উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে তিস্তা নদীর পানি বেড়ে বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে। এর ফলে লালমনিরহাট জেলার কালীগঞ্জ, হাতীবান্ধা ও আদিতমারী উপজেলার বিস্তীর্ণ নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। 

পানির কারণে ঘরবাড়ি ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন শত শত পরিবার। অনেকে গবাদি পশু ও সন্তানদের নিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন বাঁধ ও বিদ্যালয়ে। প্লাবিত মানুষদের রাত কেটেছে চরম আতঙ্ক ও অনিশ্চয়তার মধ্যে—কখন যে বাঁধ ভেঙে পানি ঢুকে পড়ে, সেই ভয়ে নির্ঘুম রাত পার করেছেন তারা।

রবিবার (৩ জুলাই) সারা দিন তিস্তার পানি বিপৎসীমার ওপরে থাকায় অনেকে বাড়ি ছেড়েছেন। পানি আরো বাড়াও আশঙ্কা করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। ফলে লোকজনকে নিরাপদ স্থানে সরে যেতে বলেছে প্রশাসন।

পাউবো সূত্রে জানা গেছে, গতকাল তিস্তার পানি বিপৎসীমার ৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। এতে লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ, হাতীবান্ধা ও আদিতমারী উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।

জেলা প্রশাসক এইচ.

এম. রকিব হায়দার বলেন, “পাহাড়ি ঢল আর অতিরিক্ত বৃষ্টির কারণে তিস্তার পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আমরা সার্বক্ষণিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি এবং বন্যা মোকাবিলায় আমাদের সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে।”

তিনি আরো বলেন, “বন্যাকবলিত পরিবারগুলোর মাঝে ত্রাণ বিতরণ শুরু হয়েছে। প্রতিটি পরিবারকে শুকনো খাবার, চিঁড়া ও গুড়সহ জরুরি ত্রাণসামগ্রী দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া, যেকোনো জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলায় বন্যা আশ্রয়কেন্দ্রগুলো প্রস্তুত রাখা হয়েছে। আমরা নদী তীরবর্তী মানুষদের নিরাপদ স্থানে সরে যেতে অনুরোধ করছি এবং তাদের সব ধরনের সহায়তা নিশ্চিত করতে প্রশাসন কাজ করে যাচ্ছে।” 

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, পানি বাড়ার পরও পানি উন্নয়ন বোর্ডের পক্ষ থেকে নামমাত্র কাজ করা হচ্ছে। প্রতিবারের মতো এবারও জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন ঠেকানোর চেষ্টা করা হলেও তা খুব একটা কাজে আসছে না। পানি বেড়ে অনেক রাস্তা পানির নিচে তলিয়ে গেছে। ফলে যেকোনো মুহূর্তে বাঁধ ভেঙে শহরে পানি ঢুকে পড়ার আশঙ্কা করছেন তারা।
দ্রুত অবৈধ স্থাপনা অপসারণ ও টেকসই ভাঙন প্রতিরোধে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার দাবিও জানিয়েছেন তারা।

ঢাকা/নিয়াজ/ইভা

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব পৎস ম

এছাড়াও পড়ুন:

২৭ নভেম্বর জকসু নির্বাচন না হলে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রতারণা হবে: আপ বাংলাদেশ

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জকসু) নির্বাচন ২৭ নভেম্বরেই অনুষ্ঠিত না হলে তা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রশাসনের প্রতারণা বলে মন্তব্য করেছে ইউনাইটেড পিপলস (আপ) বাংলাদেশ। এ সময় পাঁচ দফা দাবি তুলে ধরে সংগঠনটি।

সোমবার (৩ নভেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষা শহীদ রফিক ভবনের নিচে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি তুলে ধরা হয়েছে।

আরো পড়ুন:

২৭ নভেম্বরই জকসু নির্বাচন চায় ছাত্রশিবির

জকসু নির্বাচন নিয়ে একে অপরকে দোষারোপ ছাত্র সংগঠনগুলোর

দাবিগুলো হলো— আসন্ন জকসু নির্বাচন ২৭ নভেম্বরেই অনুষ্ঠিত করতে হবে; নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে; নির্বাচন কমিশনের পূর্ণ নিরপেক্ষতা ও স্বাধীনতা রক্ষায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে কার্যকর ভূমিকা রাখতে হবে; সব সংগঠনকে সমান সুযোগ দিয়ে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে হবে; অরাজনৈতিক, নিরাপদ ও শিক্ষার্থীবান্ধব পরিবেশ গড়ে তুলতে প্রশাসনকে উদ্যোগ নিতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে আপ বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সদস্য ও জবির প্রধান সংগঠক মাসুদ রানা বলেন, “আমরা যখন জকসুর দাবিতে অনশন করছিলাম, তখন প্রশাসন ২৭ নভেম্বরের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রতিশ্রুতি দিয়ে আমাদের অনশন ভাঙিয়েছিল। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে, একটি মহল নির্বাচন পেছানোর পাঁয়তারা করছে।”

তিনি বলেন, “ডিসেম্বর মাসে ভর্তি পরীক্ষা ও বিভিন্ন বিভাগের ফাইনাল পরীক্ষা থাকায় ওই মাসে নির্বাচন অসম্ভব। তাই ২৭ নভেম্বরই জকসু নির্বাচনের উপযুক্ত সময়।”

তিনি আরো বলেন, “আমরা জানতে চাই, নির্বাচন পেছানোর মধ্য দিয়ে জকসু নির্বাচন ভণ্ডুল করার কোনো প্রক্রিয়া চলছে কিনা। পুরান ঢাকাকে অস্থিতিশীল করে একটি মহল নির্বাচন পণ্ড করতে চায়। শিক্ষার্থীদের জীবনের প্রথম ভোট হবে জকসু নির্বাচন—তা থেকে কাউকে বঞ্চিত করা যাবে না।”

ঢাকা/লিমন/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ