শিশু সুরক্ষা, নারীর সহিংসতা, বাল্যবিয়েসহ নানা বিষয় নিয়ে প্রশাসন ও সাংবাদিকদের সঙ্গে একশন এইডের রূপগঞ্জ শাখার কর্মকর্তারা মতবিনিময় করেছেন। এসময় এসব সমস্যা সমাধানে করণীয় বিষয়ক আলোচনা হয়। সোমবার দুপুরে রূপগঞ্জ থানা মিলনায়তনে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। 

একশন এইডের চনপাড়া পূর্ণবাসন শাখার মেডিকেল অফিসার ডা. নুসরাত কাদিরের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন রূপগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ তরিকুল আলম।

এসময় বক্তব্য রাখেন কালের কণ্ঠের রাসেল আহমেদ, জাগো নিউজের নাজমুল হুদা, যমুনা টেলিভিশনের জয়নাল আবেদীন জয়, যায়যায়দিনের নজরুল ইসলাম লিখন, সাংবাদিক মোঃ নুর আলম, টেন টিভির সাকের মিয়া, হাবিবুর রহমান,একশন এইডের স্পন্সরশীপ অফিসার উৎসব বৈরাগী প্রমুখ।

নারী ও শিশুদের প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে এবং জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব মোকাবিলায় প্রশাসন, সাংবাদিক ও সুশীল সমাজের সম্মিলিত প্রচেষ্টার ওপর জোর দিয়েছে আন্তর্জাতিক বেসরকারি সংস্থা অ্যাকশনএইড বাংলাদেশ। সম্প্রতি ঢাকার একটি হোটেলে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় সংস্থাটি এই আহ্বান জানায়।

অনুষ্ঠানে অ্যাকশনএইডের কর্মকর্তারা তাদের বিভিন্ন কার্যক্রম তুলে ধরেন এবং স্থানীয় পর্যায়ে নারী নির্যাতন রোধে চলমান প্রকল্পগুলো নিয়ে আলোচনা করেন। তারা বলেন, শুধু আইন প্রয়োগকারী সংস্থা নয়, সমাজের প্রতিটি স্তরের মানুষের সচেতনতা বৃদ্ধি এবং গণমাধ্যমের ইতিবাচক ভূমিকার মাধ্যমেই এই ধরনের সহিংসতা পুরোপুরি নির্মূল করা সম্ভব।

মতবিনিময় সভায় উপস্থিত প্রশাসনের কর্মকর্তারা অ্যাকশনএইডের উদ্যোগের প্রশংসা করেন এবং নারী নির্যাতন বন্ধে তাদের সহযোগিতা অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি দেন। একইসাথে তারা বলেন, এই সমস্যা মোকাবিলায় সামাজিক মূল্যবোধের অবক্ষয় রোধ এবং পারিবারিক পর্যায়ে সচেতনতা তৈরি করা জরুরি।

সাংবাদিকরা তাদের বক্তব্যে বলেন, গণমাধ্যম সবসময়ই এই ধরনের সংবেদনশীল বিষয়গুলোকে গুরুত্ব দিয়ে আসছে। তবে, আরও কার্যকর প্রতিবেদন এবং জনসচেতনতামূলক প্রচারাভিযানের জন্য প্রশাসন ও বেসরকারি সংস্থাগুলোর সঙ্গে সমন্বয় বাড়ানো প্রয়োজন। তারা আশা প্রকাশ করেন, ভবিষ্যতে এমন সহযোগিতামূলক কার্যক্রমের মাধ্যমে সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন আনা সম্ভব হবে।

অনুষ্ঠানে অ্যাকশনএইড চনপাড়া পূর্ণবাসন শাখার মেডিকেল অফিসার ডা.

নুসরাত কাদির বলেন,নারী ও শিশুদের নিরাপদ জীবন নিশ্চিত করতে আমাদের সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে। প্রশাসন, গণমাধ্যম এবং সমাজের সকল শ্রেণি-পেশার মানুষের সম্মিলিত প্রচেষ্টাই একটি সহিংসতামুক্ত সমাজ গড়তে পারে।
 

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: র পগঞ জ ন র য়ণগঞ জ র পগঞ জ অফ স র

এছাড়াও পড়ুন:

আরপিওর বিধানের বৈধতার রায় রিভিউর জন্য হলফনামার অনুমতি

জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থীর ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকার ১ শতাংশ ভোটারের সমর্থনসংবলিত স্বাক্ষরযুক্ত তালিকা মনোনয়নের সঙ্গে যুক্ত করাসংক্রান্ত গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের বিধানের বৈধতা দিয়ে ১৪ বছর আগে রায় দিয়েছিলেন আপিল বিভাগ। এই রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে আবেদনের জন্য হলফনামার অনুমতি চেয়ে আবেদন করেছেন দুজন আইনজীবীসহ সাত ব্যক্তি। শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি ফারাহ মাহবুব আজ সোমবার হলফনামা করার অনুমতি দিয়েছেন।

আবেদনকারী সাত ব্যক্তি হলেন ব্যারিস্টার এম সারোয়ার হোসেন, মেজর (অব.) এস এম হারুনুর রশীদ, কাজী জাহেদুল ইসলাম, আইনজীবী এস এম আজমল হোসেন, মেজর (অব.) নিয়াজ আহমেদ জাবের, মেজর (অব.) মো. জিয়াউল আহসান ও সালাহ উদ্দিন।

আদালতে আবেদনকারীদের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ওমর ফারুক। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, এ মামলায় আবেদনকারীরা পক্ষ ছিলেন না। যে কারণে তৃতীয় পক্ষ হিসেবে আপিল বিভাগের রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে আবেদন দায়েরের জন্য হলফনামা করার অনুমতি চেয়ে আবেদন করেন তাঁরা। চেম্বার আদালত হলফনামা দায়ের করার অনুমতি দিয়েছেন। আনুষঙ্গিক প্রক্রিয়া শেষে শিগগিরই রিভিউ আবেদন করা হবে।

গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের (আরপিও) ১২(৩ক)(ক) বিধান অনুযায়ী নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থীর ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকার ১ শতাংশ ভোটারের সমর্থনসংবলিত স্বাক্ষরযুক্ত তালিকা মনোনয়নপত্রের সঙ্গে যুক্ত করে দিতে হবে। তবে শর্ত থাকে যে কোনো স্বতন্ত্র প্রার্থী ইতিপূর্বে জাতীয় সংসদের কোনো নির্বাচনে সদস্য নির্বাচিত হয়ে থাকলে ওই তালিকা প্রদানের প্রয়োজন হবে না।

আইনজীবীর তথ্য অনুসারে, ঢাকার একটি আসন থেকে ২০০৭ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মাহবুব আহমেদ চৌধুরী নামে এক ব্যক্তি মনোনয়নপত্র নেন। পরে নির্বাচনের ওই তারিখ পিছিয়ে যায়। অন্যদিকে ২০০৮ সালে আরপিও দফা ১২(৩ক)–তে সংশোধনী আনা হয়। এই বিধান সংবিধানের কয়েকটি অনুচ্ছেদ ও আরপিওর ১২(১) ধারার পরিপন্থী উল্লেখ করে মাহবুব আহমেদ চৌধুরী ২০১০ সালে হাইকোর্ট রিট করেন। রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট রুল দেন। চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০১০ সালের ১৬ আগস্ট হাইকোর্ট রুল ডিসচার্জ (খারিজ) করে রায় দেন। দফা (৩ক) সংবিধান পরিপন্থী নয় বলে রায়ে উল্লেখ করা হয়।

হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে ২০১০ সালে লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করেন রিট আবেদনকারী। শুনানি শেষে আপিল বিভাগ ২০১১ সালের ২৩ জানুয়ারি লিভ টু আপিল খারিজ করে রায় দেন। স্বতন্ত্র প্রার্থীর ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকার ১ শতাংশ ভোটারের সমর্থনসংবলিত স্বাক্ষরযুক্ত তালিকা মনোনয়নের সঙ্গে যুক্ত করাসংক্রান্ত আরপিওর ১২(৩ক)–তে বেআইনি কিছু পাননি বলে রায়ে উল্লেখ করা হয়।

ওই রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে দুই আইনজীবীসহ সাত ব্যক্তি আবেদন করতে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন তাঁদের আইনজীবী ওমর ফারুক। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিতে ভোটারের গোপনীয়তা রক্ষা করতে হবে। ভোটার কোন প্রার্থীকে ভোট দেবেন বা দেবেন না, এটি একান্তই তাঁর চিন্তা ও মতপ্রকাশের অধিকার। সিক্রেট ব্যালটে হামলা হলে ভোট বাতিলও হয়। সংবিধানের ৬৬ অনুচ্ছেদে প্রার্থীর যোগ্যতা নির্ধারণ করা আছে। রাজনৈতিক দল হলে ১ শতাংশ ভোটারের সমর্থন লাগবে না, অথচ স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে গেলে লাগবে অর্থাৎ একই মনোনয়নপত্র ঘিরে দ্বৈত বিধান। ১ শতাংশ ভোটারের সমর্থন থাকার ওই বিধানের মাধ্যমে স্বতন্ত্র প্রার্থীকে নির্বাচন থেকে বিরত রাখার সুযোগ তৈরি হয়েছে, যা সংবিধান সমর্থন করে না এবং ভোটারের গোপনীয়তারও লঙ্ঘন—এসব যুক্তি তুলে ধরে আবেদনটি করা হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ