আড়াইহাজারে আন্না আক্তার (২৪) নামে এক সন্তানের জননীকে প্রথমে পিটিয়ে পরে শ্বাসরোধ করে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। মঙ্গলবার সকালে উপজেলার হাইজাদী ইউনিয়নের বল্লভদী গ্রাম তার বসত ঘর থেকে লাশ উদ্ধার করেছে থানা পুলিশ।  শ্বাশুড়ী ও চাচা শ্বশুরের পরকীয়ায় বাধা দেয়ায় এ হত্যাকান্ড ঘটে বলে নিহতের স্বজনা দাবি করছেন। 

নিহত আন্না আক্তার ওই গ্রামের সৌদী প্রবাসী মো: আরিফের স্ত্রী। নিহত আন্না আক্তারের ১১ মাস বয়সের একটি পুত্র সন্তান রয়েছে।

নিহতের মা কুলসুম জানান, সোমবার সন্ধ্যায় শ^াশুড়ী হাসনারা, ননদ সনি আক্তার এবং চাচা শ^শুর ফিরোজ মিয়ার সঙ্গে আন্নার  ঝগড়া হয়।

ঝগড়াকে কেন্দ্র করে রাতের কোনও এক সময়ে আমার মেয়ে আন্নাকে পিটিয়ে ও পরে গলাটিপে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে লাশ ঘরের আড়ার সাথে ঝুলিয়ে আত্মহত্যা করছে বলে প্রচার করতে থাকে। এক পর্যায়ে তারা লাশ নামিয়ে  মেঝেতে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়।

নিহতের মা আরও জানান, আন্নার শ^শুর সুরুজ মিয়া ও কাতার প্রবাসে থাকেন। এই সুযোগে তার শ^াশুড়ী হাসনারা এবং চাচা শ^শুর ফিরোজ মিয়ার মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে পরকীয়ায়া সম্পর্ক চলে আসছিল। তাদের পরকিয়ায় বাধ সাধে পুত্রবধূ আন্না আক্তার। এর জের ধরে পরিবারের সবাই মিলে আন্নাকে হত্যা করেছে। 

মঙ্গলবার সকালে পুলিশ সংবাদ পেয়ে লাশ উদ্ধার করে সুরতহাল রিপোর্ট তৈরী করে মর্গে প্রেরণ করে। নিহত আন্না  উপজেলার ব্রাক্ষন্দী ইউনিয়নের মারুয়াদী গ্রামের রোমানের কন্যা। ৫ বছর আগে তাকে বিয়ে করে সংসারে রেখে স্বামী আরিফ সৌদী প্রবাসে যায়।

এর আগে বছর দুয়েক আগে ছুটিতে বাড়ী এসেছিলেন স্বামী আরিফ। নিহতের বাবা রোমান বলেন, আমার মেয়ে হত্যার বিচার চাই।  

আড়াইহাজার থানার ওসি (তদন্ত) সাইফউদ্দিন জানান, লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। থানায় হত্যা মামলা দায়ের করা হবে। রিপোর্ট আসলে বিস্তারিত বলা যাবে। 
 

.

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: হত য পরক য় ন র য়ণগঞ জ পরক য় য় ন হত র

এছাড়াও পড়ুন:

জুলাই গণঅভ্যুত্থাণের আলোচনা সভা শেষে ছাত্রদলের তোপের মুখে শাবিপ্রবি উপাচার্য

জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবসের আলোচনা শেষে তাদের তোপের মুখে পড়েছেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. এএফএম শরিফুল ইসলাম।

মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) দুপুর দেড়টায় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষাভবন এর সামনে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় উপাচার্য তাদের সঙ্গে বসার আশ্বাস দিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করেন।

এদিকে, শাবিপ্রবি প্রশাসনের বিভিন্ন অফিসিয়াল অনুষ্ঠানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের একচেটিয়া সুবিধা দেওয়ার অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ করে শাখা জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল। পরে উপাচার্যের মুখোমুখি হওযার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্জুনতলায় থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে গোলচত্বরে একত্রিত হন সংগঠনটির নেতাকর্মীরা।

আরো পড়ুন:

‘অ্যান্টিবায়োটিক গুরুতর হুমকি হয়ে উঠছে’

এসএসসিতে জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা দিল শাবিপ্রবি প্রশাসন

এ সময় তারা ‘লাখো শহিদের রক্তে কেনা, দেশটা কারো বাপের না’, ‘জিয়ার সৈনিক এক হও, লড়াই করো’, ‘ভুয়া ভুয়া প্রশাসন ভুয়া’, ‘লড়াই লড়াই চাই, লড়াই করে বাঁচতে চাই’, ‘জুলাইয়ের গাদ্দাররা হুশিয়ার সাবধান’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।

এর আগে, শাবিপ্রবি প্রশাসন আয়োজিত ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস’ উপলক্ষে আলোচনা সভা বয়কটের ঘোষণা দেয় ছাত্রদল।

বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাঈম সরকার বলেন, “জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবসের আজকের আলোচনা সভায় গিয়ে দেখি, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেতাকর্মীরাই অনুষ্ঠান ব্যবস্থাপনা করছে। তাদের একজনকে অনুষ্ঠানের সমন্বয়ে দায়িত্ব দিয়ে অনুষ্ঠান পরিচালনা করছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। অনুষ্ঠানের সূচনা, খাবার ব্যবস্থাপনাসহ সব কিছুতেই বৈষম্যবিরোধী নেতাকর্মীদের দায়িত্ব দিয়ে রেখেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।”

তিনি আরো বলেন, “৫ অগাস্ট পূর্ববর্তী সময় পর্যন্ত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ছিল সব দল-মতের ছাত্রদের ব্যানারে। কিন্তু পরে তারা যখন সরাসরি রাজনৈতিক কার্যক্রম শুরু করে, তখন সেই ব্যানার প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়ে। তারপরও প্রশাসন তাদের একচেটিয়া সুবিধা দিয়ে যাচ্ছে। গত ১ বছরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফান্ড ব্যবহার করে তারা ছাত্রকল্যাণ উপদেষ্টার মাধ্যমে দলীয় কার্যক্রম চালিয়েছে।”

শাখা ছাত্রদলের সভাপতি রাহাত জামান বলেন, “আজকের প্রোগ্রামটা ছিল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের একটা প্রোগ্রাম। অথচ আজকের এ প্রোগ্রামে আমাদেরকে দাওয়াত দেওয়া হয়েছে একজন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতার মাধ্যমে। প্রশাসন তাদেরই বারবার নানা ফান্ড ও সুযোগ-সুবিধা দিয়ে যাচ্ছে। জুলাই অভ্যুত্থানে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের ১৫২ জনের মতো কর্মী শহীদ হয়েছিল। অথচ আমরা দেখছি, প্রশাসন একটি গোষ্ঠীকে বিশেষভাবে প্রাধান্য দিয়ে ছাত্রদলের সাথে বৈষম্য করছে।”

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা ও নির্দেশনা পরিচালক ড. মো. এছাক মিয়া বলেন, “আজকের প্রোগামের আয়োজক ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার। সমন্বয়ক পবন শুধু শহীদ পরিবারকে স্টেজে কথা বলার আমন্ত্রণ জানাই। কারণ সে তাদের সঙ্গে যোগাযোগের কাজ করেছিল। আর খাবারের দায়িত্ব ছাত্রদের দেই। আমি যেহেতু ছাত্রদের সঙ্গে সম্পর্কিত, এজন্য কিছু ছাত্রদের নিয়ে কাজ করে নিয়েছি।”

তিনি বলেন, “কিন্তু ফান্ডিংসহ সব খরচও আমার অফিস থেকে হচ্ছে এবং আমি তাদের দিয়ে খরচ করিয়ে নিয়েছি, এগুলো মিথ্যা। এছাড়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নামে কোনো প্লাটফর্ম এখন নেই, যারা আন্দোলনে সরাসরি সম্পৃক্ত ছিল ও আগ্রহ দেখিয়েছে তাদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। অন্যরা কিন্তু এভাবে আগ্রহ দেখায়নি।”

ঢাকা/ইকবাল/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ