবে গ্রহণ করেছে। এমন একজন মানবতাবাদী ও জ্ঞানচর্চার প্রতীক ব্যক্তিত্বকে যদি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সম্মানসূচক ডক্টরেট উপাধিতে ভূষিত করে, তাহলে তা দেশের মর্যাদাকে আরো উজ্জ্বল করবে।

এ সময় তারা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে বিশেষ সমাবর্তনের মাধ্যমে ড. জাকির নায়েককে ডিগ্রি প্রদান করে দাবি জানান।

এছাড়া তারা ক্যাম্পাসে নারী শিক্ষার্থীদের প্রতি ক্রমবর্ধমান বুলিং, হ্যারাসমেন্ট ও ধর্মীয় উস্কানিমূলক বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে তারা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো জ্ঞানচর্চার স্থানে নারী শিক্ষার্থীদের প্রতি অশোভন আচরণ ও অনলাইন বুলিং উদ্বেগজনকভাবে বাড়ছে। আমরা উপাচার্যের সঙ্গে আলোচনায় জেনেছি, ইতোমধ্যেই হ্যারাসমেন্ট ও সাইবার ট্যাগিং প্রতিরোধে কমিটি গঠন করা হয়েছে। তবে এসব কমিটি দ্রুত কার্যকর করতে হবে, যাতে অপরাধীরা শাস্তির আওতায় আসে।
 

ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ