আড়াইহাজার উপজেলার গোপালদী খাদ্য গুদামে সরকারি ধান ক্রয় কার্যক্রমে ঘুষ ও অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে খাদ্য কর্মকর্তা বিরুদ্ধে। এতে সরকারের নির্ধারিত মুল্যে ধান বিক্রি করতে পারছেন না কৃষকরা। এ নিয়ে চরম ক্ষোভ দেখা দিয়েছে কৃষকদের মাঝে।

এদিকে উপজেলার খাগকান্দা ইউনিয়নের বাড়ৈপাড়া গ্রামের কৃষক মো. নজরুল ইসলাম উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন।

অভিযোগে নজরুল ইসলাম উল্লেখ করেন, গুদামের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা গাজী সালাউদ্দিন সরকারি ধান সংগ্রহের জন্য কৃষকদের কাছ থেকে ঘুষ দাবি করছেন। ৩ মে: টন ধান সরবরাহের জন্য তাকে তিন হাজার টাকা ঘুষ দিতে বাধ্য করা হয়েছে। ঘুষ দেওয়ার পর ধান গ্রহণ করা হলেও বিভিন্নভাবে হয়রানির শিকার হতে হয়েছে তাকে।

নজরুল ইসলাম আরও অভিযোগ করেন, যেসব কৃষক ঘুষ দিতে পারছেন না, তারা সরকার নির্ধারিত মূল্যে ধান বিক্রির সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এতে সাধারণ কৃষকরা চরম দুর্ভোগের মধ্যে পড়েছেন। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে দায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য তিনি প্রশাসনের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। 

এই ব্যাপারে খাদ্যগুদাম কর্মকর্তা গাজী সালাউদ্দিন জানান, আমার বিরুদ্ধে অভিযোগটি সঠিক না। মিথ্যা অভিযোগের অজুহাত দিয়ে আমাকে হয়রানি ও আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।

আড়াইহাজার উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: সাজ্জাত হোসেন বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

.

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ কর মকর ত উপজ ল সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

ভয় জয় করলে মিলবে চাকরি—জেনে নিন তিন বড় বাধা

রিফাত ছাত্তার একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ব্যবসায় শিক্ষা শাখায় মাস্টার্স শেষ করেছেন ২০২৩ সালে। পড়াশোনায় ছিলেন ভালো, বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংগঠনিক কাজেও সক্রিয় ছিলেন। পড়াশোনা শেষে টানা দুই বছর ধরে তিনি চাকরি খুঁজছেন। ছোট–বড় মিলিয়ে আবেদন করেছেন প্রায় ২০০টির মতো। হাতে গোনা কয়েকবার সাক্ষাৎকারের ডাক পেলেও শেষ পর্যন্ত কোনো নিয়োগ হয়নি।

রিফাত ছাত্তার বলেন, ‘প্রথম দিকে আত্মবিশ্বাস ছিল অনেক। ভাবতাম, আমি হয়তো দ্রুতই চাকরি পেয়ে যাব। কিন্তু একের পর এক অস্বীকৃতি পেতে পেতে এখন মনে হয়, হয়তো আমার কিছুই হবে না। অনেক সময় নতুন করে আবেদন করারও আগ্রহ পাই না।’

রিফাতের গল্প একা নয়। রাজধানীর বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করা অসংখ্য তরুণ–তরুণীর কণ্ঠে শোনা যায় একই হতাশা।

নেটওয়ার্কিং এড়িয়ে গেলে চাকরি পাওয়ার সম্ভাবনা কমে যায় বহুগুণ। ১৫ হাজার চাকরির আবেদনের বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ৬ শতাংশ আবেদন এসেছে পরিচিতদের রেফারেলের মাধ্যমে, সেখান থেকেই নিয়োগ হয়েছে ৩৭ শতাংশ।কঠিন হচ্ছে চাকরির বাজার

২০২৪ সালের শেষ দিকে যুক্তরাষ্ট্রে বেসরকারি খাতে যেখানে মাসে প্রায় দুই লাখ লোকের চাকরি হতো, ২০২৫ সালের জুনে এসে সেই সংখ্যা নেমেছে মাত্র ১৯ হাজারে। বিশ্ব অর্থনীতির মন্দাভাব বাংলাদেশের চাকরির বাজারকেও প্রভাবিত করেছে। সরকারি চাকরির পদের সংখ্যা সীমিত, আর বেসরকারি খাতে একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হলে আবেদন পড়ে কয়েক শ থেকে কয়েক হাজার। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সাক্ষাৎকারে ডাক পান গড়ে মাত্র ৩ শতাংশ প্রার্থী।

অন্যদিকে নিয়োগের নিশ্চয়তা নিয়েও তৈরি হয়েছে বড় শঙ্কা। বৈশ্বিক অনলাইন নিয়োগ প্ল্যাটফর্ম ইন্ডিডের সাম্প্রতিক জরিপ বলছে, কর্মরত মানুষের অর্ধেকই এবার ছাঁটাইয়ের আতঙ্কে ভুগছেন, যা গত বছরের তুলনায় অনেক বেশি।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কেবল যোগ্যতা দিয়েই আর চাকরি পাওয়া যাচ্ছে না। বাজারে প্রতিযোগিতা এতটাই বেশি যে প্রার্থীদের ভয় জয় করে কৌশলগতভাবে এগোতে হচ্ছে। বিশেষ করে তিনটি ভয় প্রার্থীদের পথ আটকে দিচ্ছে—অস্বীকৃতির ভয়, যোগাযোগের ভয় ও প্রযুক্তিগত ভয়।

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে বড় নিয়োগ, পদ ৪৭০মেধাবী প্রার্থীর ঘাটতি

সরকারি কর্ম কমিশন একটি বিসিএসে সাধারণত শূন্য দশমিক ৪৫ থেকে শূন্য দশমিক ৬৫ শতাংশ প্রার্থীকে সুপারিশ করে। যেমন: ৩৭তম বিসিএসে সুপারিশের হার ছিল শূন্য দশমিক ৫৪, ৩৮তম বিসিএসে শূন্য দশমিক ৬৪, ৪০তম বিসিএসে শূন্য দশমিক ৪৮, ৪১তম বিসিএসে শূন্য দশমিক ৬২, ৪৩তম বিসিএসে শূন্য দশমিক ৪৯ শতাংশ ও ৪৪তম বিসিএসে শূন্য দশমিক ৪৮ শতাংশ।

পিএসসির এই পরিসংখ্যান বলছে, দেশে যোগ্য ও মেধাবী প্রার্থীর ঘাটতি রয়েছে।

আরও পড়ুনসরকারি বিদ্যুৎ উৎপাদন কোম্পানিতে চাকরি, পদ ৪১০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা বলছে, ২০২২ সাল থেকে জুনিয়র ডেভেলপার পদের নিয়োগ কমেছে ২০ শতাংশ। পাশাপাশি ফরচুন ৫০০ কোম্পানির ৮০ শতাংশই এখন প্রার্থীদের জীবনবৃত্তান্ত যাচাইয়ে এআই ব্যবহার করছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ