পরিবারের অমতে ভালোবেসে সংসার পেতেছিলেন মাহমুদুল হাসান। তিনি থাকতেন বাড়ি থেকে দূরে গাজীপুরের টঙ্গীর মীরের বাজার এলাকায়। চার মাস আগে ঘর আলো করে জন্ম নেয় ছেলেসন্তান। সেই সন্তানের জন্য দুধ গরম করতে গ্যাসের চুলা ধরাতে গিয়ে বিস্ফোরণে শেষ হয়ে যায় মাহমুদুলের ভালোবাসার সংসার।
৩ আগস্ট ভোরে মীরের বাজার এলাকার একটি বাসায় বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। বাসার অন্য ভাড়াটেরা শিশুসহ তিনজনকে উদ্ধার করে রাজধানীর জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে নিয়ে যান। সেখানকার চিকিৎসক শিশু রায়হানকে মৃত ঘোষণা করেন।
এরপর চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত বুধবার রাতে মাহমুদুল হাসানের স্ত্রী হাফিজা খাতুন (২০) ও গত বৃহস্পতিবার ভোরে মাহমুদুল মারা যান। শিশু রায়হানকে ৩ আগস্ট ও স্বামী–স্ত্রীকে গতকাল শুক্রবার পারিবারিক কবরস্থানে পাশাপাশি কবরে দাফন করা হয়েছে।
নিহত মাহমুদুল হাসান (রিপন) ময়মনসিংহের তারাকান্দা উপজেলার রামপুর ইউনিয়নের চারিয়া ঘোষপাড়া গ্রামের লিটন মিয়ার ছেলে। তিনি পাশের কান্দাবাড়ি গ্রামের হাফিজা খাতুনকে (২০) ভালোবেসে দেড় বছর আগে বিয়ে করেন। পরিবার মেনে না নেওয়ায় গাজীপুরের মীরের বাজার এলাকায় বসবাস শুরু করেন। মাহমুদুল একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতেন। হাফিজা ছিলেন গৃহিণী। পরে পরিবার বিয়ে মেনে নেয়। চার মাস আগে শিশু রায়হানের জন্ম হয়। একটি দুর্ঘটনায় পুরো পরিবার শেষ হয়ে যাওয়ায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
স্ত্রীর সঙ্গে মাহমুদুল হাসান.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: পর ব র
এছাড়াও পড়ুন:
বাবুডাইং আলোর পাঠশালা পরিদর্শন করলেন দুই বিদেশি পর্যটক
‘এটি খুবই আনন্দায়ক খবর যে এই স্কুলে আদিবাসী ও বাঙালি শিক্ষার্থীরা একসঙ্গেই বসে শান্তিপূর্ণভাবে পাঠ গ্রহণ করে। যেখানে ইসলাম-হিন্দু-খ্রিষ্টধর্মের শিক্ষার্থীরাও একই আসনে বসে পাঠ নিচ্ছে। সম্প্রীতি-ভালোবাসার এ দৃশ্য আমাদের বিমোহিত করেছে।’
আজ সোমবার দুপুরে রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলায় প্রথম আলো ট্রাস্ট পরিচালিত বাবুডাইং আলোর পাঠশালা পরিদর্শনে এসে জার্মান নাগরিক অবসরপ্রাপ্ত চিকিৎসক মাথিয়াস রিচার্ড এ মন্তব্য করেন। এ সময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন সুইজারল্যান্ডের নাগরিক অবসরপ্রাপ্ত রসায়নবিদ সিলভিয়া মাউরিজিও। ‘দেশ ঘুরি’ নামের একটি ট্যুরিস্ট সংস্থার মাধ্যমে তাঁরা এ বিদ্যালয় পরিদর্শনে আসেন।
বেলা সাড়ে ১১টায় তাঁরা বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে উপস্থিত হলে ফুলের তোড়া ও মালা দিয়ে শুভেচ্ছা জানায় শিক্ষার্থীরা। এ সময় তাঁদের বিভিন্ন শ্রেণিকক্ষ ঘুরিয়ে দেখান প্রধান শিক্ষক আলী উজ্জামান নূর। তাঁরা শ্রেণিকক্ষগুলোতে গিয়ে পাঠ উপস্থাপন দেখেন। কথা বলেন শিক্ষার্থীদের সঙ্গে। শিক্ষার্থীরাও স্বতঃস্ফূর্তভাবে তাঁদের সঙ্গে ভাববিনিময় করে।
এ সময় দুই পর্যটক জানতে পারেন, এ বিদ্যালয়ে ক্ষুদ্র জাতিসত্তা ও বাঙালি শিশুরা একসঙ্গে পড়াশোনা করে। ইসলাম-হিন্দু-খ্রিষ্টধর্মের শিক্ষার্থীরা নিজেদের মধ্যে কোনো ভেদাভেদ না করে একবেঞ্চে বসে পাঠ গ্রহণ করে। বিষয়টি জানতে পেরে তাঁরা খুবই খুশি হন।
চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী মাসুমা খাতুন দুজনকে একটি গান গেয়ে শোনায়। বিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক দলের শিক্ষার্থীরা তাঁদের সামনে ঐতিহ্যবাহী নাচ-গান প্রদর্শন করে। সিলভিয়াও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নাচে অংশ নেন। সৃষ্টি হয় একটি আনন্দদায়ক পরিবেশের। এ সময় বাঙালি ও কোল ক্ষুদ্র জাতিসত্তার শিক্ষার্থীদের মধ্যে সম্প্রীতি-ভালোবাসা ও বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ দেখে খুশি হন।
বিদেশি দুই পর্যটকের সামনে আলোর স্কুলের শিক্ষার্থীদের সাংস্কৃতিক পরিবেশনা