বিশ্ববাজারে কিছুটা কমেছে সোনার দাম, মুনাফা তুলে নেওয়ার প্রভাব
Published: 5th, August 2025 GMT
গতকাল সোমবার বিশ্ববাজারে সোনার দাম কিছুটা কমেছে। গত সপ্তাহের লেনদেনে সোনার দাম উল্লেখযোগ্য হারে বেড়ে গিয়েছিল। এতে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে মুনাফা তুলে নেওয়ার প্রবণতা বেড়ে যায়। এই পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল স্পট মার্কেটে সোনার দাম কিছুটা কমেছে।
অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রে ট্রেজারি বন্ডের সুদহার বৃদ্ধিও মূল্যবান এই ধাতুর দাম কমার পেছনে ভূমিকা রেখেছে বলে রয়টার্সের সংবাদে বলা হয়েছে। স্পট মার্কেটে গতকাল সোনার দাম কমেছে দশমিক ১ শতাংশ। প্রতি আউন্সের মূল্য দাঁড়ায় ৩ হাজার ৩৫৯ ডলার ৯৯ সেন্টে। তবে এ সময় যুক্তরাষ্ট্রের ফিউচার মার্কেটে মূল্যবান ধাতুটির দাম দশমিক ৪ শতাংশ বেড়ে আউন্সপ্রতি মূল্য পৌঁছেছে ৩ হাজার ৪১৩ ডলার ৪০ সেন্ট।
স্যাক্সো ব্যাংকের হেড অব কমোডিটি স্ট্র্যাটেজিস্ট ওলে হ্যানসেন বলেন, ‘বাজারে গত শুক্রবার সোনার দাম উল্লেখযোগ্য হারে বেড়ে যাওয়ার পর এই দরপতন স্বাভাবিক। এদিকে সুদহার কিছুটা বেড়েছে এবং শেয়ারবাজার ঘুরে দাঁড়িয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, বর্তমানে বাজারে সোনার দাম সীমিত পরিসরে ওঠানামা করছে। তবে মূল্যবান ধাতুটির দাম যদি আউন্সপ্রতি ৩ হাজার ৪৩০ ডলার ছাড়িয়ে যায়, তাহলে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে ক্রয়ের প্রবণতা বাড়বে। এতে সোনার দাম নতুন করে বাড়তে পারে।
অন্যান্য মূল্যবান ধাতুর মধ্যে স্পট মার্কেটে গতকাল রুপার দাম বেড়েছে দশমিক ৯ শতাংশ। প্রতি আউন্সের মূল্য পৌঁছেছে ৩৭ ডলার ৩৪ সেন্টে। প্লাটিনামের দাম দশমিক ৪ শতাংশ বেড়ে আউন্সপ্রতি মূল্য দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৩২০ ডলার ১৯ সেন্টে। গতকাল প্যালাডিয়ামের দাম দশমিক ২ শতাংশ কমেছে। আউন্সপ্রতি দাম হয়েছে ১ হাজার ২০৫ ডলার ৯৩ সেন্ট।
এদিকে সোনার দাম নিয়ে দেওয়া পূর্বাভাস সংশোধন করেছে সিটি গ্রুপ। গতকাল প্রকাশিত প্রতিবেদনে ব্যাংকটি জানায়, আগামী তিন মাসে সোনার দাম আউন্সপ্রতি ৩ হাজার ৫০০ ডলারে উঠতে পারে। এর আগে দেওয়া প্রাক্কলনে যা ছিল আউন্সপ্রতি ৩ হাজার ৩০০ ডলার।
খাতসংশ্লিষ্টরা বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের আর্থিক প্রবৃদ্ধি ও মূল্যস্ফীতিসংক্রান্ত দুর্বল পূর্বাভাসের কারণে সোনার দাম নিয়ে দেওয়া প্রাক্কলন সংশোধন করা হয়েছে। সিটি গ্রুপ বলছে, ২০২৫ সালের দ্বিতীয়ার্ধজুড়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রবৃদ্ধি ও শুল্ক–সম্পর্কিত মূল্যস্ফীতি ওপরের দিকে থাকবে। এ ছাড়া ডলারের বিনিময় হার কমে যাওয়ায় সোনার দাম নতুন রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছাতে পারে।
চলতি বছর বিশ্ববাজারে সোনার দাম ২৬ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। ওয়ার্ল্ড গোল্ড কাউন্সিল বলছে, চলতি বছর সোনার দাম বাড়তি থাকবে। সম্প্রতি প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে ডব্লিউজিসি জানিয়েছে, চলতি বছরের প্রথমার্ধে সোনার মূল্যবৃদ্ধির পেছনে যেসব কারণ আছে, সেগুলো হলো ডলারের বিনিময় হার কমে যাওয়া, ভূরাজনৈতিক উত্তেজনা, বিনিয়োগকারীদের চাহিদা ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর সোনা কেনা বেড়ে যাওয়া। অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক অস্থিরতা, বিশেষ করে স্থবিরতা বা মন্দার ঝুঁকি বাড়লে ভবিষ্যতে এই ধাতুর চাহিদা আরও বাড়তে পারে।
বিশ্বে সোনাকেই সবচেয়ে স্থিতিশীল ও নির্ভরযোগ্য পণ্য হিসেবে ধরা হয়। বলা হয়, একমাত্র সোনার দামেই সাধারণত বড় ধরনের অস্থিতিশীলতা দেখা যায় না। সোনা কিনে রাখলে লোকসানের ভয় নেই বলা যায়। এ কারণেই সোনার প্রতি সবার এত আকর্ষণ। ৫০ বছর আগে কেউ সোনা কিনে রাখলেও, তা ভালো বিনিয়োগ হিসেবেই বিবেচিত। শেয়ারবাজার, ডলার বা অন্য কিছু এই নিশ্চয়তা দেয় না।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: য ক তর ষ ট র দশম ক গতক ল আউন স
এছাড়াও পড়ুন:
কারা বেশি কাঁদেন?
কান্না একটি এমন একটি স্বাভাবিক ও স্বাস্থ্যকর মানসিক প্রক্রিয়া যা শরীরকে মানসিক চাপ থেকে মুক্তি পেতে সাহায্য করে। গবেষণায় দেখা গেছে যে, ‘‘যারা বেশি কাঁদেন তাদের মধ্যে কিছু সাধারণ বৈশিষ্ট্য দেখা যায়। এর কারণ কখনও মানসিক কখনও শারীরিক আবার কখনও পারিপার্শ্বিক বিষয়।’’ বেশি কান্না করা মানুষের আচরণে বৈশিষ্ট্য দেখা যায়।
উচ্চ মানসিক সংবেদনশীলতা 
 এই ব্যক্তিরা সাধারণত অন্যের আবেগ ও অনুভূতি খুব সহজেই বুঝতে পারেন এবং গভীরভাবে অনুভব করেন। সামান্য ঘটনায় তারা বেশি প্রভাবিত হন।  
আরো পড়ুন:
যেসব কারণে মানুষ স্বর্ণ জমায়
বিশ্বে কারা বেশি পড়েন, কোন বই বেশি পড়েন?
সহানুভূতির প্রবণতা 
 যাদের মধ্যে সহানুভূতির মাত্রা বেশি, তারা প্রায়শই বেশি কাঁদেন। তারা নিজেদের পাশাপাশি অন্যের কষ্টেও সহজে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন।  
মানসিক চাপ বা বিষণ্নতা 
 দীর্ঘস্থায়ী মানসিক চাপ, উদ্বেগ বা বিষণ্নতার কারণে মানুষ বেশি কাঁদতে পারে। কান্না এক্ষেত্রে জমে থাকা মানসিক চাপ কমানোর একটি উপায় হিসেবে কাজ করে।  
হরমোনের প্রভাব 
 হরমোনের তারতম্য, বিশেষ করে নারী ও পুরুষ উভয়ের ক্ষেত্রে, কান্নার প্রবণতাকে প্রভাবিত করতে পারে। ইস্ট্রোজেন এবং প্রোজেস্টেরনের মতো হরমোনের মাত্রা কান্নার সাথে সম্পর্কিত। 
অতীত অভিজ্ঞতা 
 অতীতের কোনো দুঃখজনক বা আঘাতমূলক ঘটনা মানুষের মধ্যে সহজে কেঁদে ফেলার প্রবণতা তৈরি করতে পারে। 
যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে কান্না
 কিছু মানুষের জন্য কান্না হল নিজেদের অনুভূতি প্রকাশ করার একটি উপায়, কারণ তারা হয়তো কথা বলে তা প্রকাশ করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন না।  
উল্লেখ্য, যদি অতিরিক্ত কান্না দৈনন্দিন জীবনকে প্রভাবিত করে বা বিষণ্নতার লক্ষণ হিসেবে দেখা দেয়, তাহলে একজন মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
ঢাকা/লিপি