Prothomalo:
2025-09-19@04:36:01 GMT

আরও বড় পরিবর্তন সম্ভব

Published: 4th, August 2025 GMT

গত বছরের ২ আগস্ট অসংখ্য মানুষের অংশগ্রহণে দ্রোহযাত্রা হয়। সেখানে আমি বলেছিলাম, ‘কেবল হাসিনার পতন বাংলাদেশের মুক্তি আনবে না। পুনঃ পুনঃ স্বৈরাচারী ব্যবস্থার বেড়ে ওঠা বন্ধ করবে না।...মুক্তিযুদ্ধকে দখলদারদের হাত থেকে মুক্ত করতে হবে।...মুক্তিযুদ্ধকে জনগণের হাতে ফেরত নিয়ে আসতে হবে।...লুটপাট, অন্যায়, দুর্নীতি, প্রাণপ্রকৃতিবিধ্বংসী ‘উন্নয়নের’ নামে স্বৈরতন্ত্র দিয়ে জনগণের ওপর আক্রমণ আর চলবে না।.

..হাসিনা সরকারের পদত্যাগ অবশ্যম্ভাবী, তারপর বৈষম্যহীন গণতান্ত্রিক রূপান্তর কীভাবে হবে, সেই আলোচনাই হবে এখনকার প্রধান আলোচ্য বিষয়।...শিক্ষার্থী, শিক্ষক, পেশাজীবী, শ্রমজীবী, শ্রমিক সংগঠন, নারী সংগঠন—সবার সম্মিলিতভাবে এই রূপান্তরের পথে কাজ করতে হবে, অবদান রাখতে হবে।’ (২ আগস্ট ২০২৪) 

এক বছরের মাথায় মনে হচ্ছে গণ-অভ্যুত্থান–পরবর্তী বৈষম্যহীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার পথে গণতান্ত্রিক রূপান্তরের এই গতিমুখ তৈরিতেই আমাদের দুর্বলতা প্রকট। সে জন্য উল্টো বাড়ছে বৈষম্যবাদী অগণতান্ত্রিক শক্তিগুলোর দাপট, হুংকার।

গণ-অভ্যুত্থানের সাফল্য ও বৈশিষ্ট্য 

তবে এ কারণে শিক্ষার্থী-শ্রমিক-জনতার অসাধারণ অভ্যুত্থানের গুরুত্ব খর্ব করে দেখা যাবে না। এর সাফল্যকে ধরেই আমাদের অগ্রসর হতে হবে। সাফল্য প্রধানত তিনটি: এক. আপাদমস্তক দুর্নীতিগ্রস্ত, অত্যাচারী, জোর করে ক্ষমতায় বসে থাকা প্রবল পরাক্রমশালী সরকারের পতন হয়েছে। দুই. এর ফলে বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রতিদিনের নির্যাতন, হুমকি এবং রাষ্ট্রীয় গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বন্ধ হয়েছে। যদিও আবারও এগুলোর খবর পাওয়া যাচ্ছে। তিন. বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্তে অসংখ্য উদ্যোগের মধ্য দিয়ে আলোচনা, বিতর্কের উচ্ছ্বাস সৃষ্টি হয়েছে। সবারই যেন কিছু বলার আছে, দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তা আছে, মত-ভিন্নমত আছে। বড় পরিবর্তনের প্রত্যাশা তৈরি হওয়া, এর জন্য সরব হওয়া একটি বড় সাফল্য। এর মধ্যে এখন যে নানা পিছুটান, সংশয় ও ভয় তৈরি করা হয়েছে, সেগুলো মোকাবিলা করা আমাদের দায়িত্ব। 

সামনে অগ্রসর হওয়ার জন্য এই গণ-অভ্যুত্থানের বৈশিষ্ট্যগুলোও খেয়াল রাখতে হবে: প্রথমত, আগের মতোই তরুণেরা এই আন্দোলনেরও শীর্ষ ভূমিকায় থেকেছেন। এতে বাম-ডান বিভিন্ন দল, শিক্ষার্থী-নারী-পেশাজীবী সংগঠনসহ অসংখ্য মানুষের ভূমিকা থাকলেও প্রত্যক্ষ কোনো রাজনৈতিক দলের নেতৃত্ব ছিল না। দ্বিতীয়ত, এবারের আন্দোলনে সক্রিয় সংবেদনশীল ভূমিকা ছিল নারী, শ্রমজীবী মানুষ, লিঙ্গীয়-ধর্মীয়-জাতিগত সংখ্যালঘু মানুষসহ দলীয় পরিচয়ের বাইরে সমাজের বিভিন্ন অংশের। তৃতীয়ত, গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল ডিজিটাল প্রযুক্তির, যার মধ্য দিয়ে মানুষের কাছে দ্রুত খবর গেছে, নৃশংসতা ও প্রতিরোধের ভিডিও চিত্র মানুষকে জমায়েত করেছে, আন্দোলনকারীরা পরস্পর সংযুক্ত থেকেছে। চতুর্থত, এবারের আন্দোলনে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের স্পষ্ট অবস্থান না থাকায় অসংখ্য কেন্দ্র তৈরি হয়েছে। স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ এবং নেতৃত্বের বিকেন্দ্রীকরণ এর বিশেষ বৈশিষ্ট্য। পঞ্চমত, দেয়ালে দেয়ালে কাঁচা হাতে লেখা আঁকায় বৈষম্যহীন বাংলাদেশের আকাঙ্ক্ষা প্রকাশিত হয়েছে। তৈরি হয়েছে বহু গান, তথ্যচিত্র, লেখা, কার্টুনসহ সৃজনশীল কাজ। সেখানে সব ধর্ম, জাতি, শ্রেণি ও লিঙ্গীয় বৈষম্য দূর করে সমতার বাংলাদেশের স্বপ্ন উঠে এসেছে।

বৈষম্যের বিভিন্ন মুখ

এই স্বপ্নপূরণের জন্য বৈষম্যের ক্ষেত্রগুলো নির্দিষ্ট করা দরকার। গত পাঁচ দশকে বাংলাদেশে পুঁজিবাদী অর্থনীতির দৃষ্টিগ্রাহ্য বিকাশ ঘটেছে, আকার বেড়েছে অনেক, অবকাঠামোর বিস্তার ঘটেছে, জিডিপি বেড়েছে বহুগুণ, আমদানি-রপ্তানি ও রেমিট্যান্সের উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি ঘটেছে। কিন্তু একই সময়ে শ্রেণিবৈষম্য বেড়েছে প্রকটভাবে। স্থায়ী কর্মসংস্থানের সুযোগ থেকে বঞ্চিত প্রায় ৯০ শতাংশ কর্মজীবী মানুষ। বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের পরিশ্রমের দেশ চলে গেছে মুষ্টিমেয়র হাতে, শ্রেণি-আধিপত্য প্রবল হয়েছে। জিডিপিতে নিচের ৯০ শতাংশের অংশীদারত্ব কমে শীর্ষ ১০ শতাংশের হাতে দেশের সম্পদ কেন্দ্রীভূত হয়েছে, যার সিংহভাগ আরও শীর্ষ ১ শতাংশের দখলে। এদের কারণে দেশের বিপুল সম্পদ লুণ্ঠিত ও পাচার হয়েছে, দেশের সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘিত হয়েছে, বারবার স্বৈরশাসনের জাঁতাকলে আটকে গেছে দেশ। দেশের নদী-বন-পাহাড়-বাতাস তথা প্রাণপ্রকৃতি বিপর্যস্ত হয়েছে। শ্রমজীবী মানুষের জীবনে অনিশ্চয়তা, বঞ্চনা, জুলুম অব্যাহত আছে। দেশের শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবাব্যবস্থা ক্রমবর্ধমান শ্রেণিবৈষম্যের অন্যতম চিহ্ন। এগুলোর ক্রমাগত বাণিজ্যিকীকরণ জনসংখ্যার একটি বড় অংশের প্রকৃত আয় কমিয়েছে। চিকিৎসা বা সন্তানদের শিক্ষিত করাতে গিয়ে তাদের অনেকে দেউলিয়া হয়ে যাচ্ছে। 

আনু মুহাম্মদ: লেখক; সম্পাদক, সর্বজনকথা

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ত হয় ছ স ফল য

এছাড়াও পড়ুন:

বিভক্তি ও আস্থার সংকটে জাকসুতে গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের পরাজয়

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জাকসু) নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকেই বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ (বাগছাস) বিশ্ববিদ্যালয় শাখায় কোন্দল দানা বাঁধে। মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার আগে চার নেতার বিভক্তিও স্পষ্ট হয়। নানা কর্মকাণ্ডের কারণে সংগঠনটির ওপর শেষ পর্যন্ত আস্থা রাখতে পারেননি শিক্ষার্থীরা। যার ফলে জাকসু নির্বাচনে চমক দেখাতে পারেনি গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ।

গণ-অভ্যুত্থানে সামনের সারিতে থেকে নেতৃত্ব দেওয়া শিক্ষার্থীদের নিয়ে গড়ে ওঠা গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের পরাজয়ের কারণ নিয়ে এমনটাই বলছেন নেতা–কর্মী, সমর্থক ও শিক্ষার্থীরা। তাঁরা বলছেন, বিভিন্ন ছাত্রসংগঠনের নেতাদের নিয়ে গড়ে ওঠা এই সংগঠনের নেতা-কর্মীদের মধ্যে বোঝাপড়াও কম। এ ছাড়া গণ-অভ্যুত্থানের পর নানা কর্মকাণ্ড তাঁদের ওপর শিক্ষার্থীদের আস্থাহীনতা তৈরি হয়েছিল। সারা দেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নাম করে অপকর্মের প্রভাব বিশ্ববিদ্যালয় শাখার নেতা-কর্মীদের ওপরও পড়েছে। ফলে জাকসু নির্বাচনে তাঁরা পিছিয়ে পড়েছেন।

১১ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত দশম জাকসু নির্বাচনে ২৫টি পদের মধ্যে ২৩টি পদে প্রার্থী দিয়েছিল গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ সমর্থিত শিক্ষার্থী ঐক্য ফোরাম প্যানেল। ২১টি পদেই হেরেছেন প্যানেলের প্রার্থীরা। অবশ্য এই প্যানেল থেকে সমাজসেবা সম্পাদক পদে আহসান লাবিব এবং কার্যকরী সদস্য (পুরুষ) পদে মোহাম্মদ আলী চিশতি জয়লাভ করেছেন।

নির্বাচন কমিশনের প্রকাশিত ফল বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, সাধারণ সম্পাদক (জিএস), সহসাধারণ সম্পাদকসহ ৭টি সম্পাদকীয় পদে শিক্ষার্থী ঐক্য ফোরাম প্যানেলের প্রার্থীরা দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেছেন। বাকি পদগুলোতে তাঁরা তৃতীয়, চতুর্থ, পঞ্চম ও ষষ্ঠ স্থান অর্জন করেছেন।

গ্রহণযোগ্যতা থাকলেও ভোট ভাগাভাগি

গণ-অভ্যুত্থানের পরপরই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন বিশ্ববিদ্যালয় শাখার মধ্যে ফাটল ধরে। জুলাই আন্দোলনে সামনের সারিতে নেতৃত্ব দেওয়া অনেককেই সংগঠনে জায়গা না দেওয়ায় সাবেক কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক আবদুর রশিদের (জিতু) নেতৃত্বে ১৮ জন সমন্বয়ক ও সহসমন্বয়ক পদত্যাগ করেন। শেষ পর্যন্ত আবদুর রশিদ স্বতন্ত্র প্যানেল থেকে নির্বাচন করে জাকসুর ভিপি পদে নির্বাচিত হয়েছেন।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের (জুলাই আন্দোলন চলাকালে কমিটি) জাবি শাখার সাবেক সদস্যসচিব মাহফুজ ইসলামও (মেঘ) গণ-অভ্যুত্থানের পর আলাদাভাবে পদত্যাগ করেন। তিনি স্বতন্ত্র প্যানেল থেকে ভিপি পদে নির্বাচন করে পরাজিত হয়েছেন। এভাবে সাবেক সমন্বয়কেরা তিনটি প্যানেলে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। ফলে জুলাই আন্দোলনের ইমেজ তুলে ধরে ভোটারদের মাঝে একচেটিয়া কাজ করার সুযোগ ছিল না গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ সমর্থিত প্যানেলের। বরং সমন্বয়কেরা বিভিন্ন প্যানেল থেকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার কারণে ভোট ভাগাভাগি হওয়ায় নির্বাচনে জয় নিশ্চিত করতে পারেননি তাঁরা।

নির্বাচনের আগে পদ নিয়ে কোন্দল

গণ-অভ্যুত্থানের পর নানা বিভক্তি কাটিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে কমিটি ঘোষণা করে গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ (বাগছাস)। এই কমিটিতে জুলাই আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া একটি অংশ দায়িত্বে আসে। নির্বাচনে সংগঠনের জাবি শাখার আহ্বায়ক আরিফুজ্জামান উজ্জ্বল ভিপি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে তৃতীয় হয়েছেন। সদস্যসচিব আবু তৌহিদ মোহাম্মদ সিয়াম সাধারণ সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে দ্বিতীয় হয়েছেন।

জাকসুর তফসিল ঘোষণার পরপরই প্যানেল ঘোষণার তোড়জোড় শুরু করেন বাগছাসের নেতা-কর্মীরা। আগে থেকেই ভিপি ও জিএস পদে পার্থী নির্ধারণ করা থাকলেও বিপত্তি বাধে সহসাধারণ সম্পাদক (পুরুষ) পদ নিয়ে। এই পদে প্রার্থী হওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেন সংগঠনটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক নাজমুল ইসলাম, জিয়াউদ্দিন আয়ান, কাউসার আলম আরমান ও জ্যেষ্ঠ সদস্যসচিব আহসান লাবিব। প্যানেল ঘোষণার আগে নানা তর্ক-বিবাদের পর আহসান লাবিবকে সমাজসেবা ও মানবসম্পদ উন্নয়নবিষয়ক সম্পাদক পদে নির্বাচনের প্রার্থী হতে রাজি করানো গেলেও বাকি তিনজন নাছোড়বান্দা ছিলেন। পরে সংগঠন থেকে এজিএস পদে জিয়াউদ্দিন আয়ানকে মনোনীত করা হয়। এর প্রতিক্রিয়ায় নাজমুল ইসলাম পদত্যাগ করে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে এজিএস পদে নির্বাচন করেন। কাউসার আলমও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে এজিএস পদে নির্বাচন করেছেন। তবে তিনি পদত্যাগ করেননি।

এজিএস পদে জিয়াউদ্দিন আয়ান ২ হাজার ১৪ ভোট পেয়ে দ্বিতীয় হয়েছেন। ছাত্রশিবিরের ফেরদৌস আল হাসান ২ হাজার ৩৫৮ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন। অন্যদিকে নাজমুল ও আরমান ৪৫৭ টি ভোট পেয়েছেন।

সংগঠনটির নেতারা বলছেন, এজিএস পদে বিদ্রোহী প্রার্থী না থাকলে এজিএস পদে বাগছাস মনোনীত প্রার্থী জিতে আসতে পারতেন। অন্যান্য কয়েকটি পদেও জুলাই আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া (আলাদা প্যানেল থেকে নির্বাচন করেছেন) একাধিক প্রার্থী থাকায় তাঁদেরও ভোট ভাগাভাগিতে তাঁরা জয়ী হতে পারেননি বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

আস্থার সংকট ছিল শিক্ষার্থীদের

গণ-অভ্যুত্থানের পর বর্তমানে যাঁরা বাগছাসের রাজনীতি করছেন, তাঁরা ক্যাম্পাসে দলীয় লেজুড়বৃত্তিক ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের ব্যাপক আন্দোলন গড়ে তুলেছিলেন। তবে সেই আন্দোলনের কিছুদিন পর নিজেরাই বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ নামক সংগঠনটিতে যুক্ত হয়ে যান। ফলে যেসব শিক্ষার্থী তাঁদের ডাকে সাড়া দিয়ে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের জন্য আন্দোলন করছিলেন, তাঁদের সঙ্গে একধরনের প্রতারণা করা হয়েছে বলে মনে করেন অনেক শিক্ষার্থী।

এ ছাড়া তাঁরা দলীয় লেজুড়বৃত্তিক রাজনীতি করেন না, এমন ঘোষণা দিলেও কয়েক মাস আগে গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতাদের ওপর হামলা হলে তাঁরা সঙ্গে সঙ্গে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে আন্দোলন করেন। এটা নিয়ে শিক্ষার্থীদের ফেসবুকে প্রতিক্রিয়া জানাতে দেখা যায়। সংগঠনের নেতা-কর্মীরা গণ-অভ্যুত্থানের পর পোষ্য কোটা বাতিলসহ বিভিন্ন দাবিতে আন্দোলন করেন। তবে এসব আন্দোলনের কাঙ্ক্ষিত ফল না নিয়ে তাঁরা প্রশাসনের সঙ্গে আপস করে আন্দোলন থেকে সরে আসেন, এমন আলোচনাও রয়েছে শিক্ষার্থীদের মাঝে।

সামনে কী ভাবছে গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রসংসদ নির্বাচনে পরাজয়ের পর সংগঠনটির মধ্যে সংস্কারের আলোচনা চলছে। সংগঠনটির নাম বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ পরিবর্তন করে অন্য নাম দেওয়ার কথাও চিন্তা করছেন কেন্দ্রীয় নেতারা। গণ-অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া এসব নেতা এক বছরের মাথায় কেন শিক্ষার্থীদের মধ্যে জনপ্রিয়তা হারিয়েছেন, সেসবও জানার চেষ্টা করছেন তাঁরা। এসব সমস্যা সংকট কাটিয়ে সামনের দিকে শিক্ষার্থীবান্ধব ও সহনশীল রাজনীতির দিকে তাঁরা নজর দেবেন বলে জানিয়েছেন নেতারা।

এ বিষয়ে গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক আরিফুজ্জামান উজ্জ্বল বলেন, মাত্র কয়েক মাস আগে গড়ে ওঠা সংগঠনে কিছু সাংগঠনিক দুর্বলতা ছিল এটা অস্বীকার করার উপায় নেই। সংগঠনের বিভক্তি বড় কোনো প্রভাব ফেলবে না বলেও ধারণা ছিল তাঁদের। কিন্তু নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থীরা কয়েকটি পদে প্রভাব ফেলেছে। এসব সমস্যা খুঁজে বের করার চেষ্টা করছেন তাঁরা। নির্বাচনে যে বিভাজন তৈরি হয়েছিল, সে বিভাজন কাটিয়ে জাকসুর নির্বাচিত প্রতিনিধিদের সঙ্গে সমন্বয় করে সবাইকে নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের স্বার্থে কাজ করে যেতে চান তাঁরা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ