দুই হাজার বছরের পুরোনো বীজ থেকে চারা উৎপাদন
Published: 4th, August 2025 GMT
বিজ্ঞানীরা প্রায় দুই হাজারের বছরের পুরোনো প্রাচীন বীজ থেকে চারা গাছ জন্মাতে সক্ষম হয়েছেন। সেই চারা গাছ থেকে রীতিমতো গাছ বিকশিত হচ্ছে। বিজ্ঞানীদের তথ্যমতে, দুই হাজার বছর আগে ব্যবসায়ীরা জেরুজালেমে জুডিয়ার ধুলোময় রাস্তা ধরে ঝুড়িতে খেজুর টেনে নিয়ে যেতেন। সেই পথের গর্তে পড়ে থাকা খেজুর বীজ থেকে নতুন করে চারা উৎপাদন করে দক্ষিণ ইসরায়েলের আরাভা মরুভূমিতে খেজুর গাছ রোপণ করা হচ্ছে।
বর্তমানে প্রাচীন বীজের অঙ্কুরোদগমের বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। উৎপাদিত গাছের জিনগত সূত্র দীর্ঘদিন ধরে হারিয়ে যাওয়া জুডিয়ান খেজুরগাছের জাতের সঙ্গে মিলে যাচ্ছে বলে বিজ্ঞানীরা মনে করছেন। জেরুজালেমের হাদাসা মেডিকেল সেন্টারের বিজ্ঞানী সারাহ স্যালন ও আরাভা ইনস্টিটিউটের এলাইন সলোয়ে ২০০৫ সালে প্রথম প্রাচীন বীজ অঙ্কুরিত করার কাজ শুরু করেন। এসব বীজের নাম দেওয়া হয় মেথুসেলাহ।
মধ্যপ্রাচ্যের মাসাদা ও কাছাকাছি মরুভূমির গুহাতে প্রত্নতাত্ত্বিক খননের সময় এই বীজ পাওয়া যায়। শুষ্ক বাতাসের কারণে হাজার বছর ধরে খেজুর বীজ সুরক্ষিত ছিল। বীজ সংগ্রহের জন্য বিজ্ঞানীরা প্রথমে বিভিন্ন গর্তকে উষ্ণ জলে ভিজিয়ে রাখেন। তারপর জীবাণুমুক্ত মাটিতে রোপণের আগে পুষ্টি ও হরমোন দ্রবণে ভিজিয়ে নেন। কিছু বীজ আট সপ্তাহের মধ্যে অঙ্কুরিত হয়। আবার কিছু বীজ আরও সময় নেয়। সব বীজের খোসাকে কার্বন পরীক্ষার মাধ্যমে বিশ্লেষণ করা হয়। বিশ্লেষণে দেখা যায়, বিভিন্ন বীজ খ্রিষ্টপূর্ব চতুর্থ শতাব্দী থেকে খ্রিষ্টপূর্ব দ্বিতীয় শতাব্দীর পুরোনো। বীজ থেকে সবুজ অঙ্কুর আসার পর বিভিন্ন চারাকে একটি পৃথক গ্রিনহাউসে স্থানান্তরিত হয়। গ্রিনহাউসে মরুভূমির সূর্যালোক ও লবণাক্ত পানির প্রাচীন প্লাবনভূমির অবস্থার তৈরি করা হয়।
শুধু রেডিও কার্বনের ফলাফল নিয়ে বিতর্ক হতে পারে। এ জন্য বিজ্ঞানীরা ১০০টি আধুনিক খেজুর জাতের বীজের আকার ও আকৃতির সঙ্গে তুলনা করেছেন। মেথুসেলাহ বীজ থেকে প্রথম পাতা বের হলে মানুষের যত্নে অঙ্কুরিত হওয়া প্রাচীনতম বীজের খেতাব পায়। পাতা বড় হলে গবেষকেরা সম্পূর্ণ জিনোম তৈরি করতে ডিএনএ সিকোয়েন্স ব্যবহার করেন। বিজ্ঞানীরা এত পুরোনো বীজ থেকে আধুনিক সময়ে ফসলের খরা সহনশীলতা, রোগ প্রতিরোধক্ষমতার মতো বিষয়কে কাজের লাগানোর তথ্য জানতে কাজ করছেন। গবেষণার ফলাফল প্রসিডিংস অব দ্য ন্যাশনাল একাডেমি অব সায়েন্সেসে প্রকাশিত হয়েছে।
প্রসঙ্গত, জুডিয়ান খেজুরই একমাত্র প্রাচীন বীজ নয়, যা চাষ করা হয়েছে। ২০১২ সালে রাশিয়ান বিজ্ঞানীরা ৩২ হাজার বছর ধরে মাটিতে জমাট বাঁধা ফল থেকে একটি ফুল জন্মানোর পরীক্ষায় সাফল্য লাভ করেন। ১৯৯০ দশকে আমেরিকান উদ্ভিদবিজ্ঞানী জেন শেন মিলার একটি শুকনা চীনা হ্রদের তলদেশে প্রায় ১ হাজার ৩০০ বছরের পুরোনো পদ্মের বীজ অঙ্কুরিত করেছিলেন।
সূত্র: আর্থ ডটকম
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: হ জ র বছর
এছাড়াও পড়ুন:
ঢাবি থেকে ড. জাকির নায়েককে ডক্টরেট দেওয়ার দাবি শিক্ষার্থীদের
তুলনামূলক ধর্মতত্ত্বের ওপর বিশ্ববরেণ্য ইসলামী বক্তা ড. জাকির নায়েককে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) পক্ষ থেকে সম্মানসূচক ‘ডক্টরেট ডিগ্রি’ দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন একদল শিক্ষার্থী।
সোমবার (৩ নভেম্বর) এ দাবিতে ঢাবি উপ-উপাচার্যের (প্রশাসন) কাছে স্মারকলিপি দিয়েছেন তারা। স্মারকলিপি প্রদান শেষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন এ তথা জানান তারা।
আরো পড়ুন:
বিএনপি ক্ষমতার একচ্ছত্র দখলদারি বহাল রাখতে চায়: ডাকসু
ঢাবি শিক্ষার্থীদের মানবিক মূল্যবোধে উদ্বুদ্ধ করতে ২ কমিটি
সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীরা বলেন, ড. জাকির নায়েক একজন আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত ইসলামী চিন্তাবিদ ও মানবতাবাদী সংগঠক। তিনি শুধু ইসলাম প্রচারই করেননি, বরং মানবকল্যাণে নানা উদ্যোগ নিয়েছেন। তার প্রতিষ্ঠিত ‘ইউনাইটেড এইড’ নামের সংগঠনের মাধ্যমে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের হাজারো শিক্ষার্থী বৃত্তি ও সহযোগিতা পাচ্ছে। এসব কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে তিনি বিশ্বমঞ্চে মানবতার প্রতিনিধি হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছেন।
তারা বলেন, ভারতের উগ্র হিন্দুত্ববাদী সরকারের ষড়যন্ত্রে তাকে দেশত্যাগে বাধ্য করা হলেও মালয়েশিয়া তাকে রাষ্ট্রীয় অতিথি হিসেবে গ্রহণ করেছে। এমন একজন মানবতাবাদী ও জ্ঞানচর্চার প্রতীক ব্যক্তিত্বকে যদি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সম্মানসূচক ডক্টরেট উপাধিতে ভূষিত করে, তাহলে তা দেশের মর্যাদাকে আরো উজ্জ্বল করবে।
এ সময় তারা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে বিশেষ সমাবর্তনের মাধ্যমে ড. জাকির নায়েককে ডিগ্রি প্রদান করে দাবি জানান।
এছাড়া তারা ক্যাম্পাসে নারী শিক্ষার্থীদের প্রতি ক্রমবর্ধমান বুলিং, হ্যারাসমেন্ট ও ধর্মীয় উস্কানিমূলক বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে তারা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো জ্ঞানচর্চার স্থানে নারী শিক্ষার্থীদের প্রতি অশোভন আচরণ ও অনলাইন বুলিং উদ্বেগজনকভাবে বাড়ছে। আমরা উপাচার্যের সঙ্গে আলোচনায় জেনেছি, ইতোমধ্যেই হ্যারাসমেন্ট ও সাইবার ট্যাগিং প্রতিরোধে কমিটি গঠন করা হয়েছে। তবে এসব কমিটি দ্রুত কার্যকর করতে হবে, যাতে অপরাধীরা শাস্তির আওতায় আসে।
ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী