Prothomalo:
2025-08-04@19:43:37 GMT

আরও বড় পরিবর্তন সম্ভব

Published: 4th, August 2025 GMT

গত বছরের ২ আগস্ট অসংখ্য মানুষের অংশগ্রহণে দ্রোহযাত্রা হয়। সেখানে আমি বলেছিলাম, ‘কেবল হাসিনার পতন বাংলাদেশের মুক্তি আনবে না। পুনঃ পুনঃ স্বৈরাচারী ব্যবস্থার বেড়ে ওঠা বন্ধ করবে না।...মুক্তিযুদ্ধকে দখলদারদের হাত থেকে মুক্ত করতে হবে।...মুক্তিযুদ্ধকে জনগণের হাতে ফেরত নিয়ে আসতে হবে।...লুটপাট, অন্যায়, দুর্নীতি, প্রাণপ্রকৃতিবিধ্বংসী ‘উন্নয়নের’ নামে স্বৈরতন্ত্র দিয়ে জনগণের ওপর আক্রমণ আর চলবে না।.

..হাসিনা সরকারের পদত্যাগ অবশ্যম্ভাবী, তারপর বৈষম্যহীন গণতান্ত্রিক রূপান্তর কীভাবে হবে, সেই আলোচনাই হবে এখনকার প্রধান আলোচ্য বিষয়।...শিক্ষার্থী, শিক্ষক, পেশাজীবী, শ্রমজীবী, শ্রমিক সংগঠন, নারী সংগঠন—সবার সম্মিলিতভাবে এই রূপান্তরের পথে কাজ করতে হবে, অবদান রাখতে হবে।’ (২ আগস্ট ২০২৪) 

এক বছরের মাথায় মনে হচ্ছে গণ-অভ্যুত্থান–পরবর্তী বৈষম্যহীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার পথে গণতান্ত্রিক রূপান্তরের এই গতিমুখ তৈরিতেই আমাদের দুর্বলতা প্রকট। সে জন্য উল্টো বাড়ছে বৈষম্যবাদী অগণতান্ত্রিক শক্তিগুলোর দাপট, হুংকার।

গণ-অভ্যুত্থানের সাফল্য ও বৈশিষ্ট্য 

তবে এ কারণে শিক্ষার্থী-শ্রমিক-জনতার অসাধারণ অভ্যুত্থানের গুরুত্ব খর্ব করে দেখা যাবে না। এর সাফল্যকে ধরেই আমাদের অগ্রসর হতে হবে। সাফল্য প্রধানত তিনটি: এক. আপাদমস্তক দুর্নীতিগ্রস্ত, অত্যাচারী, জোর করে ক্ষমতায় বসে থাকা প্রবল পরাক্রমশালী সরকারের পতন হয়েছে। দুই. এর ফলে বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রতিদিনের নির্যাতন, হুমকি এবং রাষ্ট্রীয় গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বন্ধ হয়েছে। যদিও আবারও এগুলোর খবর পাওয়া যাচ্ছে। তিন. বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্তে অসংখ্য উদ্যোগের মধ্য দিয়ে আলোচনা, বিতর্কের উচ্ছ্বাস সৃষ্টি হয়েছে। সবারই যেন কিছু বলার আছে, দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তা আছে, মত-ভিন্নমত আছে। বড় পরিবর্তনের প্রত্যাশা তৈরি হওয়া, এর জন্য সরব হওয়া একটি বড় সাফল্য। এর মধ্যে এখন যে নানা পিছুটান, সংশয় ও ভয় তৈরি করা হয়েছে, সেগুলো মোকাবিলা করা আমাদের দায়িত্ব। 

সামনে অগ্রসর হওয়ার জন্য এই গণ-অভ্যুত্থানের বৈশিষ্ট্যগুলোও খেয়াল রাখতে হবে: প্রথমত, আগের মতোই তরুণেরা এই আন্দোলনেরও শীর্ষ ভূমিকায় থেকেছেন। এতে বাম-ডান বিভিন্ন দল, শিক্ষার্থী-নারী-পেশাজীবী সংগঠনসহ অসংখ্য মানুষের ভূমিকা থাকলেও প্রত্যক্ষ কোনো রাজনৈতিক দলের নেতৃত্ব ছিল না। দ্বিতীয়ত, এবারের আন্দোলনে সক্রিয় সংবেদনশীল ভূমিকা ছিল নারী, শ্রমজীবী মানুষ, লিঙ্গীয়-ধর্মীয়-জাতিগত সংখ্যালঘু মানুষসহ দলীয় পরিচয়ের বাইরে সমাজের বিভিন্ন অংশের। তৃতীয়ত, গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল ডিজিটাল প্রযুক্তির, যার মধ্য দিয়ে মানুষের কাছে দ্রুত খবর গেছে, নৃশংসতা ও প্রতিরোধের ভিডিও চিত্র মানুষকে জমায়েত করেছে, আন্দোলনকারীরা পরস্পর সংযুক্ত থেকেছে। চতুর্থত, এবারের আন্দোলনে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের স্পষ্ট অবস্থান না থাকায় অসংখ্য কেন্দ্র তৈরি হয়েছে। স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ এবং নেতৃত্বের বিকেন্দ্রীকরণ এর বিশেষ বৈশিষ্ট্য। পঞ্চমত, দেয়ালে দেয়ালে কাঁচা হাতে লেখা আঁকায় বৈষম্যহীন বাংলাদেশের আকাঙ্ক্ষা প্রকাশিত হয়েছে। তৈরি হয়েছে বহু গান, তথ্যচিত্র, লেখা, কার্টুনসহ সৃজনশীল কাজ। সেখানে সব ধর্ম, জাতি, শ্রেণি ও লিঙ্গীয় বৈষম্য দূর করে সমতার বাংলাদেশের স্বপ্ন উঠে এসেছে।

বৈষম্যের বিভিন্ন মুখ

এই স্বপ্নপূরণের জন্য বৈষম্যের ক্ষেত্রগুলো নির্দিষ্ট করা দরকার। গত পাঁচ দশকে বাংলাদেশে পুঁজিবাদী অর্থনীতির দৃষ্টিগ্রাহ্য বিকাশ ঘটেছে, আকার বেড়েছে অনেক, অবকাঠামোর বিস্তার ঘটেছে, জিডিপি বেড়েছে বহুগুণ, আমদানি-রপ্তানি ও রেমিট্যান্সের উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি ঘটেছে। কিন্তু একই সময়ে শ্রেণিবৈষম্য বেড়েছে প্রকটভাবে। স্থায়ী কর্মসংস্থানের সুযোগ থেকে বঞ্চিত প্রায় ৯০ শতাংশ কর্মজীবী মানুষ। বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের পরিশ্রমের দেশ চলে গেছে মুষ্টিমেয়র হাতে, শ্রেণি-আধিপত্য প্রবল হয়েছে। জিডিপিতে নিচের ৯০ শতাংশের অংশীদারত্ব কমে শীর্ষ ১০ শতাংশের হাতে দেশের সম্পদ কেন্দ্রীভূত হয়েছে, যার সিংহভাগ আরও শীর্ষ ১ শতাংশের দখলে। এদের কারণে দেশের বিপুল সম্পদ লুণ্ঠিত ও পাচার হয়েছে, দেশের সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘিত হয়েছে, বারবার স্বৈরশাসনের জাঁতাকলে আটকে গেছে দেশ। দেশের নদী-বন-পাহাড়-বাতাস তথা প্রাণপ্রকৃতি বিপর্যস্ত হয়েছে। শ্রমজীবী মানুষের জীবনে অনিশ্চয়তা, বঞ্চনা, জুলুম অব্যাহত আছে। দেশের শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবাব্যবস্থা ক্রমবর্ধমান শ্রেণিবৈষম্যের অন্যতম চিহ্ন। এগুলোর ক্রমাগত বাণিজ্যিকীকরণ জনসংখ্যার একটি বড় অংশের প্রকৃত আয় কমিয়েছে। চিকিৎসা বা সন্তানদের শিক্ষিত করাতে গিয়ে তাদের অনেকে দেউলিয়া হয়ে যাচ্ছে। 

আনু মুহাম্মদ: লেখক; সম্পাদক, সর্বজনকথা

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ত হয় ছ স ফল য

এছাড়াও পড়ুন:

সত্য আড়াল করার চেষ্টা ছিল

সরকারের বিরুদ্ধে রাজপথে মানুষের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটছে—এ সত্য আড়াল করার চেষ্টা ছিল পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) বেশির ভাগ গোয়েন্দা প্রতিবেদনে। এর পরিবর্তে ছাত্র-জনতাকে ‘স্বাধীনতাবিরোধী গোষ্ঠী’ এবং আন্দোলনকে ‘বিদেশি ষড়যন্ত্র’ হিসেবে দেখানোর চেষ্টা ছিল।

গোয়েন্দা প্রতিবেদনগুলোর ভাষায় ‘উসকানি’, ‘দুষ্কৃতকারী’ ও ‘বিরোধী চক্রান্ত’—এ ধরনের শব্দ বেশি ব্যবহার করা হয়েছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমনে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার যেসব যুক্তি দিত এবং যে ভাষায় কথা বলত, তার প্রতিফলন দেখা গেছে গোয়েন্দা প্রতিবেদনগুলোতে।

গণ-অভ্যুত্থানকেন্দ্রিক এসবির ১৬টি প্রতিবেদন নানা মাধ্যমে পেয়েছে প্রথম আলো। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অতিরিক্ত বল প্রয়োগ বা মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়টি এসবির প্রতিবেদনে সেভাবে গুরুত্ব পায়নি। তৎকালীন ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের (এখন কার্যক্রম নিষিদ্ধ) নেতা-কর্মীদের মারমুখী ভূমিকা ও অস্ত্রবাজির বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে। উল্টো আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের আরও সক্রিয় ভূমিকা রাখতে তৎকালীন সরকারকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। এর পাশাপাশি সরকারের পক্ষে যাতে সংবাদমাধ্যমগুলো জনমত তৈরি করে—এমন পরামর্শও দিয়েছিলেন এসবির গোয়েন্দারা।

যেমন গত বছরের ৪ আগস্ট এসবির গোয়েন্দা প্রতিবেদনে আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীদের দলবদ্ধভাবে ও অধিক সংখ্যায় অবস্থান নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। ৩১ জুলাইয়ের গোয়েন্দা প্রতিবেদনে আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীদের মাঠে সরব উপস্থিতি নিশ্চিত করার বিষয়টি উল্লেখ রয়েছে।

এসবির মাধ্যমেই পুলিশ দেশের সামগ্রিক চিত্র, নিরাপত্তাসহ বিভিন্ন ধরনের গোয়েন্দা প্রতিবেদন তৈরি করে থাকে। এসবির গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদনগুলো প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে যায়। এ জন্য সরকার অন্য গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর পাশাপাশি এসবির গোয়েন্দা প্রতিবেদনগুলোকে গুরুত্ব দিয়ে থাকে।

ওই সময়কার গোয়েন্দা প্রতিবেদনগুলো গত জুন ও জুলাই মাসের শুরুর দিকে বিশ্লেষণ করেছে এসবির বর্তমান প্রশাসন। গোয়েন্দা প্রতিবেদনগুলোর দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে এসবির বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, ছাত্র-জনতার আন্দোলনকে রাজনৈতিক ইন্ধনপ্রাপ্ত, বিএনপি-জামায়াতের সরকার পতনের ষড়যন্ত্র—এভাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। আন্দোলনের মূল দাবির জায়গা বা ছাত্রসমাজের ন্যায্য ক্ষোভের যৌক্তিকতার চেয়ে নাশকতা-সহিংসতার আশঙ্কা, সরকারি স্থাপনায় আক্রমণ, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও প্রশাসনের নিরাপত্তা—এসবে অগ্রাধিকার প্রদান করা হয়েছে।

এসবির বিশ্লেষণে উল্লেখ করা হয়েছে, সংলাপ, আলোচনার প্রয়োজনীয়তা বা দাবির ন্যায্যতা তুলনামূলকভাবে কম এসেছে ওই সময়ের গোয়েন্দা প্রতিবেদনগুলোতে। কিছু ক্ষেত্রে আলোচনাকে প্রাধান্য দেওয়ার কথা বলা হলেও সেটি আন্দোলন দমন বা নিয়ন্ত্রণের কৌশল হিসেবে এসেছে। এ ছাড়া প্রতিবেদনগুলোতে শিক্ষার্থীদের গণতান্ত্রিক অধিকারের গুরুত্ব, জনগণের ক্ষোভ বা সমবেদনার জায়গা উপেক্ষিত হয়েছে।

এসবির বিশ্লেষণে উঠে এসেছে, ওই সময়কার গোয়েন্দা প্রতিবেদনগুলোতে আন্দোলন চলাকালে বিপরীত বয়ান (কাউন্টার ন্যারেটিভ) তৈরির পরামর্শও দেওয়া হতো। ‘কাউন্টার ন্যারেটিভ’ গড়ে তোলার জন্য তৎকালীন সরকার যাতে গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে, সে সুপারিশ ছিল।

এসবির একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, ‘রাজনৈতিক আনুগত্যের কারণে ওই সময়ের গোয়েন্দা প্রতিবেদনগুলোতে প্রকৃত চিত্র উঠে আসেনি। দলীয় দৃষ্টিকোণ থেকে চিন্তা করায় বাস্তব পরিস্থিতি মূল্যায়নে ব্যর্থ হয়েছিলেন তৎকালীন কর্মকর্তারা। পেশাদারত্বের সঙ্গে নির্মোহভাবে কাজ না করলে তা কারও জন্যই সুফল বয়ে আনে না।’

এসবির বিশ্লেষণে উঠে এসেছে, ওই সময়কার প্রতিবেদনগুলোতে মাঠের বাস্তবতা উপেক্ষিত হয়েছে।

শেষ দিকে শঙ্কায় ছিলেন গোয়েন্দারা

এসবির বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, তৎকালীন সরকার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দমননীতির কারণে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দ্রুত ব্যাপকতা লাভ করে। বিরোধী রাজনৈতিক শক্তি, পেশাজীবী, শিক্ষক, অভিভাবকসহ সর্বস্তরের মানুষ তাতে যুক্ত হন। পরিস্থিতি ক্রমেই নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। দ্রুতই আন্দোলনে নতুন নতুন শ্রেণি ও শক্তি যুক্ত হয়।

কিন্তু তৎকালীন গোয়েন্দারা আন্দোলনের ব্যাপকতার বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে আন্দোলনকারীদের ‘বহিরাগত’, ‘রাজনৈতিক অপশক্তি’ এবং ‘স্বার্থান্বেষী মহল’ হিসেবে দেখার চেষ্টা করেছে।

আন্দোলনের এক পর্যায়ে ‘গণভবন, বঙ্গভবন, সচিবালয়, পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স ইত্যাদি দখলের চেষ্টা হতে পারে’—এমন ইঙ্গিত ছিল ওই সময়কার গোয়েন্দা প্রতিবেদনে।

গত বছরের ৫ জুন থেকে ২০ জুলাইয়ের প্রতিবেদনগুলো আলাদাভাবে বিশ্লেষণ করেছে এসবির বর্তমান প্রশাসন। এতে দেখা যায়, ওই সময় গোয়েন্দাদের পর্যবেক্ষণ ছিল, আন্দোলন দমন না করলে এটি সারা দেশে ছড়িয়ে পড়তে পারে এবং বিরোধী রাজনৈতিক শক্তি সুযোগ নিতে পারে। বিশেষ করে বিএনপি ও জামায়াত-শিবিরের ভূমিকা নিয়ে শঙ্কায় ছিলেন তখনকার গোয়েন্দারা।

গত বছরের ২১ জুলাই থেকে ৪ আগস্টের প্রতিবেদনগুলোতে গণগ্রেপ্তার ও দমননীতির বিষয়গুলো উঠে এসেছে। তবে ওই সময়ের প্রতিবেদনে পরিস্থিতি দ্রুত ‘গণ-অভ্যুত্থানে’ রূপ নিতে পারে, সরকার পতনের চেষ্টা হতে পারে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মনোবল ভেঙে যেতে পারে—এসব বিষয় স্পষ্টভাবে লেখা হয়েছে। শেষ দিকের গোয়েন্দা প্রতিবেদনে ছাত্র-জনতার আন্দোলন ক্রমে সরকারের পতনের এক দফা দাবিতে পরিণত হবে—এমন আভাস দেওয়া হয়েছিল।

একপেশে প্রতিবেদন, রাজনৈতিক পক্ষপাতিত্ব

এসবির বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, অধিকাংশ প্রতিবেদনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অতিরিক্ত বল প্রয়োগ, হতাহতের ঘটনা, গণগ্রেপ্তার, ইন্টারনেট বন্ধ করে দেওয়া—এসব বিষয় খুব কমই গুরুত্ব পেয়েছে। আন্দোলনের অংশগ্রহণকারীদের প্রতি প্রতিবেদনগুলোর দৃষ্টিভঙ্গি ছিল স্পষ্টতই একপেশে।

এসবির বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, অনেক প্রতিবেদনে আন্দোলনের প্রকৃত উৎস বা সাধারণ ছাত্রদের ক্ষোভকে সেভাবে প্রাধান্য দেওয়া হয়নি। শুধু তা–ই নয়, শিক্ষক, সাংস্কৃতিক কর্মী, বিভিন্ন পেশাজীবী ও সাধারণ অভিভাবক—এসব গোষ্ঠীর ন্যায্য অংশগ্রহণকে সন্দেহের চোখে দেখা হয়েছে। প্রকৃত সমস্যাকে আড়াল করার প্রবণতা থাকায় স্বতঃস্ফূর্ত গণ-আন্দোলনকে পুরোপুরি অনুধাবন করা যায়নি বলেও এসবির বিশ্লেষণে উঠে এসেছে।

পুলিশ সদর দপ্তরের মুখপাত্র সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি) ইনামুল হক প্রথম আলোকে বলেন, ‘পেশাদারত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালনের কোনো বিকল্প নেই। নিয়মনীতি মেনে দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে পুলিশ বর্তমানে সচেষ্ট রয়েছে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ