নওগাঁয় ১৫ বছর আগের ধর্ষণের ঘটনায় দুজনের যাবজ্জীবন
Published: 31st, July 2025 GMT
নওগাঁর মান্দা উপজেলায় ১৫ বছর আগে এক কিশোরীকে (১৭) ধর্ষণের অভিযোগে করা মামলায় দুজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাঁদের এক লাখ টাকা করে অর্থদণ্ড, অনাদায়ে ছয় মাসের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২-এর বিচারক জেলা ও দায়রা জজ মেহেদী হাসান তালুকদার এ রায় দেন। দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা হলেন মান্দা উপজেলার চকদেবীরামপুর গ্রামের রবিউল ইসলাম ও বালুবাজার গ্রামের মোরশেদ হোসেন। রাষ্ট্রপক্ষের বিশেষ কৌঁসুলি রেজাউল ইসলাম রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আদালত–সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, রায় ঘোষণার সময় দুই আসামি আদালতে হাজির ছিলেন। পরে তাঁদের কারাগারে পাঠানো হয়।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা যায়, কিশোরীর সঙ্গে রবিউল ইসলামের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। ২০১০ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি বিয়ের প্রলোভনে রবিউল তাকে মোরশেদের বাড়িতে নিয়ে ধর্ষণ করেন। ওই সময় মুঠোফোনে ধর্ষণের দৃশ্য ধারণ করেন। পরে রবিউল ওই কিশোরীকে বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানান। এরপর কিশোরীর পরিবার তাকে অন্যত্র বিয়ে দেয়। কিশোরীর বিয়ে হওয়ার পর রবিউল তার স্বামীকে ধর্ষণের ছবি ও ভিডিও পাঠান। যে কারণে ওই কিশোরীর স্বামী তাকে তালাক দেন। ধর্ষণের শিকার কিশোরীকে আবার বিয়ে দিলে দ্বিতীয় স্বামীকেও রবিউল ছবি ও ভিডিও পাঠান। এ ঘটনার পর ওই কিশোরীর দ্বিতীয় স্বামী তাঁকে আইনের আশ্রয় নেওয়ার জন্য পরামর্শ দেন।
আদালত-সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ২০১২ সালে ভুক্তভোগী কিশোরী আদালতে মামলা করে। আদালতের নির্দেশে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) তদন্ত করে রবিউল, মোরশেদসহ তিনজনের বিরুদ্ধে প্রতিবেদন দেয়। ১২ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য ও যুক্তিতর্ক শেষে আদালত রবিউল ও মোরশেদকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। অপর আসামিকে খালাস দেওয়া হয়।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার
রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।
গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।
সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।
ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’