ওয়ান ইলাভেনের দিকে যাবে দেশ: এবি পার্টি
Published: 5th, August 2025 GMT
রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সমঝোতা না হলে এবং বিভেদ ও অনৈক্যজনিত ভুল অব্যাহত রাখলে দেশ অনিবার্য ওয়ান ইলেভেনের দিকে যাবে বলে সতর্ক করেছেন এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু।
অনুপ্রেরণা, আত্মপর্যালোচনা ও প্রত্যয়দীপ্ত অঙ্গীকারে জুলাই অভ্যুত্থানের ১ম বর্ষপূর্তি উদযাপন উপলক্ষে মঙ্গলবার বিজয় নগরস্থ দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
মঞ্জু বলেন, ‘‘পদধ্বনি নয়, আমরা স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি ২০০৭ সালের ডিসেম্বর-জানুয়ারিতে দেশ যেদিকে হেঁটেছিল এখন আমরা সবাই মিলে সেদিকেই রওয়ানা হয়েছি।’’
এই পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণের জন্য, হয় সংখ্যানুপাতিক (পিআর) পদ্ধতিতে নির্বাচন, না হয় গণঅভ্যুত্থানের অংশীদার দলগুলোর মাঝে সমঝোতার ভিত্তিতে সংসদ নির্বাচনের সমাধান প্রস্তাব করেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন দলের সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ। এ সময় সিনিয়র নেতৃবৃন্দের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান প্রফেসর ডা.
মঞ্জু বলেন, ‘‘আজকের এই দিনে আমরা গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি জীবন বিলিয়ে দেওয়া মহান শহীদদের। কৃতজ্ঞতা ও বিনীত সালাম জানাই হাজার হাজার আহত, পঙ্গু ভাইবোনদের। এই ভূখণ্ডে নাগরিক অধিকার কখনোই পুরোপুরি প্রতিষ্ঠা পায়নি। ১৯৪৭-এর ভাষা আন্দোলন, ১৯৭১-এর স্বাধীনতা যুদ্ধ, ১৯৯০-এর গণঅভ্যুত্থান—কোনোটিই আমাদের নাগরিক অধিকারকে পূর্ণতা দিতে পারেনি। ৯০-এর নায়কেরা গণঅভ্যুত্থান ঘটাতে পারলেও জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে ব্যর্থ হয়েছেন। গত ১৬ বছরে গুম-খুন রাষ্ট্রকে গ্রাস করেছে; আর তার চেয়েও ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে ২০২৪-এ যেখানে হেলিকপ্টার থেকে গুলি, লাশ গুম, গণকবর—আমরা যেন এক বিভীষিকাময় সময় অতিক্রম করেছি।’’
মায়েরা, প্রবাসীরা, এমনকি অবসরপ্রাপ্ত সামরিক কর্মকর্তারাও প্রথা ভেঙে রাজপথে নেমে এসেছিলেন উল্লেখ করে তিনি ২৪-এর গণঅভ্যুত্থানে সাহসিকতার সঙ্গে দায়িত্ব পালনকারী গণমাধ্যমকর্মীদের প্রতিও কৃতজ্ঞতা জানান।
এবি পার্টির ভূমিকাকে স্পষ্ট করে তিনি বলেন, ‘‘আমরা গোপনে নয়, দলীয়ভাবে, সাহসিকতার সঙ্গে প্রকাশ্যে আন্দোলনে অংশ নিয়েছি। ছাত্রদের গ্রেপ্তারের পর আমাদের আইনজীবী টিম পাশে দাঁড়িয়েছে, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐক্য গড়ে তোলা, আলেম-ওলামাদের সম্পৃক্ত করা, আহতদের চিকিৎসা দেওয়া— সবখানেই আমাদের সক্রিয় অংশগ্রহণ ছিল।’’
তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, “কোটাবিরোধী আন্দোলন থেকে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন, আর সেখান থেকেই ফ্যাসিবাদবিরোধী গণআন্দোলনের সূত্রপাত।’’
যারা আন্দোলনের ক্রেডিট নিয়ে কাড়াকাড়ি করছেন, তাদের উদ্দেশ্যে মঞ্জু বলেন, ‘‘আপনাদের সর্বোচ্চ খেতাব দিতে সমস্যা নাই কিন্তু যদি সকল স্তরের মানুষ শেষ মুহূর্তে রাজপথে না নামতেন তাহলে কিন্তু শত শত শহীদের রক্ত বৃথা হয়ে যেতে। রাজনৈতিক দলগুলোর একমাত্র স্বপ্ন ছিল হাসিনার পতন। কিন্তু এখন বিভেদের রাজনীতিতে জাতি আবারও দ্বিধাবিভক্ত হওয়ার আশঙ্কায়। এখন অবদানের চেয়ে গোপন তথ্য ফাঁস করা হীন মানসিকতার পরিচয়।”
এবি পার্টির চেয়ারম্যান দাবি করেন, “আবু সাঈদের মৃত্যুর পর আমরাই সর্বপ্রথম তাকে ‘বীরশ্রেষ্ঠ’ ঘোষণা করেছি। ড. ইউনূসকেও আমরা প্রতিবাদ করার আহ্বান জানিয়েছি।”
এ সময় তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন, “এই দেশে এখনো হাসিনার প্রেতাত্মা বিদ্যমান, ভারতের প্রেতাত্মাও রয়ে গেছে। এখানে ফ্যাসিবাদ শুধু রূপ পরিবর্তন করেছে। সমঝোতার ভিত্তিতে আগামী পাঁচ বছর জাতীয় সরকার গঠন করা সম্ভব কি না তা এখনই ভাবতে হবে। অন্যথায় অন্তর্দলীয় বিভেদ ও পরিণতির ভার সকলকে বহন করতে হবে। অংশীদারিত্ব নিয়ে বিতর্ক এখনই সমাধান না করলে জাতি আবারও বিভক্ত হবে। বিশেষ করে জুলাই নিয়ে আমরা কোনরূপ বিভেদ চাই না। জুলাই ঘোষণাপত্র যেন অলঙ্কার না হয়ে বাস্তবায়নযোগ্য হয়, যেন তা একটি ঐতিহাসিক দলিল হয়ে ওঠে।”
দলের সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেন, ‘‘জুলাইকে যদি আমরা ধারণ করি, জুলাইয়ের শহীদদের বেওয়ারিশ হিসেবে দেখতে চাই না। দ্রুত লাশ শনাক্ত করে যথাযোগ্য সম্মানের সঙ্গে দাফনের ব্যবস্থা নিতে হবে। জুলাই ঘোষণাপত্রটি যদি সব রাজনৈতিক দলের পরামর্শ নিয়ে করা হতো, তাহলে তা আরো গ্রহণযোগ্য ও সার্বজনীন হতো।’’
সংবাদ সম্মেলনে এবি পার্টির সাংগঠনিক সম্পাদক( রাজশাহী) সাঈদ নোমান , শ্রম বিষয়ক সম্পাদক শাহ আব্দুর রহমান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহবায়ক আব্দুল হালিম খোকন, সদস্য সচিব বারকাজ নাসির আহমদ,উত্তরের সদস্য সচিব সেলিম খান, স্বেচ্ছাসেবক ও জনকল্যাণ বিষয়ক সহ সম্পাদক কেফায়েত হোসাইন তানভীর, সহকারী সাংগঠনিক (ঢাকা)সম্পাদক শাজাহান ব্যাপারী,শ্রম বিষয়ক সহ সম্পাদক আজিজা সুলতানা, সহকারী দফতর সম্পাদক আব্দুল হালিম নান্নু,নারী উন্নয়ন বিষয়ক সহ সম্পাদক শাহিনুর আক্তার শিলা,কর্মসংস্থান বিসয়ক সহ সম্পাদক সুমাইয়া ফারহানা,পল্টন থানা আহবায়ক আবদুল কাদের মুন্সী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন//
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর গণঅভ য ত থ ন দলগ ল র ব ষয়ক
এছাড়াও পড়ুন:
৫ আগস্ট বিজয় মিছিল সফল করতে ইসলামী আন্দোলনের যৌথ সভা
স্মরণে জুলাই গণঅভ্যুত্থান উপলক্ষে আগামী ৫ আগস্ট ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ নারায়ণগঞ্জ মহানগরের উদ্যোগে জুলাই যোদ্ধাদের শহীদদের জন্য খতমে কুরআন, দোয়া, গণজমায়েত এবং বিজয় মিছিল অনুষ্ঠিত হবে।
উক্ত অনুষ্ঠান সফল করতে আজ বাদ আসর নগর কার্যালয়ে যৌথ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন, নগর সভাপতি মুফতি মাসুম বিল্লাহ। সেক্রেটারি সুলতান মাহমুদের সঞ্চালনায় আরো উপস্থিত ছিলেন, নগর সাংগঠনিক সম্পাদক মাও. শামসুল আলম, যুব আন্দোলন নগর সাধারণ সম্পাদক মুহা. আনোয়ার হোসেন, ছাত্র আন্দোলন সভাপতি এইচ এম শাহীন আদনান, শিক্ষক ফোরাম নগর সভাপতি আলতাফ হোসেন গাজী প্রমুখ।
মুফতি মাসুম বিল্লাহ বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থান যাদের ত্যাগ ও কোরবানীর বিনিময়ে সংঘটিত হয়েছে, যাদের রক্তের বিনিময়ে আমরা স্বৈরাচারমুক্ত দেশ পেয়েছি তাদের স্মরণ এবং দোয়া করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। কাজেই জুলাই যোদ্ধাদের স্মরণীয় রাখতে আমাদের এ আয়োজন।
উক্ত অনুষ্ঠানে সকলকে উপস্থিত থাকার জন্য উদাত্ত আহবান জানান।