সিলেটের গোয়াইনঘাটের জাফলং চা–বাগানের একটি পরিত্যক্ত কক্ষ থেকে এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, চোর সন্দেহে পিটিয়ে হত্যার পর তাঁর মরদেহটি সেখানে ফেলে রাখা হয়।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে বাংলোর পাশের কক্ষ থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে চা–শ্রমিকসহ তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ।

নিহত যুবকের নাম ইমাম উদ্দিন (৩৮)। তিনি উপজেলার মেদি গ্রামের হরমুজ আলীর ছেলে। অন্যদিকে আটক ব্যক্তিরা হলেন চা–বাগানটির শ্রমিক আক্কেল প্রধান, নিরঞ্জন গোয়ালা ও কর্মকর্তা কপিল উদ্দিন।

মরদেহ পড়ে থাকার খবরে আজ সকাল থেকে জাফলং চা–বাগানে অবস্থান নেন স্থানীয় বাসিন্দারা। সেখানে তাঁরা বিক্ষোভ করেন। বিষয়টি নিয়ে চা–শ্রমিক ও এলাকাবাসীর মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে দুই পক্ষকে নিয়ন্ত্রণ করে। পরে দুপুরে লাশটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানো হয়।

স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দার সূত্রে জানা গেছে, গতকাল রাতে জাফলং চা–বাগানে ইমাম উদ্দিনকে চোর সন্দেহে আটক করা হয়। এর আগে চা–বাগানে একাধিক চুরির ঘটনা ঘটেছিল। পরে চুরির অভিযোগে তাঁকে মারধরও করা হয়।

সিলেটের গোয়াইনঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সরকার মোহাম্মদ তোফায়েল বলেন, চা–বাগানের পরিত্যক্ত একটি কক্ষে লাশ থাকার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। একটি পক্ষ ইমামকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ তুলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারের দাবি করে। পরে পুলিশ উভয় পক্ষকে থামিয়ে লাশটি উদ্ধার করে। এ ঘটনায় নিহত যুবকের পরিবারের পক্ষ থেকে মামলার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: মরদ হ

এছাড়াও পড়ুন:

রয়েল টিউলিপে এনসিপি নেতাদের অবস্থান, ষড়যন্ত্রের অভিযোগে বিএনপির

কক্সবাজারে ইনানীর সি পার্ল বিচ রিসোর্টে (পুরোনো নাম রয়েল টিউলিপ) জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতাদের অবস্থান এবং যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের সঙ্গে বৈঠকের গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ার পর প্রতিবাদে সভা করেছে বিএনপির নেতাকর্মীরা। তাদের অভিযোগ, রয়েল টিউলিপে বসে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। 

মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) দুপুর ২টার দিকে রয়েল টিউলিপের সামনে প্রতিবাদ সভা করেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। এর আগে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে কক্সবাজারে পৌঁছান এনসিপির পাঁচ নেতা হাসনাত আবদুল্লাহ, সার্জিস আলম, ডা. তাসমিন জারা, নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী ও খালেদ সাইফুল্লাহ। 

প্রতিবাদ সভার নেতৃত্ব দেন উখিয়া উপজেলা বিএনপির সাবেক দপ্তর সম্পাদক সেলিম সিরাজী। তিনি বলেন, “বাংলাদেশের বিরুদ্ধে এখনো ষড়যন্ত্র থেমে নেই। যারা ভোটে ক্ষমতায় আসতে পারবে না, তারা এখানে বসে দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। খুনি শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার এক বছর পূর্ণ হয়েছে আজ। সেই আনন্দের মুহূর্তে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের কারণে আমাদের এখানে প্রতিবাদে আসতে হয়েছে।”

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কক্সবাজার জেলা পুলিশের এক কর্মকর্তা রাইজিংবিডিকে বলেন, “এনসিপির নেতারা মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) সকাল ১১টা ২৫ মিনিটে বাংলাদেশ বিমান এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে কক্সবাজার আসেন। পরে ইনানীর সি পার্ল বিচ রিসোর্টের (রয়েল টিউলিপ) ৫০০১, ৫০০২ ও ৫০০৩ নম্বর কক্ষে অবস্থান নেন।”

তিনি আরও বলেন, “এই রিসোর্টে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক রাষ্ট্রদূত পিটার হাস নেই। এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক সারজিস আলমের স্ত্রীসহ তারা ঘুরতে এসেছেন।’’

ওই রিসোর্টের কক্ষ আগে থেকে বুকিং করা ছিল না বলেও জানান তিনি। 

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এনসিপির পাঁচ নেতার হঠাৎ কক্সবাজার আগমনের বিষয়টি প্রশাসন কিংবা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকেও অবগত করা হয়নি।

রাজনৈতিক মহলে গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়েছে যে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক বাংলাদেশস্থ রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের সঙ্গে বৈঠক করতে কক্সবাজারে গিয়েছেন এই পাঁচ নেতা।

এনসিপি নেতাদের বহন করে বিমানবন্দর থেকে রয়েল টিউলিপে নিয়ে যাওয়া গাড়ির চালক নুরুল আমিন জানান, তার গাড়িতে করে হাসনাত আবদুল্লাহ, সারজিস আলম ও নাসীরুদ্দীন পাটোয়ারীসহ দুইজন নারী- একজন সারজিস আলমের স্ত্রী এবং অপরজন সমন্বয়ক (তাসনিম জারা) রয়েল টিউলিপে যান।

কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মো. সাইফ উদ্দিন শাহীন বলেন, “এনসিপির পাঁচ নেতা রয়েল টিউলিপে অবস্থান করছেন। তবে, এখানে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক রাষ্ট্রদূত পিটার হাস নেই। পুরো হোটেলে মাত্র তিনজন বিদেশি আছেন, তারা সবাই চীনের নাগরিক।”এদিকে এনসিপি নেতা খালেদ সাইফুল্লাহ একটি সংবাদমাধ্যমে বলেছেন, “আমরা এখানে পিটার হাস কিংবা অন্য কারো সাথে কোন মিটিং করিনি। এমনকি পিটার হাসের সঙ্গে আমাদের দেখাও হয়নি। আমরা কয়েকজন এখানে ঘুরতে এসেছি।” 
 

তারেকুর//

সম্পর্কিত নিবন্ধ